একই পশুতে কোরবানি ও আকিকা? শরীয়তের যে নির্দেশনা

কোরবানির গরু
কোরবানির গরু  © সংগৃহীত

ইসলামিক বিধান অনুযায়ী, গরু, মহিষ কিংবা উটের মতো বড় পশু সাতজন পর্যন্ত ব্যক্তি মিলে কোরবানি করতে পারেন। কেউ চাইলে ওই একই পশুতে কোরবানির পাশাপাশি আকিকার নিয়তেও শরিক হতে পারেন। এতে কোরবানি এবং আকিকা দুটো ইবাদতই সহিহ হবে।

ছেলের জন্য দুই অংশ ও মেয়ের জন্য এক অংশ আকিকার জন্য নির্ধারণ করতে হবে। যদি কারও শৈশবে আকিকা না হয়ে থাকে, তবে বড় বয়সেও তা আদায় করা যাবে। (ইলাউস সুনান ১৭/১২৬)

অংশ নির্ধারণে সতর্কতা জরুরি
১. সাতজন মিলে কোরবানি করলে সবার অংশ সমান হতে হবে। কারও অংশ এক সপ্তমাংশের কম হওয়া চলবে না।
২. কেউ আধা ভাগ, কেউ দেড় ভাগ এভাবে ভাগ করে কোরবানি দিলে কারও কোরবানি সহিহ হবে না। (সূত্র: বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭)

কোরবানির অর্থ হতে হবে হালাল
কোরবানি অবশ্যই হালাল উপার্জন থেকে করতে হবে। হারাম উপার্জন (যেমন সুদের টাকা বা চুরি করা অর্থ) দিয়ে কোরবানি করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনকি একজনের হারাম অংশ থাকলে সব শরিকের কোরবানিই বাতিল হয়ে যেতে পারে।

আকিকার গুরুত্ব ও সময়
আকিকা হলো সন্তানের জন্ম উপলক্ষে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত ইবাদত। হাদিসে এসেছে, ‘প্রতিটি শিশু আকিকার সাথে দায়বদ্ধ অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। সপ্তম দিনে তার পক্ষ থেকে জবাই করা, নাম রাখা এবং মাথা মুণ্ডন করা হয়।’ (তিরমিজি: ১৫২২)
সপ্তম দিনে না হলে পরে যেকোনো দিন আকিকা করা যায়। ঈদের দিন কোরবানির পশুর মাধ্যমে আকিকা করাও জায়েজ।

একই পশুতে একাধিক আকিকাও সম্ভব
যেসব পশু সাতজন পর্যন্ত ভাগে কোরবানি দেওয়া যায়, সেখানে যদি চারজন কোরবানির নিয়তে অংশ নেন, বাকি তিনজন আকিকার নিয়তেও অংশ নিতে পারবেন। অর্থাৎ একই পশুতে কোরবানি ও একাধিক আকিকা একসঙ্গে বৈধভাবে আদায় করা সম্ভব। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬)

কীসের প্রতি সতর্কতা জরুরি?
অংশ যেন সমান হয়
কোনো শরিকের অংশ যেন এক সপ্তমাংশের কম না হয়
হারাম অর্থ যেন ব্যবহার না হয়
ইবাদতের নিয়ত স্পষ্টভাবে করা

কোরবানির পশুর মাধ্যমে আকিকা করা শরিয়তসম্মত এবং এ বিষয়ে ইসলামে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। তবে শর্ত হলো- সঠিক নিয়ত, নির্ধারিত অংশ এবং হালাল উপার্জন নিশ্চিত করতে হবে। কোরবানি ও আকিকা—উভয় ইবাদতেই আল্লাহর সন্তুষ্টিই প্রাথমিক উদ্দেশ্য।


সর্বশেষ সংবাদ