নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন ভেঙে পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ সৌমিত্র শেখরের
- খাঁন মুহাম্মদ মামুন
- প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৪১ AM , আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৮:৪৬ PM
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখরের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধ নিয়োগের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং দেশের উচ্চশিক্ষার তদারক সংস্থা বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) উচ্চশিক্ষালয়টির নিয়োগে একাধিক অসংগতি স্ববিস্তারে জানিয়ে একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন ১৫ জন পরিবেশবিদ। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতিমালার লঙ্ঘনসহ সরকারি এ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগে কমিশনের অভিন্ন নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদোন্নয়নের নীতিমালা না মানার অভিযোগ জানানো হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসিকে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি পদে মোট ১১ শিক্ষকের এ নিয়োগে লঙ্ঘন করা হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬-এর বিভিন্ন ধারাও।
আমার জ্ঞাতসারে এ নিয়োগে কোনো আইন বা বিধিমালা ভাঙা হয়নি। আবেদন সমূহের ‘ব্যাকআপ’ রাখার জন্যই নিজের ব্যক্তিগত মেইলে আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। -অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ নিয়োগে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা ভাঙার পাশাপাশি নিয়োগ প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তার ব্যক্তিগত ই-মেইল ঠিকানায় (অ্যাকাউন্টে)। সংশ্লিষ্ট বিষয়ের বাইরে থেকে প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে এতে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বিষয়গুলোর সাথে প্রাসঙ্গিক নয়—এমন বিষয়ের শিক্ষার্থীদেরও। জাতীয় কবির নামে প্রতিষ্ঠিত এ উচ্চশিক্ষালয়ের নিয়োগে আইনের ভাঙা-গড়ার এ খেলায় নিয়োগ বোর্ড গঠন, ডিন ও বিভাগীয় প্রধান নিয়োগেও আইন-নীতিমালার ধার ধারেননি উপাচার্য।
আরও পড়ুন: মাভাবিপ্রবি: শিক্ষক নিয়োগে উপাচার্যের ‘স্বেচ্ছাচারিতায়’ বাদ পড়েছেন যোগ্যরা
নাম-পরিচয় অপ্রকাশিত রাখার শর্তে সম্প্রতি আবেদন করা এক নিয়োগ প্রার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যারের পার্সোনাল মেইলেও আবেদনের সফট-কপি পাঠাতে হয়েছে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো উপাচার্য কিংবা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়েও এ ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়নি। এটার ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়াটি প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, তাতে কোনো প্রশ্নের অবকাশ নেই। একই সাথে তিনি প্রতিবেদককে উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বরাবর পাঠানো মেইলটি খুলে দেখিয়েছেন।
২০১৯ সালে দেশের সরকারি উচ্চশিক্ষালয়সমূহের শিক্ষকদের নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদোন্নয়নের জন্য একটি অভিন্ন নীতিমালা করে ইউজিসি। কমিশনের ‘অভিন্ন নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদোন্নয়নের নীতিমালা’ অনুযায়ী, এসএসসি বা সমমান এবং এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ এর মধ্যে ন্যূনতম জিপিএ ৪.৫ থাকতে হবে। এ নিয়মের লঙ্ঘন করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে জিপিএ-৪ হলেই আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে প্রার্থীদের। ফলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় ভাল ফলাফলের বাইরে বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেও অনেক প্রার্থী আবেদন করা থেকে বঞ্চিত হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পদে ২টি এবং সহযোগী অধ্যাপক পদে ২টি করে মোট চারটি বিভাগে নিয়ম ভেঙে এমন কম জিপিএর প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। যেখানে বিজ্ঞানের বিষয়সমূহে এমন কোনো ছাড়ের সুযোগ নেই কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী।
আরও পড়ুন: জোবেদার ‘ডাক না পাওয়া নিয়োগে’ শিক্ষক হলেন ছাত্রলীগ নেতা মনিরুল
গত নভেম্বরের প্রথমদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে জমা দেওয়া ওই অভিযোগে জানানো হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগে বোর্ড গঠন এবং সিন্ডিকেটে উচ্চশিক্ষালয়টির আইন (জাককানইবি আইন-২০০৬) লঙ্ঘন করা হয়েছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর প্রথম সংবিধি ৫(২) অনুযায়ী (গ) সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিন এবং (ঘ) বিভাগীয় প্রধান ‘সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক’ নিয়োগ বোর্ডের সদস্য। কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদে ডিন নিয়োগের ক্ষেত্রে জাককানইবি আইন-২০০৬ এর ২২(৫) অনুসরণ করা হয়নি এবং এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে জাককানইবি আইন ২০০৬ এর ২৪(২-৩) অনুসরণ করা হয়নি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানানো ১৫ পরিবেশবিদের মধ্যে রয়েছেন সজিব তালুকদার, মো. হুমায়ুন কবির, তিতলি রায়, সিদ্দিকা কবির, মো. শাহজাহান কবির, মো. মনোয়ার হোসেন, মো. সাজ্জাদুল আহসান, মো. আবু তাহের, মাহমুদুর রহমান, মো. আমিনুল ইসলাম, ড. মো. মোজ্জাম্মেল হক, মো. সাইফুল ইসলাম, ড. তন্ময় তালুকদার, তপন কুমার এবং সিরাজুল হক।
আরও পড়ুন: ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হতে খরচ কোটি টাকা!
নিয়ম অনুযায়ী, ১০ বছরের অধিক বয়সের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের গুরুত্বপূর্ণ পদে চুক্তিভিত্তিক, অতিরিক্ত দায়িত্ব বা চলতি দায়িত্বের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বা প্রবিধান অনুযায়ী স্থায়ী নিয়োগ প্রদান করার বিধান ইউজিসির। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই মেয়াদে পূর্ণকালীন দায়িত্ব শেষ হওয়ার পরেও প্রক্টরের দায়িত্বে রাখা হয়েছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনকে পাশ কাটিয়ে তাকে দেওয়া হয়েছে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও।
আরও পড়ুন: নিয়োগে ‘অস্বচ্ছতা ও তুচ্ছতাচ্ছিল্যের’ অভিযোগ প্রার্থীদের, জবাব দিল প্রশাসন
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর ২২(৫) ধারা লঙ্ঘন করে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদে ৬ (ছয়) জন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে বাদ দিয়ে ৭ম ব্যক্তি অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে ডিন হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। একইসাথে আইন ভেঙে তাকে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগেরও প্রধান হিসেবে রাখা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তথ্য বলছে, বিগত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত মতে, একই বছরের ১৮ জুলাই থেকে দুই বছরের জন্য প্রক্টরের দায়িত্ব পান অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান। নির্ধারিত দুই বছর মেয়াদ শেষে ২০২০ সালের ১৮ জুলাই থেকে তাকে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রক্টরের দায়িত্ব প্রদান করা হলে সেই দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হয় ২০২২ সালে ১৭ জুলাই।
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এ নিয়োগে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা ভাঙার পাশাপাশি নিয়োগ প্রার্থীদের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তার ব্যক্তিগত ই-মেইল ঠিকানায়।
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে গত বছরের ১৮ জুলাই থেকে চলতি দায়িত্ব হিসেবে পুনরায় তাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও ইউজিসির নির্দেশনাকে অমান্য করে তাকে দায়িত্বে রাখায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকদের মধ্যে। এছাড়াও একজনকে বারবার দায়িত্বে না রেখে নতুন কাউকে সুযোগ করে দেওয়ার পক্ষেও মত দিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক।
আরও পড়ুন: ৪০ লাখ টাকায় রেজিস্ট্রার নিয়োগের অভিযোগ ইসলামি আরবির ভিসির বিরুদ্ধে
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অমান্য করেই বর্তমানে একই সাথে ডিন ও বিভাগীয় প্রধানের মতো তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রাখা হয়েছে অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের তথ্য আরও বলছে, ড.উজ্জ্বল কুমার প্রধান একই সাথে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন, প্রক্টর ও ইনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও এ শিক্ষক রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবেও।
২০০৬ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইনের প্রথম সংবিধির দফা-১৭ (২) অনুযায়ী, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সকল দায়িত্বের জন্য আর্থিক সুবিধা প্রদান করা যাইবে—এমন সকল দায়িত্বের মধ্য হইতে একসঙ্গে একাধিক দায়িত্ব কোন শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে প্রদান করা যাইবে না।’ আইনের সংবিধিতে সুস্পষ্টভাবে এটি বলা থাকলেও আইনের তোয়াক্কা না করেই ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে একই সঙ্গে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে ডিন হিসেবে নিয়োগেও রয়েছে জ্যেষ্ঠতার ক্রম না মানার অভিযোগও। গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৯তম সিন্ডিকেট সভার অনুমোদনক্রমে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন হিসেবে নিয়োগ পান প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান।
আরও পড়ুন: রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের অনিয়মের প্রতিবাদে ট্রেজারারের পদত্যাগ!
বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬ এর ২২(৫) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ভাইস চ্যান্সেলর সিন্ডিকেটের অনুমোদনক্রমে, প্রত্যেক অনুষদের জন্য উহার বিভিন্ন বিভাগের অধ্যাপকদের মধ্য হইতে, জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে, পালাক্রমে দুই বৎসর মেয়াদের জন্য ডিন নিয়োগ করিবেন’। কিন্তু এই অনুষদে জ্যেষ্ঠতার ক্রমানুসারে সপ্তম অবস্থানে আছেন অধ্যাপক ড.উজ্জ্বল কুমার প্রধান। এখানেও আইনের সম্পূর্ণ ব্যত্যয় ঘটেছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক।
এছাড়াও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট গঠনেও মানা হয়নি জাককানইবি আইন ২০০৬-এর সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা। উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর জাতীয় কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬ এর ১৭(১) লঙ্ঘন করে সিন্ডিকেট গঠন করেছেন। এতে ‘বিভাগীয় কমিশনার, ময়মনসিংহ বিভাগ-কে সিন্ডিকেট সদস্য করা হয়েছে—যা জাককানইবি আইন ২০০৬ এর ১৭(১) এর লঙ্ঘন। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে সদস্য করার ক্ষেত্রে দুইজন ডিনকে রাখা হয়েছে আইনকে পাশ কাটিয়ে।
অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান
অভিযোগে আরও জানানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর তার নিজের প্রার্থী (‘ডিজাস্টার সায়েন্স এন্ড ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্স’ বিষয়ে ডিগ্রিপ্রাপ্ত), যার এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি নেই, নিয়োগের জন্যই এতোগুলো অনিয়মের আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। নিয়োগ প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত, পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ১৪টি (চৌদ্দ) বিষয়ে ডিগ্রিধারী প্রার্থীর আবেদন চাওয়া হয়েছে যার অধিকাংশই এই বিশেষায়িত বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এছাড়াও নিজের পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে গত বছরের মাঝামাঝিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং’ বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ‘এনভায়রনমেন্ট এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ সায়েন্স’ করার চেষ্টা করেছেন বলেও জানানো হয়েছে।
জাতীয় কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে পারবেন না। সংশ্লিষ্ট কমিটি এবং দায়িত্বের ক্ষেত্রগুলোতে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সুযোগ পেয়েছিলেন কিনা—এমন প্রশ্নেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি পদে মোট ১১ শিক্ষকের এ নিয়োগে লঙ্ঘন করা হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৬-এর বিভিন্ন ধারাও। -শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসিতে অভিযোগ
জানতে চাইলে সব অভিযোগ নাকচ করেছেন জাতীয় কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেছেন, ‘‘আমার জ্ঞাতসারে এ নিয়োগে কোনো আইন বা বিধিমালা ভাঙা হয়নি।’’ আবেদন সমূহের ‘ব্যাকআপ’ রাখার জন্যই নিজের ব্যক্তিগত মেইলে আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানকে নিয়ম মেনে রাখা হয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এ নিয়োগ স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও ছিলেন। অতএব এখানে এ রকম কোনো সুযোগ নেই—যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা আমার পূর্ব পরিচিতও নন।