‘হামলার সময়’ আটক ১৭ ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীকে ছেড়ে দিয়েছে সিটির শিক্ষার্থীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১২ PM , আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:১২ PM
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের হামলায় সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছে সিটি ইউনিভার্সিটি। হামলাকারী ড্যাফোডিলের আটক ১৭ শিক্ষার্থীকে দুই দফায় ছেড়ে দিয়েছে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় ৬ জন শিক্ষার্থীকে এবং অপর এগারো জনকে বেলা ৩টায় ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষক প্রতিনিধিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ছেড়ে দেওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ২০১ ব্যাচের মেহেদী, বিবিএ ২৫২ ব্যাচের আফ্রিদি, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ২৫৩ ব্যাচের সিয়াম ও আলামিন, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ২৪১ ব্যাচের রনি, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২৪১ ব্যাচের জিয়া ও আহনাফ, একই বিভাগের ২৫১ ব্যাচের শৌনক রায়, কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ২৫১ ব্যাচের জিম এবং মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি বিভাগ ২৪২ ব্যাচের রাফিউল ইসলাম প্রমুখ। বাকি ৭ জন শিক্ষার্থীর নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: ৪ মাসের ব্যবধানে ‘ভুয়া সনদ’ সঠিক এনটিআরসিএ’র তদন্তে, মামলা না করে এমপিও ফেরতের সুপারিশ
এর আগে একইদিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে করেন উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান। তিনি জানিয়েছিলেন, বর্তমানে ড্যাফোডিলের ১১ শিক্ষার্থীকে সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আটক করে রেখেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য সরেজমিনে এসে ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করবেন। পরে তার কাছেই এই ১১ জনকে হস্তান্তর করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘সিটি ইউনিভার্সিটিতে হামলা চালাতে আসা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির পাঁচ-ছয়জন শিক্ষার্থীকে আমাদের শিক্ষার্থীরা আটক করেছিল। তারা অসুস্থ হয়ে পড়ায় পরে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে আরও ১১ জন শিক্ষার্থীকে আমাদের শিক্ষার্থীরা আটক করে রেখেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য আরও জানান, রবিবার রাতে থুতু ফেলার একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। রাত ১০টার দিকে বিষয়টি মীমাংসা হলেও এর কিছুক্ষণ পর থেকেই রাতভর; রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত ড্যাফোডিলের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নভেম্বরে
উপাচার্য বলেন, ‘হামলাকারীরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও সীমানা প্রাচীর ভেঙে ফেলে, অন্তত ১৩টি গাড়ি পুড়িয়ে দেয়। পরিকল্পিতভাবে প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশ করে ভিসি, প্রোভিসি ও রেজিস্ট্রারের কক্ষসহ অফিস কক্ষগুলোর কম্পিউটার ভাঙচুর করে এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র লুট করে নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাত সাড়ে ৪টার দিকে ক্যাম্পাসে এসে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। ভাবতেই পারিনি, শিক্ষার্থীদের হাতে এমন ধ্বংসযজ্ঞ ঘটতে পারে। পরে ড্যাফোডিলের উপাচার্যকে বিষয়টি জানিয়ে প্রতিনিধি পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও তারা কোনো সহযোগিতা করেনি। হামলায় আমাদের ২৫ থেকে ২৬ জন শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, আরও শতাধিক আহত হয়েছেন। যারা ধরা পড়েছে, তারা হামলার সময় ভাঙচুরে লিপ্ত ছিল। তাদের আচরণ মোটেও শিক্ষার্থীসুলভ ছিল না। শিক্ষার্থী হলে কি তারা ল্যাপটপ, কম্পিউটার, এসি চুরি করতে পারে?’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘আমরা চাই ড্যাফোডিল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে। তবে তা সম্ভব না হলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। হামলায় আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ইতোমধ্যে ইউজিসির একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আজকের সব ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সিন্ডিকেট সভা শেষে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।