কুবি ক্যাম্পাসে বর্ষার রঙ: স্মৃতি, সৌন্দর্য আর সাহচর্যের গল্প

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

ঋতুপরিবর্তন বাংলাদেশকে গড়ে তোলে এক নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য্যের লীলাভূমি হিসেবে। সিলেটের জাফলং যদি হয় প্রকৃতির কন্যা তাহল্র কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস হলো কবির সেই রুপালী বাংলা। বাংলা নওরোজের প্রথন দুই মাস বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্য নিয়ে বসুন্ধরায় আগমন ঘটায় কালবৈশাখীর ঋতু গ্রীষ্ম। পৃথিবী নামে অজর ধারায় নামে রিমঝিম বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি ভেজা কুবি ক্যাম্পাস হয়ে উঠে ধরনীর মাঝে চোখ জুড়ানো একটুকরো স্বর্গ।

আকাশের মনও বুঝি আজ কুবির শিক্ষার্থীদের মতোই। হঠাৎ হঠাৎ উদাস, কখনো উচ্ছ্বসিত, কখনো বা আবেগে ভেজা। সকালটা শুরু হয়েছিল রোদের উঁকিঝুঁকি দিয়ে, আর দুপুর গড়াতেই নামল ঝুম বৃষ্টি—শুদ্ধিকরণ যেন এক নিঃশব্দ উৎসব।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, সবুজে ঘেরা এক শান্তিপূর্ণ অরণ্য, যেখানে প্রকৃতি আর জ্ঞানচর্চার এক অপূর্ব সহাবস্থান। কিন্তু বৃষ্টির ছোঁয়ায় এই ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য যেন বহুগুণে বেড়ে যায়। কলা ও মানবিক অনুষদের সামনের সড়কটা তখন যেন হয়ে ওঠে এক চিত্রশিল্পীর তুলিতে আঁকা ছবি। বৃক্ষরাজি মাথা নত করে বৃষ্টির ফোঁটা গ্রহণ করে, আর পুকুরের জলে গলে পড়ে আকাশের প্রতিবিম্ব।

ছাতা হাতে ছুটে চলা শিক্ষার্থীরা তখন অন্যরকম এক উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে। কারো ভেতরে কবিতা লেখার তাগিদ, কেউবা ক্যাফেটারিয়ার ছাদে বৃষ্টির সুর শুনে হারিয়ে যায় স্মৃতির খেয়ায়। একদিকে লাইব্রেরির জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকা ছাত্রছাত্রী, আরেকদিকে বন্ধুরা মিলে গানের সুরে হারিয়ে যাওয়া—সব মিলিয়ে বৃষ্টির দিনে কুবি যেন এক মুগ্ধতার নাম।

ক্যাম্পাসের সামনের দোকানগুলোতে  জমে ওঠা আড্ডা, ভেজা মাঠে ফুটবল খেলার উন্মাদনা কিংবা ক্যান্টিনের গরম চায়ের কাপে ধোঁয়া—সবই যেন এই বৃষ্টিস্নাত ক্যাম্পাসের হৃদস্পন্দন। 

বৃষ্টির দিনে কুবি শুধু একটা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, হয়ে ওঠে স্মৃতির উপত্যকা, ভালোবাসার আশ্রয়, আর অনন্ত সম্ভাবনার একটি জলছবি। এখানে প্রতিটি বৃষ্টির ফোঁটা যেন বলে যায়—‘থেমো না, চলতেই থাকো, জীবনের পথেও এমন ভেজা দুপুর আসবেই, আর সেই দুপুরেই খুঁজে পাবে নিজেকে নতুন করে।’

বৃষ্টিস্নাত কুবি ক্যাম্পাস এক অনুভব, এক চিরসবুজ কবিতা। যা শুধুই দেখা যায় না, অনুভব করতে হয় হৃদয়ের গভীরে।


সর্বশেষ সংবাদ