চিকিৎসা খাতে ফি দিয়েও সেবাবঞ্চিত বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা
- বিএম কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৫:২৯ PM , আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ০৬:১১ PM
বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের একমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্র তিনবছর ধরে বন্ধ রেখেছে কলেজ প্রশাসন। এতে করে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কলেজটির প্রায় ৩০ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী। অথচ প্রতি সেশনে চিকিৎসা খরচ বাবদ টাকা দিয়ে আসছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা চিকিৎসা বাবদ ২৫ টাকা দিলেও বছরে ২৫ পয়সারও সেবা পাচ্ছেন না তারা । ফলে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, কলেজ প্রশাসন সচেতনভাবেই কৌশলে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্ধ করেছে।
কলেজ প্রশাসন বলছে, করোনার কারণে বন্ধ করা হলেও এরপর নতুন করে কোনো চিকিৎসককে নিযুক্ত করা হয়নি।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খরচ বাবদ প্রতি সেশনে ২৫ টাকা করে আদায় করা হয়। বর্তমান শিক্ষার্থীর আনুপাতিক হিসাবে যা বছরে প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এই অর্থ ব্যয় করে শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চিকিৎসক ও ওষুধ সরবরাহের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু করোনাকালীন লকডাউনের কথা বলে মৌখিক নির্দেশনায় চিকিৎসকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয় দুই বছর আগে। তারপর আর কাউকে নিযুক্ত করার উদ্যোগ নেয়নি কলেজ প্রশাসন।
অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওবায়দুল্লাহ বলেন, ৩ বছর ধরে চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্ধ। অথচ চিকিৎসার খরচ দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কলেজ প্রশাসন টাকা আদায় বন্ধ করেনি । এই ৩ বছরে কমপক্ষে ২১ লাখ টাকা আদায় হয়েছে। অথচ আমরা কোনোদিন ১ টাকারও সেবা পাইনি।
অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহিম বলেন, কলেজে যেকোনো সময় যে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। বেশিদিন আগের নয়, গত মাসেও আমার এক বন্ধু ক্লাস চলাকালীন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কলেজের চিকিৎসা কেন্দ্র বন্ধ থাকায় তাৎক্ষণিক আমরা চিকিৎসা সেবা নিতে পারিনি। পরবর্তীতে তাকে কলেজ থেকে অনেক দূরে শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যাই । আমাদের সুচিকিৎসার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষের চিকিৎসা কেন্দ্রটি চালু করা উচিত। আমরাতো বিনা পয়সায় চিকিৎসা চাই না, টাকা দেই। তারপরও চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন না প্রশাসন।
সর্বশেষ দায়িত্বপালনকারী চিকিৎসক ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ২০১৫ সালে খণ্ডকালীন চিকিৎসক হিসেবে আমাকে কলেজের প্রশাসন নিযুক্ত করেছিল। সপ্তাহে ৩ দিনের চুক্তি থাকলেও আমি পাঁচদিন যেতাম। তবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমাকে ডেকে কলেজ অধ্যক্ষ চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত জানান। এরপর আমি আর কলেজে যাইনি। কিন্তু কলেজ প্রশাসন প্রতারণা করে এখনও চিকিৎসা কেন্দ্রে আমার নাম সংবলিত সাইনবোর্ডটি ঝুলিয়ে রেখেছেন। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি তুলতে না পারেন।
সরকারি ব্রজমোহন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া বলেন, করোনার পরে নতুন কোনো চিকিৎসক নেওয়া হয়নি। এজন্য চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্ধ ছিল। এখন নতুন করে চিকিৎসক নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আসা করি খুব শীঘ্রই আমরা চিকিৎসক পেয়ে যাবো।