ঢাকা কলেজ-ব্যবসায়ী সংঘর্ষের সূত্রপাত যে কারণে

নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ
নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ  © টিডিসি ফটো

সোমবার মধ্যরাত থেকে দফায় দফায় সংঘর্ষ চলছে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্য। এখন পর্যন্ত ১০ জন সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। বন্ধ রয়েছে নিউ মার্কেট এলাকার সকল দোকানপাট ও সড়কে যান চলাচল। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে ঢাকা কলেজ ও এর ছাত্রাবাসগুলো।

দুই পক্ষের সংঘর্ষের সূত্রপাত নিয়ে সুস্পষ্ট ধারনা পাওয়া যাচ্ছিল না। একেক সূত্র একেক কারণ বলছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকে এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করে জানা যায় মূলত ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের চাঁদাবাজি বা খাবারের দোকানে কম মূল্য পরিশোধ নয়, বরং নিউ মার্কেটের দুটি ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারীদের নিজেদের বিবাদ থেকে সংঘাতের শুরু।

নিউমার্কেটের কয়েকটি ফাস্টফুড দোকানের মালিক, প্রত্যক্ষর্শীদের বক্তব্য ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে।

এ বিবাদে একপক্ষকে শায়েস্তা করতে অন্যপক্ষ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ডেকে আনে। পরবর্তীতে এটিই ব্যবসায়ী বনাম শিক্ষার্থী সংঘর্ষে রূপ নেয়।

ঘটনার শুরু হয় দুটি ফাস্ট ফুড দোকানের ইফতার পণ্যের টেবিল সাজানো নিয়ে। নিউমার্কেটের-৪ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকতেই ‘ওয়েলকাম’ এবং ‘ক্যাপিটাল’ নামের দুটি ফাস্টফুড দোকান আছে।  টেবিল পাতা নিয়ে বাক বিতণ্ডা শুরু হয় ওয়েলকাম ফাস্টফুডের কর্মচারী বাপ্পী ও ক্যাপিটালের কর্মচারী কাওসারের মধ্যে। বিতণ্ডার এক পর্যায়ে কাওসারকে দেখে নেবার হুমকি দিয়ে বাপ্পী ওই জায়গা থেকে চলে যায়।

এরপর রাত ১১টার দিকে বাপ্পীর সমর্থক ১০-১২ জন যুবক আসে নিউমার্কেটে। এ সময় তারা হাতে রাম দা নিয়ে আসে। তারা ক্যাপিটাল দোকানটিতে গিয়ে কাওসারের সাথে বিতণ্ডায় জড়ায়। সেখানে কাওসার সমর্থকরা বাপ্পীর সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে মার্কেট থেকে বের করে দেয়। বাপ্পী সমর্থকরা মার্কেট থেকে পালিয়ে গিয়ে কিছুক্ষণ পর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি দলকে নিয়ে এসে মার্কেটে হামলা চালায়।

আরও পড়ুন: ঢাকা কলেজের পোলাপান টাকা চাইলেই মারে

ওয়েলকাম ফাস্টফুডের মালিক মো. রফিক এ বিতণ্ডার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কাওসার টেবিল রেডি করার সময় বাপ্পীকে মেরেছিল। এরপর আমি বাপ্পীকে বলেছিলাম আমরা বিষয়টা মিমাংসা করে দিব। কিন্তু এর মধ্যে রাতে বাপ্পী তার পরিচিত ঢাকা কলেজের বন্ধুদের বিষয়টা জানালে ঢাকা কলেজের কয়েজন এসে কাওসারকে জিজ্ঞেস করে, কেন তারা বাপ্পীকে মেরেছে। তখন কাওসার আর তার সাথের ছেলেরা কলেজের ছেলেদের ওপর দোকানের ছুরি চাপাতি নিয়ে হামলা করে। কলেজের ছাত্রদের গায়ে হাত তোলায় পরে ছাত্ররা সব দল বেঁধে আসে।

সিসি টিভি ফুটেজে যা দেখা গেল রাত সাড়ে ১১টার দিকে হেলমেটধারী কলেজ ছাত্ররা এসে ৪ নম্বর গেট ভাঙতে শুরু করে। রাত ১২টার দিকে ছাত্ররা ২ নম্বর গেট খুলে মার্কেটে ঢুকে কিছুক্ষণ ভাংচুর করে আবার বেরিয়ে যায়। এ সময় তাদের দুটি দোকান ভাঙচুর করতে দেখা যায়। তখন থেকে ব্যবসায়ীসহ হকাররা ছাত্রদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

এই ঘটনার নেপথ্যের কারণ জানতে চাইলে নিউমার্কেট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সাহেব আলী বলেন, যদ্দূর জেনেছি, দুই ফাস্টফুডের দোকানের কর্মচারীর মধ্যে ঝামেলায় এক পক্ষের হয়ে ঢাকা কলেজের ছেলেরা এসেছিল। এরপর এই ঝামেলা শুরু।


সর্বশেষ সংবাদ