খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা টেকসই করতে গবেষণা জরুরি: খুবি উপাচার্য

খুবিতে সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন
খুবিতে সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন  © সংগৃহীত

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সয়েল ওয়াটার এন্ড এনভায়রনমেন্ট ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে কনটেম্পোরারি রিসার্চ বিষয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া শুধুমাত্র ক্লাসে পড়াশোনার মধ্যেই সীমাবাদ্ধ নয়; এর বাইরে রয়েছে গবেষণা। গবেষণার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন শিক্ষকদের কাছ থেকে শিখতে পারেন, তেমনি শিক্ষকরাও তাঁদের পিএইচডি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেক বিষয়ে ধারণা পেতে পারেন। জ্ঞান সৃজনের মূল সূতিকাঘার হলো বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে অর্জিত জ্ঞানের প্রচার হয় সেমিনার, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের মাধ্যমে। এর মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপকৃত হন। তারা গবেষণা সম্পর্কে নতুন ধারণা আহরণ করেন।

উপাচার্য বলেন, আমাদের দেশের মূল ইস্যু হলো জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তন। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে আমাদের দেশ জনসংখ্যা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের শিকার হচ্ছে। যার ফলে সমস্যা আগেও ছিলো, এখনও আছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন- খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় মানুষের অন্যতম একটি সমস্যা সুপেয় পানির অভাব। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানে সুপেয় পানি পাওয়া যাবে না, এটা স্বাভাবিক। অথচ প্রাকৃতিকভাবে যেটা নাই আমরা সেটাই খুঁজছি। জলাভূমিগুলো ভরাট করছি, চাষাবাদের জন্য ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করছি। যার ফলে আমরা নানা ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, চাষাবাদের জন্য রাসায়নিক সার ব্যবহার করার কারণে মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। ফলে আমাদের চাষাবাদের জমি আগামীতে বন্ধ্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই চ্যালেঞ্জ কিভাবে মোকাবেলা করা যাবে সে বিষয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞানীদের গবেষণা অত্যন্ত জরুরি। আজ দেশের যে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে- এর পেছনে রয়েছে রাজনীতিবিদদের দূরদর্শিতা এবং গবেষকদের সাফল্য।

উপাচার্য আরো বলেন, নতুন করে আমরা যে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছি, তা পূরণে খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণতা যাতে দীর্ঘসময় টেকসই হয়- এ বিষয়েও ভাবতে হবে। এজন্য আমাদের এখন প্রয়োজন অ্যাপ্লাইড রিসার্চ। তিনি বলেন, গবেষকরা জাতিকে ভাবান এবং প্রভাবিত করেন। আর শিক্ষকরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাদের শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করেন। গবেষণার চিন্তায় খোরাক দিতে পারেন।

তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সবসময় গবেষণায় আগ্রহী। যার ফলশ্রুতিতে এডি সায়েন্টিফিক জার্নালে গবেষক হিসেবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২১ জন শিক্ষকের নাম স্থান পেয়েছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে এখানকার শিক্ষার্থীরাও যে আলাদা তার প্রমাণ ইতোমধ্যে তারা দেখিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশের সংখ্যা বৃদ্ধির হার দেখলেই এ বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে।

আরো পড়ুন: র‍্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্য এ ধরনের একটি সময়োপযোগী সেমিনার আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের প্রধানসহ শিক্ষকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং এ সেমিনার থেকে শিক্ষার্থীরা গবেষণার নতুন নতুন ধারণা খুঁজে পাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। একই সঙ্গে সেমিনারের টেকনিক্যাল সেশন উপস্থাপনকারী ৪ জন পিএইচডি গবেষককেও তিনি ধন্যবাদ জানান।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল কালাম আজাদ, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক খান গোলাম কুদ্দুস। সভাপতিত্ব করেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান অধ্যাপক মো. সানাউল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক মো. সাদিকুল আমিন। সঞ্চালনা করেন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী বহ্নিশিখা চৌধুরী ও মো. আসিফ জামান। সেমিনারে জীববিজ্ঞান স্কুলভুক্ত বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের প্রধান, সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারের টেকনিক্যাল সেশনে পিএইচডি গবেষণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক অধ্যাপক ড. শেখ মোতাসিম বিল্লাহ, অধ্যাপক ড. জগদীশ চন্দ্র জোয়ারদার, অধ্যাপক ড. মো. হানিফ ও সহযোগী অধ্যাপক ড. মিল্টন হালদার। উপাচার্য এ চার পিএইচডি গবেষকের হাতে ডিসিপ্লিনের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন। অনুষ্ঠানে আন্তঃডিসিপ্লিন ভলিবল প্রতিযোগিতায় রানার্সআপ হওয়া শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন ক্রীড়া ইভেন্টে পুরস্কার বিজয়ী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence