দারিদ্র্য জয় করে ঢাবি-জাবি-জবি-বিইউপিতে চান্স নয়নের, হতে চান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক

 আব্দুল বাতেন নয়ন
আব্দুল বাতেন নয়ন  © টিডিসি

আব্দুল বাতেন নয়ন। ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরিক্ষায় দেখাচ্ছেন একের পর এক চমক। চার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে চারটিতেই চান্স পেয়েছেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবিতে) মানবিক থেকে ‘বি’ ইউনিটে ৩০৪তম ও ‘এ’ ইউনিটে ১৩৭ তম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ‘বি’ ইউনিটে ৩৫ তম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ‘সি’ ইউনিট ৪৩তম ও বি ইউনিট ৩২৭তম এবং বিউপিতে সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে ৭৪ তম স্থান অধিকার করেছেন।   

নয়নের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলায়। বাবা গ্রামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, মা গৃহিণী। ছোট বেলা থেকেই পারিবারিক নানা টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে বেড়ে উঠেছেন তিনি। তবে পড়ালেখায় কোনো ঘাটতি রাখেননি নয়ন।  স্থানীয় হাই স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে গোল্ডেন এ+ পেয়ে এসএসসি পাস করেন তিনি। এরপর  উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হন রংপুর সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগে। সেখান থেকে এইচএসসিতে গোল্ডেন এ+ পান তিনি। 

বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যন্ত আসার পথ সুগম ছিল না জানিয়ে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে নয়ন বলেন, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান আমি। বাবা-মায়ের স্বপ্ন থাকলেও আর্থিক সংকটের কারণে তারা আমার পড়ালেখার সব খরচ চালাতে পারেননি। স্কুল জীবনে প্রাইভেট পড়িনি কখনো। পরিবার বাহিরে পড়াতে চায়নি, তবুও তাদের মত উপেক্ষা করে নিজের অনুপ্রেরণা এবং সাহস নিয়ে শহরে গিয়েছিলাম কলেজে পড়তে। কলেজে থাকতে বাসা থেকে অর্ধেক টাকা দিত আর বাকিটা আমি টিউশনি করে ম্যানেজ করেছি। কলেজে শুরুর দিকে ৫-৬ মাস প্রাইভেট পড়লেও পড়ে আর পড়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন,  এডমিশনের সময়টাতে  আমি বাড়তি কিছু কাজ করে কোচিংয়ে ভর্তির টাকা ম্যানেজ করেছিলাম। তারপর ঢাকায় এসেও টিউশন করেছি। ঢাকা কলেজে পড়ুয়া আমার এক মামা ছিলেন তিনি আমাকে আর্থিকভাবে,মানসিকভাবে অনেক অনেক সাহায্য করেছেন। তার অবদান অনস্বীকার্য। 

একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার অনুভূতি জানিয়ে নয়ন বলেন,  এই অনুভূতি বলে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।আমার  জীবনে এরকম দিন হাতে গোনা দুই-এক বার এসেছে। মাকে ফোন করে রেজাল্ট জানানোর পর মা কোনো কিছু না বলে ফোন কেটে দেন। পরে শুনেছি যে ফোন কাটার পর মা অনেকক্ষণ কেঁদেছেন আমার মা। বাবার খুশির শেষ নেই। আত্মীয় সজন, পাড়া প্রতিবেশী সবাই অনেক খুশি হয়েছে। আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া যে তিনি আমাকে  বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ দিয়েছেন। 

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির বিষয়ে নয়ন বলেন,  স্কুল জীবন থেকে স্বপ্ন দেখেছি ঢাবিতে পড়ার। কলেজে আসার পর সেই আকাঙ্ক্ষা আরো তীব্র হয়। শুরুর দিকে খুব চিন্তা হত যে চান্স পাবো কি না,  আমার দ্বারা সম্ভব কিনা। তবে নিয়মিত পড়াশোনা করে যেতাম। এডমিশন সময় টাতে প্রতিদিন অন্তত গড়ে ১০-১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছি। 

কোথায় ভর্তি হবেন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলজীবন থেকেই স্বপ্ন ছিল ঢাবিতে পড়ার। আল্লাহ আমাকে সে সুযোগ দিয়েছেন। ঢাবিতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হব। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চাই। 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence