প্রাথমিকের ‘টিচার্স গাইড’ বই ছাপাতে চায় এনসিটিবি, অপেক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার
- রায়হান উদ্দিন
- প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৩ PM , আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৪৪ PM
শিক্ষকদের পাঠদান সহজ করতে নতুন শিক্ষাবর্ষে (২০২৫০২৬) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিচার্স গাইড (টিজি) ছাপানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত জানালে হার্ড কপি করা হবে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য টিচার্স গাইড (পিডিএফ) অনলাইনে প্রকাশ করা হলেও কোনো হার্ড কপি দেওয়া হয়নি শিক্ষকদের। হার্ড কপি ব্যবহারে শিক্ষকরা অনিহার কারণেই এনসিটিবি গত দুই বছর ছাপায়নি।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার টিচার্স গাইড ছাপায় এনসিটিবি। মাঠ পর্যায়ের জরিপে শিক্ষকদের হার্ড কপি ব্যবহারে অনিহা থাকায় ছাপানো থেকে সরে আসে কর্তৃপক্ষ। তবে নতুন শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিকের শিক্ষকদের জন্য বই ছাপানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিটিবি।
তবে নতুন বছরে টিচার্স গাইড ছাপাতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সিদ্ধান্ত জানালেই শিক্ষকদের হার্ড কপি ছাপাবে এনসিটিবি।
জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (DPE) তথ্য মতে, দেশে প্রায় ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষক রয়েছেন প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৯৮১ জন।
প্রাথমিকের কোমলমতি শিক্ষার্থীদেরকে সহজে পাঠদান করাতে প্রতিবছরই এনসিটিবি কর্তৃক একটি নির্দেশিকা গাইড বই ছাপানো হয়। যা যা শিক্ষকদের পাঠদান সহজ করতে সাহায্য করে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ গাইড লাইন অনুসরণ করে না বা পড়েন না বলেই গত দুই বছর হার্ড কপি করেনি এনসিটিবি। তবে শিক্ষক সহায়িকা বইয়ের পিডিএফ এনসিটিবির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগের বছরগুলোতে হার্ড কপি ছাপালেও শিক্ষকগণ এসব বই ব্যবহার করেননি বলে মাঠ পর্যায়ের জরিপে উঠে এসেছে।
এদিকে নতুন শিক্ষাবর্ষে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা সাড়ে আট কোটি নতুন বই হাতে পাবে। ইতিমধ্যে প্রায় ৯৭ শতাংশের কাজ শেষ হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই বাকিগুলোর কাজও শেষ হবে বলে এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে। জানুয়ারির শুরুতেই প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা নতুন বই পেলেও শিক্ষকরা কোনো ধরনের টিচার্স গাইড বই পাচ্ছেন না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এনসিটিবির উৎপাদন নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবু নাসের টুকু তিনি আজ রবিবার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘প্রাথমিকের ৯৬ শতাংশ নতুন বই থানা পর্যায়ে চলে গেছে। সেখানে থেকে বিদ্যালয়ে চলে যাবে। শিক্ষার্থীরা নতুন বছরের শুরুতেই বই হাতে পাচ্ছে।’
এনসিটিবির প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফাতিহুল কাদীর দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রতিবছর টিচার্স গাইড ছাপানোর পাশাপাশি অনলাইনেও প্রকাশ করা হয়। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখা যায়, হার্ড কপিগুলো শিক্ষকগণ খুলেও দেখেন না। অর্থ্যাৎ তারা তা ব্যবহার করেন না। তাই গত দুবছর হার্ড কপি ছাপানো হয়নি। তবে নতুন বছরে যেহেতু আলাপ-আলোচনায় আসছে, তাই ছাপানোর জন্য একটা আলাপ হয়েছে। সংলিষ্ট দপ্তর বা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসলেই হার্ড কপি করা হবে।
আর্থিক কোনো সংকট আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আর্থিক কোনো ঘাটতি নেই। আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত আছে, মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত দিলেই টিচার্স গাইড ছাপানো হবে।