ঢাবির রেজিস্টার বিল্ডিংয়ে শাহবাগ থানা বিএনপির সদস্য সংগ্রহ

ঢাবির প্রশাসনিক ভবনে শাহবাগ থানা বিএনপির সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রম
ঢাবির প্রশাসনিক ভবনে শাহবাগ থানা বিএনপির সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রম  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে শাহবাগ থানা বিএনপির সদস্য সংগ্রহের কার্যক্রম চালানোর ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে, বিশেষ করে প্রশাসনিক ভবনের (রেজিস্টার বিল্ডিং) ভেতরে অফিস সময়ে রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম চালানোর এ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

গত ২১ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একাধিক ছবিতে দেখা যায়, “নতুন সদস্য সংগ্রহ এবং নবায়ন কার্যক্রম ২০২৫” শিরোনামে শাহবাগ থানা বিএনপির ব্যানারে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচি পরিচালিত হয়। দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলে বলে জানা গেছে। ব্যানারে স্পষ্টভাবে ‘২১ নম্বর ওয়ার্ড, শাহবাগ থানা বিএনপি’র পরিচিতি দেখা যায়। সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় অবস্থিত অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন ঢাবির তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন তার ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, প্রতিদিন ১২টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ফরম বিতরণ করা হবে। জাতীয়তাবাদী আদর্শের ভাই ও বোনদের ফরম নবায়ন ও নতুন সদস্য ফরম পূরণের জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।

অভিযোগ রয়েছে, এই কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তাদের মধ্যে রয়েছেন সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মনিরুল ইসলাম, বিল শাখা-১–এর কর্মচারী মো. মন্তাজ আলী, সহকারী লাইব্রেরিয়ান উত্তম কুমার সরকার, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. সফিউল্ল্যাহ, সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম, সায়েন্স লাইব্রেরির কর্মচারী মনিরুজ্জামান মনির এবং ভিসি অফিসে কর্মরত সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মনিরুজ্জামান।

এ বিষয়ে রুহুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, আসলে বাংলামোটর থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে ফরম দেয়া হচ্ছে, কিন্তু আমাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা জাতীয়তাবাদী বিএনপির সমর্থক আছেন, তাদের জন্য এই জায়গায় ফরম ছাড়া হচ্ছিল। যারা ফরম নিচ্ছেন তারা সত্যিকার অর্থেই বিএনপির সমর্থক কিনা সেটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আসলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লাঞ্চ টাইমে এই ফরম বিতরণ করা হয়। আর ব্যানার শাহবাগ থানার হওয়ার কারণ হচ্ছে—এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসটা শাহবাগ থানার অন্তর্ভুক্ত। এজন্য পেছনে ২১ নম্বর ওয়ার্ড, শাহবাগ থানা বিএনপির ব্যানারটি রাখা হয়েছে।“

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ গনতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বলেন, আওয়ামী আমলে এমন কার্যক্রম চলছে কি না, আমার জানা নাই। ৫ আগস্ট পরবর্তীতে বিএনপির দুই নেতা অ্যালামনাই অ্যাসোসিশনের সভাপতি, সেক্রেটারির পদ দখল করে নিল। কেউ অভ্যুত্থানের কমিটমেন্ট রক্ষা করতে চায় না। সবাই আগের বারের চেয়ে বড় ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক্ষেত্রে হয় সহযোগী কিংবা হাতের পুতুল হয়ে কাজ করছে। আল্টিমেটলি ভুক্তভোগী হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। যথাযথ সেবা দেওয়ার নাম নাই; এরা রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ে বসে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করছে! বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্যই এসবের একটা বিহিত করবেন।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রোভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা গণমাধ্যমকে বলেন, আমি এ ব্যাপারে রেজিস্ট্রারের সাথে কথা বলবো যে, এরকম কোনো বিশেষ অনুমতি দেয়া হয়েছে কিনা এবং তারা এখানে এ ধরনের কার্যক্রম চালাতে পারে কিনা। ভবিষ্যতেও এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখা হবে।

 


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!