শহীদের স্মরণেও ভালোবাসার ফুল দিও: ছাত্র ইউনিয়ন

  © সংগৃহীত

স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস পালন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলা সংসদ। আজ রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে দিবসটির স্মরণে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এর আগে দারুল ফজলে জেলা ছাত্র ইউনিয়ন কার্যালয়ে আলোচনা সভায় সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি এ্যানি সেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক টিকলু দে, শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক নিশান রায়, হালিশহর থানার সদস্য সাজ্জাতুর জামান অভি, পাহাড়তলী থানার সভাপতি ডেনি বিশ্বাস, বন্দর থানার মোহাম্মদ জীবন, দূর্বার, শুভ দেবনাথ, অর্নব, জুলিয়ান প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী।

সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৮৩ সালে গণবিরোধী শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে ১৪ ফেব্রুয়ারির মিছিলে স্বৈরাচারী সরকারের পেটোয়া বাহিনীর গুলিতে শহীদ হন জাফর, জয়নাল, মোজাম্মেল, আইয়ূব, দীপালি, কাঞ্চনসহ নাম না জানা আরো অনেকে।গণ আন্দোলনের সেই নির্ভীক সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই দিনটিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। "গরিবের রক্ত" ঢেলে নির্মাণ করা আমাদের ইতিহাস বেদখল হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে ফাল্গুন, হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে ফেব্রুয়ারি। আমাদের ফেব্রুয়ারি লড়াইয়ের মাস, শপথের মাস, এটা কোন ফালতু সেন্টিমেন্টের কথা নয়। এটা হল আমাদের ইতিহাসের মোড় ফেরানো আবেগ-সংগ্রামের, দহনের, তাড়নার ব্যাপার। বাহান্নর একুশ থেকে শুরু করে তিরাশির ১৪ ফেব্রুয়ারি আমাদেরকে ফেরায়, জাগায়, শেখায়। এটাই আমাদের ইতিহাস। ফেব্রুয়ারি বুক মাড়িয়ে দাপাদাপি চলছে গত কয়েক বছর ধরে। সাধু ভ্যালেন্টাইনের মৃত্যু দিবসকে পুঁজি করে বানানো হয়েছে ভালোবাসার ব্যাবসায়িক আয়োজন, ভালোবাসার জন্য আলাদা একটি দিবস উদযাপন।

বক্তারা আরো বলেন, নব্বইয়ের ৬ ডিসেম্বর যে সর্বদলীয় ছাত্র-ছাত্রী-জনতা পতন ঘটিয়েছিল বেহায়া এরশাদের, তার পূর্বসূরি ছিলো তিরাশির সেই মধ্য ফেব্রুয়ারি। আজকের বাংলাদেশ যারা ভুলে গেছে ঐ দিন তারা হতভাগ্য, অভিশপ্ত, অকৃতজ্ঞ। আমরা কি ভুলে যাবো তিরাশির সেই ১৪ ফেব্রুয়ারি? সেলিম-দেলোয়ারের বুকের উপর লেফটেন্যান্ট জেনারেলের ট্রাক? ফুলবাড়ির রাস্তায় চাপ চাপ জমাট মগজ? আমরা ভুলে গিয়েছি আমাদের স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীর শহীদদের৷

১৪ ফেব্রুয়ারিকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, আমাদের জাতীয় সম্পদ-তেল-গ্যাস-বন্দর আজ বহুজাতিক কোম্পানির খপ্পরে, সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা ও দখলদারিত্বের রাম রাজত্ব কায়েম হতে চলেছে দেশে। রক্তে অর্জিত গণতন্ত্র আজ বিপন্ন, বিপন্ন মানবতা-স্বাধীনতা। এভাবে কি চলতে দেওয়া যায় প্রিয় মাতৃভূমিকে? এভাবেই কি প্রিয়জনদের সাথে নিয়ে সন্ত্রাসী- চাঁদাবাজ- মাস্তান- লুটেরাদের সামনে মাথা নিচু করে পথ চলব প্রিয় মাতৃভূমিতে- ক্যাম্পাসে-শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে? আমরা কি রুখে দাঁড়াব না? শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কোনো দিন নয়, আমাদের ভালোবাসা হোক প্রতিদিন-প্রতিনিয়ত। আসুন ১৪ ফেব্রুয়ারিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করি।


সর্বশেষ সংবাদ