৫১ মাসের বকেয়া বেতন প্রসঙ্গে যা বললেন কারিগরির ডিজি

মো. আজিজ তাহের খান ও আন্দোলনরত শিক্ষক
মো. আজিজ তাহের খান ও আন্দোলনরত শিক্ষক  © ফাইল ফটো

চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তর ও ৫১ মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা। গত রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো তারা এ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষকরা।

শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস কথা বলেছে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজিন তাহের খানের সঙ্গে। 

শিক্ষকদের দাবি যৌক্তিক জানিয়ে কারিগরির ডিজি বলেন, 'চাকরি করে শিক্ষকরা বেতন পাবেন না—এমন হতে পারে না। এটি অমানবিক। শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত বিষয়টির সমাধান হবে।'

মো. আজিজ তাহের খান আরও বলেন, 'সরকারের কোনো একটি পক্ষের আশ্বাসের প্রেক্ষিতেই শিক্ষকরা বেতন ছাড়াই দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের বিষয়টি নিয়েও সচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। শিক্ষকদের কষ্ট যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে লাঘব হয় সেই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।'

 শিক্ষকরা বলছেন, দাবি পূরণ না হলে বিকেলে অধিদপ্তর ব্লকেড করা হবে।

এর আগে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে আন্দোলনকারীরা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আজিজ তাহের খানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। আজ মঙ্গলবার ভোরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সহযোগিতায় তিনি অধিদপ্তর ছাড়েন। 

আন্দোলনরত শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৯ সালে স্টেপ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই বেতন পাচ্ছেন না তারা। প্রায় ৫১ মাস ধরে অন্তত ৭৩৮ জন শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না। ফলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। ২০১১ সালে তাদের চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেট বরাদ্দও দেয়া হয়। এরপরও ২০২০ সালের জুলাই থেকে বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে।

শিক্ষকরা জানান, কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার বকেয়া বেতন-ভাতা ও চাকরি রাজস্বখাতে স্থানান্তরের বিষয়ে জানানো হলেও আশানুরূপ কোনো সুফল না পাওয়ায় ২২ সেপ্টেম্বর ৪১টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্র-শিক্ষকের সম্পৃক্ততায় এক দিনের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়। পরবর্তীতে ৩০ সেপ্টেম্বর সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলন করা হয় এবং দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। 

মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সমন্বয়হীনতা এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতার দীর্ঘসূত্রতা এবং দীর্ঘ ৫১ মাস বেতনবিহীন অবস্থায় ও চাকরি রাজস্বকরণে দেরি হওয়ায় শিক্ষকরা সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন এবং চরমভাবে বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ পলিটেকনিক টিচার্স ফেডারেশন (বিপিটিএফ) ২০ অক্টোবর থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে অব্যাহত রাখবে।


সর্বশেষ সংবাদ