বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ঈদে ঘরে ফেরার আনন্দ 

টিকেটের ভোগান্তি, রাস্তায় যানজট কোন কিছুই বাড়ি ফেরার আনন্দকে দমিয়ে রাখতে পারে না
টিকেটের ভোগান্তি, রাস্তায় যানজট কোন কিছুই বাড়ি ফেরার আনন্দকে দমিয়ে রাখতে পারে না  © সংগৃহীত

ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানেই উচ্ছ্বাস। এই আনন্দ বহুগুণে বেড়ে যায় যখন দীর্ঘদিন পর স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়ি ফিরেন। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কাছে ঈদে ঘরে আনন্দটা ভিন্ন মাত্রার। দীর্ঘদিন পর মায়ের কোলে ফেরার সুযোগে উচ্ছ্বসিত হন তারা। এ যেন ঈদের আগে আরেক ঈদ।

আকাশচুম্বী স্বপ্ন নিয়ে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসেন শিক্ষার্থীরা। ক্লাস-পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন আরও কত রকমের একাডেমিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয় তাদের। হৃদয়ে লালন করা হাজারো স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই শিক্ষার্থীদের এই বিরামহীন ছুটে চলা।

পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে ছুটিতে বাড়ি ফেরেন টিকেটের ভোগান্তি, রাস্তায় যানজট প্রভৃতি মেনে নিয়ে। তবে কোন কিছুই তাদের বাড়ি ফেরার আনন্দকে দমিয়ে রাখতে পারে না। ঈদের ছুটিতে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো বন্ধ থাকে। তাই বাড়িমুখো হন এসব শিক্ষার্থীরা। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালরে রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো: জাবের বলেন, আমার বাড়ি দিনাজপুর। পরিবারের সবাই সেখানে থাকে। প্রায় ৫ মাস পর বাড়ি যাচ্ছি। সুন্দর একটা অনুভূতি হচ্ছে। তবে এই ক্যাম্পাস-বন্ধুদের খুব মিস করব। সবাই মিলে একসঙ্গে রোজা রেখেছি, মাঠে বসে ইফতার করেছি। কিন্তু ঈদে একসাথে নামাজ পড়া হবে না। তবুও পরিবারের কথা ভেবে ভাল লাগছে।  

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহিম রহমান বলেন, অনেকদিন পর বাড়ি যাচ্ছি। বড় ছুটি না পাওয়ায় এতদিন যেতে পারছিলাম না। পরিবারকে ভীষণ মিস করি। বাড়ি ফিরে খুব ভালো লাগছে। আসলে এবারের ঈদটা আমার কাছে অন্য ঈদ থেকে আলাদা এবং স্পেশাল। কারণ এভাবে আর কোনদিন এত দিন বাড়ির বাহিরে থাকা হয় নাই। আর অনেক দিন পর বাড়িতে এসে সবার সাথে ঈদ করতে পারবো, এই ব্যাপারটা অনেক ভালো লাগছে।

রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী নিশাত রহমানের বাড়ি বরিশাল। তিনি বলেন, পরিবার ছাড়া থাকা খুব কষ্টের। কিন্তু পড়ালেখার জন্য তবুও থাকতে হয়। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় আমার দ্বিতীয় বাড়ি। তাই একটু খারাপও লাগছে। আমার এমনই মনে হয়, ক্যাম্পাসে বাড়ি মিস করি আবার বাড়িতে ক্যাম্পাস! কেন যে দুইটা একই জায়গায় হল না! এখন ক্যাম্পাস ছেড়ে বাড়ি যেতে যেমন খারাপ লাগছে, তেমনি আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসার সময়ও পরিবারের জন্য খারাপ লাগবে। 

একদিকে শিক্ষার্থীরা যখন নাড়ির টানে ব্যাগ হাতে বাড়ির উদ্দেশ্যে ছুটছে, তেমনি ক্যাম্পাসের চেহারা ধীরে ধীরে মলিন হয়ে পড়ছে। যেন মনে হয় চিরচেনা উল্লাস-প্রতিবাদী চেহারার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির এখন মন খারাপ। যেন প্রতিটি দেয়াল মনে করছে, আবার কবে আমার ওপর চরে বসে চা হাতে জ্ঞান চর্চা করবে। আবার কবে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে হইহুল্লোরে মেতে উঠবে। 

তবে যাই হোক না কেন, সবাইকেই ছুটতে হয়। সবাইকেই মায়া ত্যাগ করতে হয়। মায়ের মায়া ত্যাগ করে মাটির মায়ায় এই সোনালী নক্ষত্রগুলো এই মায়া ত্যাগ করা শিক্ষার্থীগুলো একদিনে নিজেদের সুউচ্চ আকাশে মেলে ধরবে।

বাড়ি ফেরার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী তৌফিক তন্ময় বলেন, দীর্ঘ ৪ মাস পর বাড়ি যাচ্ছি; ব্যস্ততা ঠেলে শান্ত-নিবিড় সেই গ্রামীণ নীড়ে ফিরে যাওয়ার অনুভূতি যেন কখনো পুরনো হয় না। প্রতিবার ফিরে যাওয়ার সময় নতুন নতুন উত্তেজনা কাজ করে। মগজ ভর্তি পরিচিত মানুষদের জন্য নানান পরিকল্পনা আর বুক ভর্তি প্রশান্তি নিয়ে যন্ত্রের এই শহর ছেড়ে পালাতে কে না চায়! ব্যস্ত শহর আর এই ব্যস্ত ক্যাম্পাসের ক্লাস-এক্সাম শেষ করে বাড়ি যাওয়ার এই আনন্দ যেন ছোটবেলার ঈদ আনন্দের মতো এখনো রঙিন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence