পোষ্য কোটার ধাক্কা, গুচ্ছে ৩২৭৪৩ মেধাক্রম নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ভিসি-কন্যা

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ফটো

দেশের অধিকাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও সমমানের ভর্তি পরীক্ষায় পাস নম্বর থাকে ৩০ থেকে ৪০-এর মধ্যে। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই পরীক্ষা হয় ১০০ নম্বরের। ভর্তি তো দূরের কথা, এই নম্বরও তুলতে পারেন না ভর্তিচ্ছুদের একটি অংশ। অন্যদিকে, ৩০ থেকে ৪০ নম্বর পেয়ে কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ‍সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন প্রথম সারির বিভাগগুলোতেও। তাদের এ সুযোগ করে দিচ্ছে পোষ্য কোটা। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষক বা কর্মকর্তা-কর্মচারীর পরিচয়ে এই নম্বর পেয়েও ভর্তির সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন তারা।

মেধাক্রম ৩২ হাজারের পর থেকেও জিএসটি গুচ্ছভুক্ত ১৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা পাস নম্বর ৪০ অর্জন করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমের মেয়ে ফাতেমা তৌফিক। ৩২৭৪৩ মেধাক্রম নিয়ে রসায়ন বিভাগে ভর্তির পর মাইগ্রেশনে বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগে গেছেন তিনি।

জানা গেছে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষের মোট আসন সংখ্যা ছিল ১৫৭০টি। এবার পোষ্য কোটায় বিজ্ঞান অনুষদে ৩ শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন কোটায় মোট ২৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। উপাচার্য কন্যা ছাড়াও পোষ্য কোটা থেকে মেধাতালিকায় ৯৭৩৯ অবস্থানকারী ওমর ফারুক ফয়সাল স্টোর কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের ছেলে এবং তিনিও বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগে ভর্তি হয়েছেন। ইলেকট্রিশিয়ান আরিফ হোসেন সুমনের ছেলে রাইসুল ইসলাম ইমন ৩৩১২০ মেধাক্রম নিয়ে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।

আরও পড়ুন: পোষ্য কোটার ধাক্কায় পাস করেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিবঞ্চিত মেধাবীরা

জানতে চাইলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন বলেন, কোটা নিয়ে জিএসটির যে নীতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আইন সেই অনুযায়ী ভর্তি করা হয়েছে। এখানে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি।

জানা গেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ২৪ জন শিক্ষার্থী কোটায় ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রতিবন্ধী কোটায় ৬ জন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৬ জন, বিকেএসপি (খেলোয়াড়) ১ জন, মুক্তিযোদ্ধা ৫ জন, পোষ্য কোটায় ৩ জন এবং হরিজন ৩ জন।

গত বছর শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি উঠলেও সেটি কার্যকর হয়নি। বরং এই বছর উপাচার্যের নিজের সন্তানকে কোটায় ভর্তি করানোয় নতুন করে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। জানতে চাইলে আপ বাংলাদেশ ববি শাখার সদস সচিব মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, এমন ঘটনা পুরোপুরি জুলাইয়ের আকাঙ্খার পরিপন্থী। আমরা পোষ্য কোটাকে অবৈধ ও অযৌক্তিক মনে করি। আমরা দৃঢ়ভাবে জানাতে চাই—কোনো কোটার নামে মেধাবী শিক্ষার্থীদের অধিকার হরণ মেনে নেওয়া হবে না।

আরও পড়ুন: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হিসেবে দুই ভিসি-কন্যার নিয়োগ হলো যেভাবে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এবং ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তারিক হোসেন বলেন, অবিলম্বে এ কোটা বাতিল করে সমতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাই। যেখানে দরিদ্র সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের ছেলেমেয়েরা যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে মেধার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে সেখানে সমাজের এলিট ক্লাসের সন্তানরা কোনোভাবেই কোটার দাবিদার হতে পারে না। এই কোটাধারী,মেধাহীন জুনিয়র স্কলার দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়েরই বা কাজ কি? রাষ্ট্রই বা তার থেকে কি আশা করে?


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence