বিইউপিতে ঢাবি ছাত্রলীগ সহ-সভাপতির শিক্ষক নিয়োগ পাওয়া নিয়ে কী চলছে?

মৌমিতা রহমান ঈপ্সিতা
মৌমিতা রহমান ঈপ্সিতা  © টিডিসি সম্পাদিত

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) আইন বিভাগের এক শিক্ষককে নিয়োগ ঘিরে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। অভিযোগ উঠেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা ওই শিক্ষক ছাত্রজীবনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিনি। নাম মৌমিতা রহমান ঈপ্সিতা।

সূত্রের তথ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৪৫ ব্যাচের ওই ছাত্রী পারিবারিকভাবেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত। বাবা আওয়ামী লীগের ব্যানারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছিলেন।

বিইউপি শিক্ষার্থীদের দাবি, ‘তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিইউপি) যোগদানের আগে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে সেখানেও তাকে বহিষ্কারের দাবি তুলেছিলেন ব্র্যাক শিক্ষার্থীরা।’ 

এদিকে মৌমিতার ওই নিয়োগের তথ্য জানাজানি হওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে বিইউপির সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও দেখাচ্ছেন অনেকেই। পাশাপাশি জুলাই শহীদের স্মৃতির প্রতি অসম্মান হিসেবে দেখছেন তারা। ফলে এ নিয়োগ বাতিলে সরকারের সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

অভিযোগ উঠেছে, তিন ধাপের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় লিখিত পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন বিইউপির এক ছাত্রী। তারপরও স্নাতক-স্নাতকোত্তরের প্রথম হওয়া ওই ছাত্রীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ফলে দ্বিতীয় মৌমিতা। একইসঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষাতেও প্রথম অর্জন করেননি তিনি; এ কারণেই তারা ক্ষুব্ধ। 

বিইউপির সাবেক ও বর্তমান দুই শিক্ষার্থী জানান, তিন ধাপের এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় লিখিত পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন বিইউপি থেকে পাস করা এক ছাত্রী। মৌখিক পরীক্ষাতে তিনি ভালো করেছেন। তারপরও স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের প্রথম হওয়া ওই ছাত্রীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ফলে দ্বিতীয়। একইসঙ্গে নিয়োগ পরীক্ষাতেও প্রথম অর্জন করেননি তিনি; এ কারণেই তারা ক্ষুব্ধ। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জুলাই অভ্যুত্থানে মিরপুরে বিইউপি শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সর্বপ্রথম আন্দোলন সংগঠিত হয়; যা পরবর্তীতে গোটা মিরপুরে ছড়িয়ে পড়ে। এই অভ্যুত্থানে বিইউপির দুজন শিক্ষার্থী শহীদ হন, যার মধ্যে একজন এমবিএর শিক্ষার্থী শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ এবং আরেকজন আইন বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়ের ওমর খান। কিন্তু বর্তমানে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী অ্যালামনাইদের নিয়োগ না দিয়ে একজন সক্রিয় ছাত্রলীগ নেত্রীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় তারা ঘটনাটি শহীদের স্মৃতির প্রতি অসম্মান হিসেবে দেখছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে।

তাদের আরও অভিযোগ, জুলাই অভ্যুত্থানে বিইউপি শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশ নেওয়ায় সেখান থেকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান প্রশাসন। যার প্রতিফলন আইন বিভাগের এই নিয়োগে। তাছাড়াও এই নিয়োগে দু’জন প্রভাষক নেওয়ার কথা থাকলে নেওয়া হয়েছে একজনকে। যদিও মৌখিক পরীক্ষা পর্যন্ত তিনজনকে ডাকা হয়েছিল, যার দু’জনই বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী। 

এই বিভাগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ অনুেদের অর্ন্তভুক্ত। এ নিয়োগের বিষয়ে জানতে অনুষদের ডিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আলী তালুকদারকে একাধিকবার ফোন ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলে তিনি কোনো সাড়া দেননি। তাছাড়া আইন বিভাগের চেয়ারম্যানস লে. কর্নেল সিরাজ উদ্দিন আহমেদকেও একাধিকবার ফোন ও ক্ষুদেবার্তা পাঠানো হলে তিনি কোনো সাড়া দেননি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়োগে শুরুতে দুই বছরের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে দেওয়া হয়। নিয়োগ দেওয়ার পর সব ধরনের ভেরিফিকেশন করা হয়। নিয়োগের আগে কোনো ভেরিফিকেশন হয় না। এরমধ্যে কোনো নেতিবাচক প্রতিবেদন পাওয়া গেলে তার চাকরিচ্যুত করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence