বিশ্বকাপ এখন স্বপ্ন নয়, লক্ষ্য—অভূতপূর্ব আত্মবিশ্বাসী নারী ফুটবল দল

২০২৭ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় নারী ফুটবল বিশ্বকাপে খেলার লক্ষ্য বাংলাদেশের মেয়েদের
২০২৭ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় নারী ফুটবল বিশ্বকাপে খেলার লক্ষ্য বাংলাদেশের মেয়েদের  © সংগৃহীত

বছর খানেক আগেও বাংলাদেশের মেয়েদের কাছে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপই ছিল সবচেয়ে বড় অর্জনের মঞ্চ। আজ তারা চোখ রাখছে ২০২৭ সালে ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় নারী ফুটবল বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্নে। আর এই স্বপ্নকে এখন আর অসম্ভব বলার সুযোগ নেই—কারণ মেয়েরা পেরিয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডি, পৌঁছে গেছে এশিয়ার সেরা ১২ দলের আসরে।

আগামী মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় বসবে এএফসি নারী এশিয়ান কাপের ২১তম আসর। ১২ দলের এই প্রতিযোগিতার শীর্ষ ৮ দল সরাসরি পাবে ২০২৭ নারী বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ। বাংলাদেশের মেয়েরা সে লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছে।

এক ম্যাচ হাতে রেখেই বাছাইপর্ব থেকে মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে আগামীকালের ম্যাচটি কাগজে-কলমে এখন আনুষ্ঠানিকতা। তবে বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য—শেষটা জয় দিয়েই রাঙানো। ইয়াঙ্গুনে আজ টানা দুই ঘণ্টার অনুশীলনের পরও ক্লান্তির ছাপ নেই কারও চোখে-মুখে। অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার ভিডিও বার্তায় বলেন, “সবাই যেভাবে আমাদের সমর্থন করছেন, সেভাবেই পাশে থাকুন। যেন আরও এগিয়ে যেতে পারি। সামনে সুযোগ এসেছে, আমরা অবশ্যই চেষ্টা করব সেটা কাজে লাগাতে। আমরা দলকে বিশ্বকাপে দেখতে চাই।”

তবে দল কিছুটা চোট সমস্যায় ভুগছে। তবু র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের (১২৮) চেয়ে অনেক পিছিয়ে থাকা তুর্কমেনিস্তান (১৪১) খুব একটা ভাবাচ্ছে না। গোলরক্ষক কোচ মাসুদ আহমেদ বললেন, “কিছু ছোটখাটো ইনজুরি আছে। কোচ তাদের রিকভারির সময় দিয়েছেন। বাকিদের নিয়ে কাজ করেছি। মেয়েরা খুব মনোযোগী, আমরা বারবার বলছি—বাছাই এখনো শেষ হয়নি। ইনশাআল্লাহ, জয় দিয়েই শেষ করব এবং উদ্‌যাপন করব।”

এই অর্জনের পেছনে রয়েছে ধাপে ধাপে গড়ে ওঠা প্রস্তুতি। গত মে মাসে জর্ডানে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে ড্র করে বাড়িয়েছিল আত্মবিশ্বাস। এরপর মিয়ানমারে সেই আত্মবিশ্বাসই রূপ নেয় ইতিহাসে। অধিনায়ক আফঈদা বলেন, “এই আনন্দ আসলে বলে বোঝানো যাবে না। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল এই প্রথম এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করেছে। এটা আমাদের সবার জন্য দারুণ গর্বের।”

২০২৪ সালের মার্চে পিটার বাটলার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত অক্টোবরে সাফ জেতে বাংলাদেশ। পরে বিদ্রোহ, দল পুনর্গঠন, এবং নানা সমালোচনার ভেতর দিয়েই এগিয়ে গেছেন কোচ। ফেব্রুয়ারিতে তরুণ দল নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলতে গিয়ে দুই ম্যাচে হারের পরও তাঁর ওপর আস্থা রেখেছে বাফুফে—যার প্রমাণ মিলেছে এবারকার বাছাইয়ে।

 


সর্বশেষ সংবাদ