দেশে এআইয়ের ব্যবহার বেড়েছে ৮ শতাংশ, বেশি অনলাইন শিক্ষায়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:২৯ AM , আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০৫ AM
বাংলাদেশে এখন প্রায় সব খাতেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার বেড়েছে। সরকারি সেবা থেকে শুরু করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও শিল্প, কর্মক্ষেত্র— সবখানেই বাড়ছে স্মার্ট প্রযুক্তির উপস্থিতি। এআই-ভিত্তিক প্রযুক্তির প্রসার বাড়ায় জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে ব্যাবসায়িক সিদ্ধান্ত, সবই হচ্ছে আরও স্মার্ট ও নির্ভুল।
সম্প্রতি টেলিনর এশিয়ার এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের ৯৬ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী নিয়মিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেন। ২০২৪ সালে এটি ছিল ৮৮ শতাংশ। অর্থাৎ দেশে এআইয়ের ব্যবহার গতবছরের তুলনায় বেড়েছে ৮ শতাংশ।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) প্রকাশিত টেলিনর এশিয়া পরিচালিত ‘ডিজিটাল লাইভস ডিকোডেড ২০২৫: বিল্ডিং ট্রাস্ট ইন বাংলাদেশ’স এআই ফিউচার’-এর এজ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশের এক হাজার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওপর এ গবেষণা চালানো হয়। এতে এআইয়ের অগ্রযাত্রা এবং দায়িত্বশীল, নৈতিক ও নিরাপদ এআই ব্যবহারের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জীবনকে আরো স্মার্ট করে তুলতে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে দৈনন্দিন বাস্তবতায় নিয়ে আসতে ভূমিকা ভূমিকা রাখছে মোবাইল ফোন। বাংলাদেশে অনলাইন শিক্ষা (৬২ শতাংশ), দূরবর্তী কাজ (৫৪ শতাংশ) এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনার (৫০ শতাংশ) মতো ক্ষেত্রে স্মার্ট জীবনধারাকে এগিয়ে নিচ্ছে মোবাইল প্রযুক্তি।
গত এক বছরে, দূরবর্তী কাজ (+৩৯ শতাংশ) এবং বাজেট ও ব্যয় ব্যবস্থাপনায় (+৩৬ শতাংশ) মোবাইলের ব্যবহার বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এআই যে-কোনো বিষয়ে অনেক দ্রুত এবং সঠিক পরিকল্পনা বা সিদ্ধান্ত জানাতে পারে ৷তাই ধীরে ধীরে বাড়ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। তবে, প্রজন্মভেদেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে পার্থক্য দেখা যায়।
বাংলাদেশে প্রতিদিন ১০ জনের মধ্যে ছয়জন কোনো না কোনো ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছেন। স্কুল, অফিস বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনের কনটেন্ট তৈরি, শিক্ষামূলক নানা কনটেন্ট তৈরি, স্বাস্থ্য, আর্থিক সেবা বা ভ্রমণ পরিকল্পনা থেকে শুরু করে প্রায় সব ক্ষেত্রেই বেড়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র, দৈনন্দিন কার্যক্রম বা অনলাইনে কেনাকাটায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার ব্যবহার জানান দেয় যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এখন মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে উঠেছে।
কর্মক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের হার ২০২৫ সালে ৪৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৬২ শতাংশে পৌঁছেছে। তবে যারা কর্মস্থলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করছে, তাদের মাত্র অর্ধেক জানিয়েছে, তাদের প্রতিষ্ঠানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আনুষ্ঠানিক কৌশল রয়েছে। এর মানে দায়িত্বশীল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে প্রতিষ্ঠানগুলোর আরো দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মূলত কর্মক্ষেত্রে কনটেন্ট লেখা ও তৈরি করতে ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু কর্মীদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে আরো বহু কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের সুযোগ আছে। বর্তমানে দৈনন্দিন ও প্রশাসনিক কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের হার মাত্র ২৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন : স্মার্টফোনে নিজ থেকেই ডাউনলোড হয় অ্যাপ, বন্ধ করবেন যেভাবে
বাংলাদেশে মানুষ দৈনন্দিন জীবনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গ্রহণ করলেও, ব্যক্তিগতভাবে এর ওপর অতিনির্ভরতা, চাকরির নিরাপত্তাহীনতা এবং গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকার করে তরুণ প্রজন্ম। যদিও তারাই এআইয়ের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি করে এবং নিজেদের প্রযুক্তি ব্যবহারে স্বচ্ছন্দ কিংবা দক্ষ বলে মনে করেন। তারা এআই ব্যবহারে নিরাপত্তা ও সুরক্ষার নিশ্চয়তা চায়।
টেলিনর এশিয়ার প্রধান ইওন ওমুন্ড রেভহগ বলেন, বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সম্ভাবনা নিয়ে আশাবাদের পাশাপাশি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতাও রয়েছে। প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে সবার জন্য সংযোগ ও নিরাপদ ডিজিটাল দক্ষতা নিশ্চিত করা আরও জরুরি। আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব হলো, ডিজিটাল বৈষম্য কমানো এবং এমন একটি সমাজ গঠন করা যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না।