ঢাকা কলেজের স্বকীয়তা রক্ষার আহবান প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের, খসড়া অধ্যাদেশ বাতিল দাবি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০১:২৯ PM , আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫, ০২:১৪ PM
ঢাকা কলেজের স্বকীয়তা এবং ঢাকা সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কিত খসড়া অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রাক্তন ছাত্ররা। এ সময় সরকারের কাছে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেছেন তারা। এ জন্য সরকারকে চার দিন সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে আগামী বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করার কথা জানিয়েছেন তারা।
আজ রবিবার (১২ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ঢাকা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়া হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন তারা। লিখিত বক্তব্য পাঠন করেন ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু।
তাদের ১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, যেকোনো মূল্যে দেশের প্রাচীন বিদ্যাপীঠ ঢাকা কলেজের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণ করতে হবে; কলেজের অবকাঠামোসহ এক ইঞ্চি জমিও অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে লিখে দেওয়া যাবে না; বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বা ব্যক্তিস্বার্থে ও বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে শিক্ষা-সংকোচনমূলক কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাবে না; অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ফেডারেল বা অন্য কোনো মডেল অনুসরণে একটি নিয়ন্ত্রণকারী বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে, যেখানে ঢাকা কলেজসহ সাতটি সরকারি কলেজের স্বাতন্ত্র ও ঐতিহ্য বজায় রেখে প্রতিযোগিতামূলকভাবে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারে।
এ ছাড়া উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিতে হবে। তাদের ‘নিজভূমে পরবাসী’ বানানোর ষড়যন্ত্র পরিহার করতে হবে; উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম ক্ষেত্রে সিলেবাস সম্পন্ন, যথাসময়ে পরীক্ষা গ্রহণ ও দ্রুততম সময়ে ফলাফল প্রকাশ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষাজীবন সেশন জটমুক্ত করতে হবে; শিক্ষক-ছাত্র অনুপাত যৌক্তিক করার জন্য দ্রুত শিক্ষক সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। শিক্ষার বৈষম্য নিরসনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অনুরূপ বিভাগ প্রতি ২০-৩৫ জন শিক্ষক বা প্রয়োজনী সহায়ক কর্মকর্তা বা কর্মচারী নিয়োগ বা পদায়ন করতে হবে এবং নতুন চাহিদা সম্পন্ন বিভাগ খুলতে হবে।
আরও পড়ুন: সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করলো ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা
পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মেধা বৃত্তি প্রদান, আবাসন সুবিধা বৃদ্ধি, খাবারের ভর্তুকি ও শিক্ষাঋণ প্রদান করতে হবে। তাদের খেলাধূলা ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে সুযোগ বাড়াতে হবে। রাজধানীর সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীপ্রতি বরাদ্দ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামান করতে হবে; শিক্ষক শিক্ষার্থী,অভিভাবক, প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ সকলের মতামতের ভিত্তিতে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে এবং প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন এবং শত বর্ষের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে হাইব্রিড শিক্ষা বা কোনো অপ্রচলিত শিক্ষা কাঠামোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা উপকরণে প্রনয়ন করা যাবেনা। কোনো অবস্থাতেই সমাজের নিম্নবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ বন্ধ বা সীমিত করা যাবে না।
মীর সরফত আলী সপু বলেন, ‘আমরা চাই যাবতীয় বিশৃঙ্খলা দূর হোক। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে ছাত্রছাত্রীদের লেখা-পড়ার পরিবেশ ফিরে আসুক।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, হারুনুর রশিদ হারুন, সাবেক জিএস জাকির হোসেন, সাবেক জিএস এস এ এইচ এম জাভেদসহ আরও অনেকে।