জাবিতে ৭ ছাত্র হত্যা, একটিরও বিচার হয়নি

১৯৭০ সালের ২০ আগস্ট প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি উদ্বোধন হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। প্রতিষ্ঠার পর গত ৪৮ বছরে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট সাতটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও বিচার হয়নি একটিরও। এই সাতজনের মধ্যে সর্বশেষ জুবায়ের হত্যায় আদালত দোষীদের বিরুদ্ধে রায় দিলেও তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।

সর্বপ্রথম ১৯৭৩ সালে জাকসুর প্রথম সাধারণ সম্পাদক জাসদ নেতা শাহ বোরহান উদ্দীন রোকন খুন হন নারায়ণগঞ্জে। জাকসুর সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়। এরপরের বছরই ১৯৭৪ সালে জাকসুর দ্বিতীয় সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হকও নিহত হন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের হাতে। এই দুজনকেই দাফন করা হয় জাবি ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পাসের ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণাগারের পাশেই রয়েছে তাদের কবর।

তৃতীয় খুনের ঘটনাটি ঘটে ১৯৮৯ সালের ২৬ আগস্ট। ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক হাবীবুর রহমান কবির ছাত্রশিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন। ১৯৯৪ সালে ভর্তি পরীক্ষার ভাইভা দিতে এসে শিবির সন্দেহে ক্ষমতাসীন ছাত্রদলের হাতে খুন হন কামরুল নামের এক ছাত্র। তবে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কে বা কারা জড়িত ছিল সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

একই বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে লোকাল এবং অ্যান্টিলোকাল ছাত্ররাজনীতির কোন্দলে নিহত হন ইংরেজি বিভাগের ছাত্র শওকত কবীর দীপু। তিনি ছাত্রদলের লোকাল গ্রুপের নেতা ছিলেন।

১৯৯৭ সালের ১৮ অক্টোবর ছাত্রলীগের সেক্রেটারি গ্রুপের গুলিতে নিহত হন সভাপতি গ্রুপের ছাত্রলীগ নেতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র আনন্দ কুমার ঘোষ। তার এই খুনের ঘটনায় সেক্রেটারি গ্রুপ ক্যাম্পাসে ‘কিলার গ্রুপ’ নামে পরিচিতি পায়। কিলার গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন ছাত্রলীগের সেক্রেটারি কাঁকন। আনন্দ হত্যার ঘটনায় কিলার গ্রুপকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করা ছাড়া আর কোনো বিচার হয়নি। অপর গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন সভাপতি শেখ নুরুজ্জামান। ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত জসিম উদ্দীন মানিক ছিলেন এই গ্রুপের নেতা। তার নামেই সভাপতি গ্রুপ ক্যাম্পাস রাজনীতিতে ‘রেপিস্ট গ্রুপ’ হিসেবে পরিচিতি পায়। আনন্দ হত্যার পরের বছরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় জাবির বিখ্যাত ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী আন্দোলন’।

সর্বশেষ ২০১২ সালের ৯ জানুয়ারি ছাত্রলীগেরই একটি গ্রুপের হাতে খুন হন ৩৭ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ও ছাত্রলীগ নেতা জুবায়ের আহমেদ। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন রেজিস্ট্রার হামিদুর রহমান আশুলিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন। ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জুবায়ের হত্যা মামলার রায়ে পাঁচজনকে ফাঁসি ও ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগের আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মোহাম্মদ রইছ ও জাহিদ হাসান, দর্শন বিভাগের রাশেদুল ইসলাম রাজু এবং সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাহবুব আকরাম। এদের মধ্যে রাশেদুল ইসলাম রাজু ছাড়া বাকি চারজন পলাতক।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- পরিসংখ্যান বিভাগের ছাত্র শফিউল আলম সেতু ও অভিনন্দন কুণ্ডু অভি, দর্শন বিভাগের কামরুজ্জামান সোহাগ ও ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ, ইতিহাস বিভাগের মাজহারুল ইসলাম এবং অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র নাজমুস সাকিব তপু। যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে অরূপ পলাতক, বাকিরা কারাগারে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence