বেরোবিতে পরিবহন সমস্যা, বিপরীতে পরিত্যক্ত দুটি বাস

পরিত্যক্ত দুটি বাস
পরিত্যক্ত দুটি বাস   © টিডিসি ফটো

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও বাড়ছে না নতুন বাস। বরং প্রায় আড়াই বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় দু’টি বাস ক্যাম্পাসে পরে রয়েছে। মোট শিক্ষার্থীর তুলনায় বাসের সংখ্যা একেবারেই কম। ফলে শিক্ষার্থীদের বাদুড়ঝোলা অবস্থায় যাতায়াত করতে হয়।

পরিবহন অফিস সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে মোট অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী সংখ্যা দশ হাজারেরও বেশি। এত শিক্ষার্থীর বিপরীতে বাস রয়েছে মাত্র ১১টি, যা মোট শিক্ষার্থীর তুলনায় অপ্রতুল। এর মাঝে আবার দু’টি বাস পরিত্যক্ত অবস্থায় ক্যাম্পাসে পরে রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে এতগুলো শিক্ষার্থীর জন্য শুধু ৩টি হল থাকায় শিক্ষার্থীদের শহরকেন্দ্রিক বিভিন্ন জায়গায় তাদের মেস ভাড়া করে থাকতে হয়। মেস থেকে তারা ক্লাস করতে যাওয়ার পথে পরিবহনে অনেক সময় জায়গা থাকে না। এছাড়া ক্যাম্পাস থেকে স্বল্প দূরত্বে যেসব শিক্ষার্থী বসবাস করে তাদেরকে প্রধানত গণপরিবহন এবং অটো-সার্ভিসের ওপর নির্ভর করতে হয়। 

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জিহাদ ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস বরাবরই আমাদের শিক্ষার্থীদের আবেগের জায়গা। শিক্ষার্থীদের পরিবহন ফি বাবদ প্রতি সেমিস্টারে একটা বিশাল অংকের টাকা প্রশাসন নেয়। কিন্তু আমাদের বাসের সংকট কমানোর কোন ব্যবস্থা নাই। আমরা শিক্ষার্থীরা যারা টিউশন করাই তাদের প্রায় সময়ই বাসের মধ্যে গদাগদি করে যেতে হয়। বিশেষত শহরের জাহাজ কোম্পানির রুটের বাস। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমাদের জোড় দাবি অতি দ্রুত আমাদের বাসের সংকট নিরসন করা হোক। এতে শিক্ষার্থীদের  শারীরিক মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাবে ।

ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সাদিকুর রহমান জানান, আবাসিক হল সংকটের কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার জন্য পরিবহনের ওপরই নির্ভর করতে হয় কিন্তু সে তুলনায় গাড়ির সংখ্যা নগণ্য। এর মধ্যে আবার ২নং ও ৪নং বাস ভঙ্গুর অবস্থা পরে রয়েছে প্রায় আড়াই বছর ধরে। পরিত্যক্ত বাস দুটি রিপেয়ারিং করলে ও বাস সংখ্যা বাড়ালে এ সংকট থেকে রেহায় পাওয়া যাবে।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. আনিসুর রহমান জানান, করোনার আগে থেকে প্রায় দেড় বছর ধরে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এর দু’টি বাস পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীদের প্রায় সময়ই বাসে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে যেতে দেখা যায়। বাসে সংরক্ষিত কোন মহিলা আসন তো নেই-ই, বরং ছেলেমেয়ে উভয়কেই একসঙ্গে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে যেতে দেখা যায়, যা এখন নিত্যদিনের চিত্র। ছেলেদের কাছে দাঁড়িয়ে যাতায়াত করাটা মোটামুটি স্বাভাবিক মনে হলেও অধিকাংশ মেয়েদের কাছে বিষয়টি বিব্রতকর ও অপ্রীতিজনক। তাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কাছে আমাদের পরিত্যক্ত বাসগুলোকে দ্রুত মেরামত করে আবার চালু করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন : পায়ে হেঁটে পরিভ্রমণ করবেন ৬৫০ কি.মি. পথ

পরিবহন পুলের উপ-রেজিস্টার মো. তারিকুল ইসলাম জানান, সাবেক উপাচার্য কলিমউল্লাহ’র সময় বাস দু’টোর ইঞ্জিন নষ্ট হয়। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় তহবিল থেকে কোন বাজেট না পাওয়ায় প্রায় আড়াই বছর ধরে বাস দুটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে রয়েছে। 

এ ব্যাপারে পরিবহন পুলের পরিচালক বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, বাসগুলো হল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ এবং রাষ্ট্রের সম্পদ। বাস দুটি রিপেয়ারিং করার জন্য উদ্যোগ নেয়ার চেষ্টা করতেছি। কী কী নষ্ট হয়েছে এবং কত টাকা খরচ হতে পারে এটার একটা রিপোর্ট তৈরি করে উপাচার্যকে দেয়া হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় তহবিল থেকে রিপেয়ারিং খরচ পেলে কাজ শুরু করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ