সরকার ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোর প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শন করছে: ছাত্র ইউনিয়ন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৫০ PM , আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:০২ PM
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের বিধান বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতায় সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত বর্তমান সরকারের মৌলবাদ তোষণ নীতির অংশ বলে মন্তব্য করেছে সংগঠনটি।
ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজা ও সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন শুভ এক যৌথ বিবৃতিতে সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর প্রতি নমনীয়তা প্রদর্শন করে আসছে। এই সময়ে উগ্র ধর্মান্ধদের আস্ফালন পূর্বের তুলনায় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকার মৌলবাদ তোষণের নীতি গ্রহণ করেছে। যার ফলশ্রুতিতে মৌলবাদীদের দাবির প্রেক্ষিতে ইউনেস্কো স্বীকৃত আমাদের বর্ষবরণের শোভাযাত্রার নাম মঙ্গল শোভাযাত্রা থেকে পরিবর্তন করে আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধিতায় তা বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে সরকার শিশুদের শারীরিক বিকাশ ও সংস্কৃতি সচেতন হয়ে ওঠার প্রাতিষ্ঠানিক পথ রুদ্ধ করেছে। পূর্বেও পতিত স্বৈরাচারের দল আওয়ামী লীগের সরকার ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক গোষ্ঠী হেফাজতে ইসলামের প্রেস্ক্রিপশনে পাঠ্যপুস্তক থেকে প্রগতিশীল ও হিন্দু লেখকদের লেখা বাতিল করে দিয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও একই পথে হাঁটল। পতিত স্বৈরাচারের দল আওয়ামীলীগের সরকার ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভেতর চরিত্রগত কোন পার্থক্য নেই। উভয়ই মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোকে শক্তিশালী হতে সহযোগিতা করেছে এবং সমাজে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়েছে।
ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা বলেন, আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের বিধান রেখে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০২৫ প্রণয়ন করতে হবে। সরকার যদি মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি নতজানু হয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সঙ্গীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ না করার বিধান বহাল রাখে তবে আমরা বৃহত্তর ছাত্রসমাজকে সাথে আন্দোলন গড়ে তুলে আমাদের দাবি আদায়ে বাধ্য করব।