কুরআনে উল্লিখিত জীববৈজ্ঞানিক বিস্ময় নিয়ে রাবি অধ্যাপকের বই প্রকাশ
কুরআন ও বায়োলজি (দ্য বায়োলজিক্যাল মিরাকলস ইন দ্য কুরআন)
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ০৬:৫৮ PM , আপডেট: ২২ জুন ২০২৫, ০৩:০৮ PM
পবিত্র কুরআনে উল্লিখিত জীববিজ্ঞানের নানা বিস্ময় নিয়ে ‘কুরআন ও বায়োলজি (দ্য বায়োলজিক্যাল মিরাকলস ইন দ্য কুরআন)’ শিরোনামে একটি গবেষণাধর্মী বই লিখেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আহমেদ ইমতিয়াজ।
মূলত কুরআন ও বিজ্ঞানের আলোচনাকে গভীর, ঋদ্ধ, প্রাসঙ্গিক এবং বোধগম্য করে তোলার প্রয়াস হিসেবেই বইটি লেখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের এ শিক্ষক ও গবেষক।
বইটিতে সর্বমোট ১২টি অধ্যায় রয়েছে। সেগুলো হলো: ১. কুরআনের অনুবাদ এবং প্রাসঙ্গিক কথা; ২. পৃথিবীতে প্রাণের উৎপত্তি: কুরআন ও বিজ্ঞান; ৩. জীববিজ্ঞানের ক্রমবিকাশ এবং মুসলিম মনীষীদের অবদান; ৪. কুরআনে বর্ণিত উদ্ভিদকুল এবং জীববিজ্ঞানের ব্যাখ্যা; ৫. মানুষ সৃষ্টি: কুরআন ও জীববিজ্ঞান; ৬. আদম আ.-এর সৃষ্টির রহস্য; ৭. হজরত হাওয়া আ.-এর সৃষ্টির রহস্য; ৮. মানুষ সৃষ্টির সাধারণ পদ্ধতি; ৯. হজরত ইসা আ.-এর সৃষ্টি রহস্য; ১০. কুরআনে বর্ণিত প্রাণিকুল: মৌমাছি, পিঁপড়া, মাকড়সা এবং উট; ১১. অণুজীব ও ব্যাকটেরিয়া: কুরআন কী বলে?; এবং ১২. ক্রায়োনিক্স এবং পুনরুজ্জীবন: কুরআন ও বিজ্ঞান।
জানা গেছে, প্রায় ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে বইটি তৈরির পেছনে সময় দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষক। অবশেষে বইটি ইলহাম প্রকাশনী থেকে বের হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান এবং কুরআন নিয়ে গবেষণা করা শিক্ষকগণও বইটির প্রসঙ্গে ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন।
অধ্যাপক ইমতিয়াজের ভাষ্য, ‘গতানুগতিক পদ্ধতিতে কুরআনের বিজ্ঞান রিলেটেড যে টার্ম বা শব্দের অনুবাদ এবং ব্যাখ্যা বিভিন্ন গ্রন্থে রয়েছে—তা অনেকাংশেই যথার্থ নয়। সেই ব্যাখ্যাকে সঠিক ধরলে কুরআন এবং বিজ্ঞান-এর যেকোনো একটিকে সঠিক বলে মনে হয়; কিন্তু কুরআন তো কখনই মিথ্যা হতে পারে না। সুতরাং বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণেই সমস্যা রয়েছে। আমার বইটির মাধ্যমে এই সমস্যাটি কতটুকু সমঝোতায় এবং সমাধানে নিয়ে আসা যায়—সেই চেষ্টাই করা হয়েছে। এজন্যই সংশ্লিষ্ট শব্দসমূহের সম্ভাব্য অনুবাদ এবং ব্যাখ্যা কী হতে পারে—তা এই বইয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব করা হয়েছে।’
রাবির এ অধ্যাপক বলেন, ‘২০২০ সালে করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই বইটি লেখা শুরু করেছিলাম। অনেক আগেই প্রকাশ হওয়ার কথা থাকলেও, বিভিন্ন জটিলতায় বইটি একটু দেরিতে বাজারে এসেছে। বইটিতে সর্বমোট ১২টি অধ্যায় রয়েছে; প্রতিটি অধ্যায়েই পাঠকরা বিজ্ঞান এবং কুরআন রিলেটেড নতুন নতুন তথ্য পেয়ে বিমোহিত হবেন বলে বিশ্বাস করি।’
এদিকে, বইটির বিষয়ে ইতিবাচক রিভিউ দিয়েছেন বিজ্ঞান এবং ইসলামিক স্টাডিজ নিয়ে কাজ করেন—এমন একাধিক শিক্ষক ও গবেষক।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ বলেন, ‘প্রফেসর ড. আহমেদ ইমতিয়াজ-এর দীর্ঘদিনের গবেষণার ফসল কুরআন ও বায়োলজি (দ্য বায়োলজিক্যাল মিরাকলস ইন দ্য কুরআন) গ্রন্থটি। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের একজন প্রফেসর ও চৌকস গবেষক হিসেবে তিনি জীববিজ্ঞানের বিবিধ শাখায় সফলতার সাথে বিচরণ করছেন। ছাত্রজীবন থেকেই পবিত্র কুরআনের সাথে জ্ঞানচর্চা-বিষয়ক সম্পৃক্ততার কারণে কুরআন ও বিজ্ঞানের উপর নিজেকে সফল গবেষক হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। গ্রন্থটি সাধারণ পাঠক থেকে শুরু করে বিজ্ঞান প্রেমিক কুরআন গবেষকদের জন্য পরিতৃপ্তির খোরাক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
অধ্যাপক ড. আহমেদ ইমতিয়াজ ২০০৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি মাশরুমের একজন প্রথিতযশা গবেষক হিসেবে দেশে ও বিদেশে বেশ পরিচিত। মাশরুম বিষয়ে সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের উদ্দেশ্যে তিনি প্রায় ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০টি দেশ ভ্রমণ করেছেন।