দায়িত্বের কাছে অনুভবের পরাজয়: ঈদেও বাড়ি ফিরছে না কুবির আনসার সদস্যরা

ঈদেও বাড়ি ফিরছেন না কুবির আনসার সদস্যরা
ঈদেও বাড়ি ফিরছেন না কুবির আনসার সদস্যরা  © টিডিসি

পবিত্র ঈদুল আজহা খুশিতে যখন দেশের প্রতিটি ঘর আনন্দে মুখর, তখন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের কপালে নেই বাড়ি ফেরা কিংবা পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ। নিজেদের ঈদের আনন্দ বিসর্জন দিয়ে তাঁরা রয়ে গেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে- নিরাপত্তার স্বার্থে, দায়িত্বের তাগিদে।

জানা গেছে, ঈদ উপলক্ষ্যে আনসার বাহিনীর পক্ষ থেকে দেশের সব সদস্যের মতো কুবিতে নিয়োজিত আনসার সদস্যদের অ্যাকাউন্টে ১৬০ টাকা করে বিশেষ প্রীতি ভোজের জন্য অর্থ পাঠানো হয়েছে। সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যের পক্ষ থেকেও ঈদের দিন আনসার সদস্যদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে বিশেষ প্রীতি ভোজের।

তবে এসব আয়োজনেও মন ভরছে না দায়িত্বে থাকা অনেক সদস্যের। পরিবারের কাছে ঈদের দিন উপস্থিত না থাকতে পারার কষ্ট তাঁদের স্পষ্ট কণ্ঠে ব্যক্ত করেছেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের প্রতিনিধির কাছে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার সদস্য রিয়াজ উদ্দিন বলেন,“বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থে এবারও বাড়িতে যাওয়া হচ্ছে না। একদিক দিয়ে মন খারাপ- মা, পরিবার ও বন্ধুবান্ধব ছাড়া একা একা ঈদ করতে হবে। তবে এই ভেবেই ভালো লাগছে যে দেশের প্রয়োজনে নিজেকে বিলিয়ে দিতে পারছি।”

শুধু দায়িত্ব নয়, রয়েছে হৃদয়ের গভীরে জমে থাকা অভিমানও। রিয়াজ বলেন, “বাড়িতে থাকলে সকাল বেলা মায়ের হাতের রান্না করা সেমাই খেয়ে ঈদগাহে যেতাম নামাজ পড়তে। এরপর বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হতাম। পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতাম। এখন সব স্মৃতি হয়ে গেছে।”

আরেক আনসার সদস্য আলী আকবরের কণ্ঠে ভেসে এল এক পিতার ব্যথিত অভিব্যক্তি। তিনি বলেন, “সম্প্রতি আমার একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে। কিন্তু তাকে দেখতে যেতেও পারলাম না। তার জীবনের প্রথম ঈদটা সে কাটাচ্ছে বাবার স্পর্শ ছাড়া। এটা ভেবে মন ভেঙে যাচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন,“দেশের এবং জনগণের স্বার্থে এবারও বাড়িতে যাওয়ার শখ স্যাক্রিফাইস করতে হচ্ছে। আমাদের কাজ দায়িত্ব, সেটাই এখন মুখ্য। তবে ত্যাগটা সহজ না।”

এ বিষয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী দিলোয়ার হোসেন বলেন,“আমরা অনেক সময়ই নিরাপত্তার বিষয়টি উপেক্ষা করে থাকি। কিন্তু যখন বুঝি, ঈদের দিনেও পরিবারের সাথে না থেকে আমাদের ক্যাম্পাসের আনসার ভাইয়েরা আমাদের জন্য দায়িত্ব পালন করছেন, তখন সত্যিই কৃতজ্ঞতা অনুভব করি। তাদের এই আত্মত্যাগ অবশ্যই সম্মানের দাবি রাখে।”


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!