অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা
স্টুডেন্ট ভিসা রিফিউজড হচ্ছে যে পাঁচ ভুলে
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০২:৪৫ PM
অস্ট্রেলিয়ায় উচ্চশিক্ষা—বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই একটি নির্ভরযোগ্য ও আকর্ষণীয় গন্তব্য। শুধু ডিগ্রি নয়, দেশটির মানসম্মত শিক্ষা ও আধুনিক ক্যাম্পাস সুবিধা অনেক শিক্ষার্থীকেই সেখানে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী করে তুলছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভিসা রিফিউজের হার বাড়ায় তৈরি হয়েছে নতুন উদ্বেগ।
অস্ট্রেলিয়ার হোম অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের ব্যাখ্যায় দেখা যায়—আবেদনকারীর প্রকৃত উদ্দেশ্য স্পষ্ট না হলে, বা আর্থিক সক্ষমতা যথাযথভাবে প্রমাণিত না হলে, ভিসা অনুমোদন পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে অনেকেই প্রথমবারেই রিফিউজড হচ্ছেন।
১. “জেনুইন স্টুডেন্ট” না মনে হলে
২০২৪ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়া নতুন Genuine Student (GS) মূল্যায়ন চালু করেছে। এর অধীনে ভিসা অফিসাররা যাচাই করেন—
*আবেদনকারী সত্যিই পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন, নাকি অন্য উদ্দেশ্য আছে;
*নির্বাচিত কোর্সটি তার পূর্ববর্তী পড়াশোনা বা ক্যারিয়ার পরিকল্পনার সঙ্গে কতটা সম্পর্কিত;
*পড়াশোনা শেষে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বাস্তব পরিকল্পনা আছে কি না;
এখানেই সবচেয়ে বেশি আবেদন আটকে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: জেনে রাখুন বিশ্বসেরা ২৯ স্কলারশিপের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট
২. ফিন্যান্সিয়াল প্রমাণে অস্পষ্টতা
অনেক আবেদনকারী ফান্ডিং প্রমাণ দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। স্পনসরের পেশা, আয়, ব্যাংক স্টেটমেন্টের উৎস—সবকিছু এখন খুঁটিয়ে দেখা হয়। সাম্প্রতিক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের হাতে কমপক্ষে এক বছরের টিউশন ফি ও জীবনযাত্রার খরচ মেটানোর মতো অর্থ থাকতে হবে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে (মে ২০২৪) বলা হয়েছে, অস্ট্রেলিয়া “ভুয়া রিক্রুটমেন্ট ও নকল আর্থিক ডকুমেন্ট” ঠেকাতে কড়া নজরদারি শুরু করেছে।
৩. SOP ও GTE কপি করা বা অপ্রাসঙ্গিক লেখা
ভিসা অফিসাররা এখন এআই ও সফটওয়্যার দিয়ে SOP/GTE যাচাই করেন। ফলে “ইন্টারনেট থেকে কপি” করা লেখা সহজেই ধরা পড়ে।
নিজের ভাষায়, নিজের গল্পে লিখুন—
*কেন অস্ট্রেলিয়া বেছে নিয়েছেন;
*কোর্সটি কীভাবে ভবিষ্যতে কাজে লাগবে;
*দেশে ফিরে কী করবেন;
একজন অফিসার বলেন, “অতিরিক্ত নাটক বা বড় বড় প্রতিশ্রুতির চেয়ে বাস্তব ও আন্তরিক লেখা বেশি গুরুত্ব পায়।”
আরও পড়ুন: বিদেশে উচ্চশিক্ষা: জেনে নিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুল-ফ্রি ১৬ স্কলারশিপ সম্পর্কে
৪. ভুয়া বা অসম্পূর্ণ ডকুমেন্ট
ফেক আইইএলটিএস রিপোর্ট, জাল ব্যাংক স্টেটমেন্ট, বা অনির্ভরযোগ্য সার্টিফিকেট দিলে পুরো আবেদনই বাতিল হয়ে যায়। শুধু তাই নয়—ভবিষ্যতে পুনরায় আবেদন করলেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
৫. ভুল এজেন্ট বা পরামর্শক
সব এডুকেশন এজেন্ট বিশ্বাসযোগ্য নয়। ভুলভাবে ডকুমেন্ট জমা দিলে শেষ পর্যন্ত ক্ষতি শিক্ষার্থীরই হয়। তাই সবসময় MARA (Migration Agents Registration Authority) অনুমোদিত এজেন্ট বা অভিজ্ঞ পরামর্শকের সঙ্গে কাজ করা জরুরি।
আরও পড়ুন: জেনে নিন বিশ্বসেরা ১০ ফুল-ফ্রি স্কলারশিপ সম্পর্কে
করণীয় কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, সফল ভিসা পেতে হলে —
*সঠিক কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে হবে। যা নিজের শিক্ষাগত ও পেশাগত লক্ষ্যের সঙ্গে মেলে;
*সব আর্থিক প্রমাণ পরিষ্কার ও যাচাইযোগ্য রাখতে হবে;
*SOP ও GTE নিজের অভিজ্ঞতা ও বাস্তব পরিকল্পনা অনুযায়ী লিখতে হবে;
*রিফিউজ হলে কারণ বিশ্লেষণ করে পরবর্তীবার ভুল সংশোধন করতে হবে।