জাতীয়করণের আশ্বাস পেয়েছেন বৈষম্যের শিকার ২৭টি মডেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৮ PM
বাংলাদেশে ‘মডেল স্কুল’ ধারণাটি গড়ে উঠেছিল শিক্ষার মান উন্নয়ন ও উদ্ভাবনী পন্থা প্রয়োগের উদ্দেশ্যে। ২০০৮ সালে একটি উদ্যোগ হিসেবে সারাদেশে ৩১৫টি মডেল স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে ধাপে ধাপে প্রায় সব স্কুলকে সরকারিকরণ করা হয়। কিন্তু এরমধ্যে ২৭টি বাদ পড়েছে। বাদ পড়া এসব প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণের আশ্বাস দিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার। সম্প্রতি জাতীয়করণ বঞ্চিত মডেল প্রতিষ্ঠানের নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে এ আশ্বাস দেন শিক্ষা উপদেষ্টা।
বঞ্চনার শিকার এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার সারা দেশে ৩১৫টি মডেলস্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিল, যেগুলোতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ছিল। যেমন- কম্পিউটার ল্যাব ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ছিল। পরে ২০১৫ সালে এই স্কুলগুলোকে উপজেলা পর্যায়ে সরকারিকরণের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তবে রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বজনপ্রীতির কারণে ২৭টি স্কুল সেই তালিকা থেকে বাদ পড়ে।
জাতীয়করণ বঞ্চিত মডেল প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এই স্কুলগুলো সরকারি সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে নতুন করে ১৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ হয়েছে শুধু মাত্র বিভিন্ন উপদেষ্টা এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সুপারিশে। কিন্তু এই ২৭টি মাধ্যমিক মডেল প্রকল্পভুক্ত বিদ্যালয়ের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত না আসায় আমরা চরমভাবে ব্যাথিত। ২০১৮ সাল থেকে আমরা বিভিন্নভাবে সরকারের কাছে স্মারকলিপি ও আবেদন জানিয়ে আসছি। কিন্তু প্রত্যাশিত কোন ফল পাইনি।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব নয় বরং সম্প্রীতির ও ঐক্যের প্রতীক: প্রধান উপদেষ্টা
প্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ২০১৬ সালে ১১৯টি মডেল স্কুল সরকারীকরণ করা হলেও পরবর্তী তালিকায় স্থানীয় সংসদ সদস্যদের প্রভাবের কারণে ২৭টি যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাদ পড়ে। তিনি বলেন, সম্প্রতি নতুন ১৩টি স্কুল সরকারি করা হয়েছে, যা বঞ্চনার শিকার এই ২৭টি স্কুলের প্রতি বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন ইকবাল বঞ্চিত স্কুলগুলো দ্রুত সরকারিকরণে সরকারে হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
জাতীয়করণবঞ্চিত ২৭টি মডেল বিদ্যালয় হলো—শরীয়তপুরের ড্যামুডা আলহাজ ইমাম উদ্দিন মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর হাফেজ আব্দুর রাজ্জাক পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নরসিংদীর পলাশ থানা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী কলেজিয়েট মডেল স্কুল, মানিকগঞ্জের ঘিওর মডেল পাইলট হাই স্কুল, পঞ্চগড়ের আটোয়ারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট কে. সি. পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, গাইবান্ধার বুড়াইল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শেরপুরের নকলা পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, শেরপুরের আব্দুল হাকিম স্মৃতি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বরিশালের বাকেরগঞ্জ জীবন সিং ইউনিয়ন মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থানা মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পটুয়াখালীর দুমকি আপতুননেছা খাতুন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মেহেরপুরের গাংনী পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রাজাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কুষ্টিয়ার কুমারখালী এম এন মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বাগেরহাটের পেরিখালি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনার বটিয়াঘাটা হেডকোয়ার্টার্স পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নওগাঁর জাহাঙ্গীরপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জের ধানগরা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নাটোরের লালপুর শ্রী সুন্দরী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নওগাঁর মান্দা শ্যামচাঁদ মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, চাঁদপুরের নিজমেহার মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া আদর্শ বহুমুখী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও বাঁশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়।