আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী-কর্মীদের দুঃসংবাদ দিল কানাডা

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী-কর্মীদের দুঃসংবাদ দিল কানাডা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী-কর্মীদের দুঃসংবাদ দিল কানাডা  © ফাইল ফটো

অস্থায়ী বাসিন্দাদের সংখ্যা কমাতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও অস্থায়ী কর্মীদের সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কানাডা। বুধবার ( ১৮ সেপ্টেম্বর ) দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর লিবারেল সরকার বর্তমানে জনমত জরিপে পিছিয়ে রয়েছে। চলতি সপ্তাহে দলটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপ-নির্বাচনে হেরে যায়। এরপরই কানাডা সরকার বিদেশি শিক্ষার্থী এবং কর্মী কমানোর এই পরিকল্পনা ঘোষণা করল। 

গত এপ্রিলে কানাডায় অস্থায়ী বাসিন্দা ছিল মোট জনসংখ্যার ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। কানাডা সরকার চাইছে এটি পাঁচ শতাংশে নামিয়ে আনতে। সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের অভাব এবং জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়সহ বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার জন্য কানাডায় অভিবাসীদের দায়ী করা হয়।   

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানান, চলতি বছরে আমরা বিদেশি শিক্ষার্থী ৩৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যা আগামী বছর আরও ১০ শতাংশ কমানো হবে। তিনি জানান, অভিবাসন আমাদের অর্থনীতির জন্য আশীর্বাদ। কিন্তু সুযোগ সন্ধানীরা যখন এ ব্যবস্থার অপব্যবহার ও শিক্ষার্থীরা সুবিধা নেয় তখন আমাদের তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।

কানাডার অভিবাসন বিভাগের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালে দেশটি পাঁচ লাখ ৯ হাজার ৩৯০ জনকে অনুমোদন দিয়েছে। অন্যদিকে ২০২৪ সালের প্রথম সাত মাসে এক লাখ ৭৫ হাজার ৯২০ জনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন এ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ২০২৫ সালে বিদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমিয়ে চার লাখ ২৭ হাজারে নেমে আসতে পারে। নতুন এ পরিবর্তনের ফলে দেশটিদে বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্ত্রীদের ও অস্থায়ী শ্রমিক আনার বিষয়টিও সীমিত করা হবে।

বুধবার কানাডার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ২০২৫ সাল নাগাদ ৪ লাখ ৩৭ হাজার শিক্ষার্থীকে স্টাডি পারমিট দেওয়া হবে। ২০২৩ সালে দেশটি ৫ লাখ ৯ হাজার ৩৯০ জন শিক্ষার্থীকে তাদের দেশে যাওয়ার অনুমোদন দেয়। চলতি বছর প্রথম সাত মাসে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯২০ জন শিক্ষার্থী কানাডায় যাওয়ার অনুমোদন পেয়েছে। 

উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের শুরুতে স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ব্যাংকে আগের তুলনায় দ্বিগুণ অর্থ দেখাতে হবে বলে জানান অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার। ওই সময়ে জানানো হয়, আগে শিক্ষার্থীদের জীবন ব্যয় (কস্ট অব লিভিং) খরচ হিসেবে ব্যাংকে ১০ হাজার ডলার আছে এমন প্রমাণ দেখাতে হতো। কিন্তু এখন জীবন ব্যয়ের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এটি ২০ হাজার ৬৩৫ ডলারে উন্নীত করা হয়েছে।

ওই সময়ে কানাডার অভিবাসনমন্ত্রী মার্ক মিলার বলেন, কানাডায় পড়তে আসার ক্ষেত্রে যেসব শর্ত রয়েছে সেগুলোর সঙ্গে জীবন ব্যয়ের বিষয়টি সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সমন্বয় করা হয়নি। ফলে কানাডায় আসা শিক্ষার্থীরা দেখতে পান সেখানে থাকার মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাদের কাছে নেই।

আরও পড়ুন: স্নাতক-স্নাতকোত্তর ও পিএইচডিতে স্কলারশিপ দিচ্ছে কাতার, লাগবে না আইইএলটিএস

এ ছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান শিক্ষার নামে প্রতারণা করছে তাদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি করেন মার্ক মিলার। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ করার যে অস্থায়ী অনুমতি রয়েছে সেটির মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করার ঘোষণা দেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ