বাবাকে হারানো মেয়ে চান্স পেয়েছেন মেডিকেলে, খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় মা

নুসরাত জাহান জুঁই
নুসরাত জাহান জুঁই  © টিডিসি ফটো

সদ্য অনুষ্ঠিত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় (এমবিবিএস) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে নীলফামারী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন নুসরাত জাহান জুঁই (১৮)। তবে তার এ স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে চরম আর্থিক সংকট। ছোটবেলায় বাবাকে হারানো মেয়ের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় খুশির পরিবর্তে দুশ্চিন্তায় আছেন একটি বেসরকারি হাসপাতালের সেবিকা হিসেবে কর্মরত মা ফাতেমা খাতুন।

জানা গেছে, বাবা নাসির উদ্দিন গত ১৫ বছর আগে ফুসফুস ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করেন। বাবার কোনো আদর সোহাগ কাকে বলে জানে না নুসরাত জাহান জুঁই। মা ফাতেমা খাতুন পৌরশহরে অবস্থিত দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবিকা হিসেবে চাকরি করছেন। এক ভাই এক বোনের মধ্যে জুঁই ছোট। 

মায়ের স্বল্প আয় দিয়ে এ পরিবারটি এতদিন ছেলে-মেয়ের পড়াশোনার খরচ বহন করলেও বর্তমানে মেডিকেলে পড়াশোনার বিপুল খরচ মেটানো এখন তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন মা ও ভাই ফাহিম মাহমুদ।

জুঁই দুর্গাপুর পৌরশহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে মায়ের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করেছেন। তিনি অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি, পরবর্তীতে সুসঙ্গ আদর্শ বিদ্যানিকেতন থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ ও সুসঙ্গ সরকারি মহাবিদ্যালয় থেকে ২০২৪ সালে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পান। 

মা ফাতেমা খাতুন বলেন, আমি অনেক কষ্টে ছেলে-মেয়েকে মানুষ করেছি। যখন শুনতে পেলাম আমার মেয়ে মেডিকেল চান্স পেয়েছে আনন্দে দু’চোখের পানি ধরে রাখতে পারিনি। আল্লাহর কৃপায় আমার মেয়ে মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় মা হিসেবে অনেক গর্বের। মেয়ের কাছে একটাই চাওয়া সে ডাক্তার হয়ে গরিব অসহায় মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা করুক। সেই সঙ্গে মেয়ের ভর্তিসহ মেডিকেলে পড়াশোনার জন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

আরো পড়ুন: বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, ফি ৩০০ টাকা

নুসরাত জাহান জুঁই বলেন, আমি ছোটবেলা থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। বাবার আদর কোনো দিনই পাইনি। এ পর্যন্ত পড়াশোনা করতে মা যে কষ্ট করেছেন তা দেখেছি। ভাই ছোট একটি চাকরি করেন। তার সংসারও আলাদা। এখন চিন্তায় আছি আমি ভর্তি হতে পারব কিনা। আমি সবার কাছে দোয়া ও সার্বিক সহযোগিতা চাই। আমি যেন ডাক্তার হয়ে দেশের সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।

তিনি আরও জানান, মহান আল্লাহর অশেষ কৃপায় মেডিকেলে চান্স পেয়েছি। চিকিৎসক হয়ে মায়ের দুঃখ ঘোচাতে চাই। টাকার অভাবে যারা চিকিৎসা করাতে পারে না, সেসব গরিব মানুষদের চিকিৎসা সেবা দিতে চাই। বিশেষ করে যারা ক্যান্সার আক্রান্ত তাদের প্রতি বিশেষ নজর রাখার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।


সর্বশেষ সংবাদ