ঈদ ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি
ক্যাম্পাসে বন্ধ ক্যান্টিন-দোকান, কী খাবেন ঢাবির বিদেশি শিক্ষার্থীরা
- জুবায়ের হোসাইন, ঢাবি
- প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২৪, ০৯:৩৩ AM , আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪, ১০:১১ AM
পবিত্র ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন দীর্ঘ ছুটিতে বন্ধ রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস। আবাসিক হলে হাতেগোনা চাকরিপ্রত্যাশী কিছু শিক্ষার্থী ছাড়া ঈদ উদযাপনে বেশিরভাগই পাড়ি জমিয়েছেন গ্রামের বাড়িতে। তবে ব্যতিক্রম শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা। হলে অবস্থান করলেও খোলা নেই কোনো ক্যান্টিন বা মেস। ফলে এসব শিক্ষার্থীরা এ বন্ধে আশঙ্কা করছেন তীব্র খাদ্য সংকটের।
ঈদুল আজহা উদযাপন করতে শিক্ষার্থী ঘরে ফিরতে শুরু করেন চলতি মাসের শুরু থেকেই। ইতোমধ্যে ক্যাম্পাসের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন। শুক্রবার সরেজমিনে ক্যাম্পাস পরিদর্শনে দেখা যায়, হলগুলোতে কিছু চাকরিপ্রত্যাশী বা ছাত্রলীগের নেতা ব্যতীত বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই হল ত্যাগ করেছেন।
প্রায় সবগুলো হলের ক্যান্টিনগুলোও বন্ধ হয়েছে। ক্যান্টিন হলের কয়েকটি দোকান ছাড়া বাকি দোকান এবং দোকানের শুকনো খাবার বাদে ক্যাম্পাসে নেই কোনো ভারী খাবার। তাছাড়া আজ শনিবারের মধ্যে বেশিরভাগ দোকানগুলোও বন্ধ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন একাধিক দোকানি।
ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীশূন্য হলেও ঢাবির স্যার পি. জে হার্টগ ইন্টারন্যাশনাল হলে অবস্থান করছেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা। যাতায়াত খরচ বেশিসহ ভিসাজনিত নানা জটিলতায় তিন থেকে চারজন শিক্ষার্থী বাদে বাকিরা হলেই অবস্থান করছেন। হলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান থাকলেও খোলা নেই কোনো ক্যান্টিন বা মেস।
হলসূত্রে জানা যায়, ঈদের লম্বা ছুটি পেলেও দেশে যায়নি বেশিরভাগ শিক্ষার্থী। এখানেই ঈদ উদযাপন করবেন তারা। এসব শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে ঈদের দিন দুইবেলা খাবারের আয়োজন করা হবে। কিন্তু বর্তমানে তারা নিজেরা খাবার-পানি নিয়ে কোনো ধরনের জটিলতার মধ্যে রয়েছেন কি না সে ব্যাপারে হল প্রশাসনকে কিছুই অবহিত করেননি। অন্যদিকে যেহেতু তারাই মেস চালায় তাই মেস সম্পর্কিত সব কিছু তারাই নিয়ন্ত্রণ করেন।
তবে হলে অবস্থানরত একাধিক শিক্ষার্থী খাদ্য সংকটের ব্যাপারে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন। নেপালি শিক্ষার্থী ইশ্বর প্রসাদ বলেন, বেশিরভাগ শিক্ষার্থী হলেই আছেন। তবে হলে কোনো খাবার-পানির ব্যবস্থা নেই। আমি এখন জসীমউদ্দিন হল থেকে নুডুলস এনে খেলাম। ছুটির সময় হলেই আমাদের এমন খাবার সংকটে ভুগতে হয়।
একাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে একই তথ্য জানা গেলেও অনেকটা দায় এড়িয়ে গেছে হল প্রশাসন। তারা বলছেন, বন্ধ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের খাবার-পানির দায়িত্ব আমাদের না। কারণ তাদের মেস তারাই পরিচালনা করেন। এখানে আমরা কিছু জানি না। এছাড়া শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যার ব্যাপারে আমাদেরকেও কিছু জানায়নি।
হলের সিনিয়র অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার আব্দুল হাই বলেন, হলে একটাই মেস আছে। সাধারণত শিক্ষার্থী যারা আছে মেস তারাই চালায়। আমাদের এখানে কিছু করতে হয় না। ছুটির সময় আসলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকেই মেসের কর্মচারীরা ছুটি নিয়ে চলে যায়। এখানে আমাদের কোনো দায় দায়িত্ব নেই। ছুটির সময় ওরা হয়তো বাইরে খায়। এতে খাওয়ার কষ্ট হতে পারে, সেক্ষেত্রে আমাদের তো কিছু করার নেই।
ইন্টারন্যাশনাল হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এখনও পর্যন্ত ওরা আমাকে বিষয়টি জানায়নি। ঈদের দিন ২ বেলা খাবারের ব্যবস্থা আমরা করছি। বাকি সময়টাতে শিক্ষার্থীরাই মেস চালায়, সেখানে তারা তাদের খাবারের ব্যবস্থা করতে পারেন। এর বাইরে তারা যদি আমাদেরকে তাদের সমস্যার কথা জানায় তাহলে আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করতে পারি।