আমাদের সকলের প্রত্যাশা সুখি সম্মৃদ্ধ শান্তির বাংলাদেশ : তারেক রহমান

রাজধানীর ৩০০ ফিটে গণসংবর্ধনায় বক্তব্য দিচ্ছেন তারেক রহমান
রাজধানীর ৩০০ ফিটে গণসংবর্ধনায় বক্তব্য দিচ্ছেন তারেক রহমান  © ভিডিও থেকে নেওয়া

বাংলাদেশের মানুষ কথা বলার অধিকার, হারানো গণতন্ত্র ও অধিকার ফিরে পেতে চায়। এদেশে যেমন সমতলের মানুষ আছে, তেমনি পাহাড়ি মানুষও আছে। আছে বিভিন্ন ধর্ম ও বিশ্বাসের মানুষ। আমাদের সবার প্রত্যাশা এক। আমরা সবাই চাই, এদেশে আমাদের সকলের অধিকার এক হোক। কারও কমবেশি যেন না হয়। আমাদের প্রত্যাশা মায়েদের মতো। অর্থাৎ মা যেমন চায় তার সন্তান সুস্থ স্বাভাবিকভাবে ফিরে আসুক ঘরে, তার কাছে। তেমনি আমাদের (বিএনপি) প্রত্যাশা সকলের অধিকার নিশ্চিত করে একটি সুখি সম্মৃদ্ধ শান্তির বাংলাদেশ হোক। এটাই আমাদের সকলের প্রত্যাশা। ইনশাল্লাহ এটা আমরা নিশ্চিত করব।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে তারেক রহমান মঞ্চে ওঠেন। বেলা ৩টা ৫৭ মিনিটে তিনি বক্তব্য শুরু করেন। শুরুতেই বলেন, ‘প্রিয় বাংলাদেশ।’ তাঁর সঙ্গে বিএনপির নেতারা রয়েছেন। মঞ্চে উঠে নেতা–কর্মীদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়েন তারেক রহমান। মঞ্চে তারেক রহমানকে স্বাগত জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঞ্চে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ছাড়াও কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্যের শুরুতে প্রিয় বাংলাদেশ সম্বোধন করে সবাইকে সালাম জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমতে আমি দীর্ঘদিন পর আবার দেশের মাটিতে, মাতৃভূমিতে ফিরে আসতে পেরেছি। আলহামদুলিল্লাহ।

আরও পড়ুন : ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’

তারেক রহমান আরও বলেন, আমাদের সময় এসেছে সকলে মিলে দেশ গড়ার। এ দেশে পাহাড়ের, সমতলের, মুসলমান, হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই আছে। আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। যে বাংলাদেশে একজন নারী, পুরুষ, শিশু যেই হোক না কেন নিরাপদে ঘর থেকে বের হলে, যেন নিরাপদে ফিরতে পারে।

তিনি বলেন, মাত্র কয়েকদিন আগে আমাদের একজন ভাই আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াকু সৈনিক ওসমান হাদি শহীদ হয়েছেন। তাকে খুন করা হয়েছে। মেরে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, ওসমান হাদি চেয়েছিলেন এদেশের মানুষ অর্থনৈতিক অধিকার ফিরে পাক। আমি বিশ্বাস করি, আমার সামনে এই যে লাখ লাখ তরুণ যুবক আছে, তারা ওসমান হাদির অসমাপ্ত লড়াই চালিয়ে যাবে। তারা দেশকে নিরাপদ করবে। তারা এদেশকে কখনও কোনো আধিপত্যবাদী শক্তির দাসে পরিণত করতে দেবে না। এদেশকে তারা নিরাপদ করবে। আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ চাই। আমরা শান্তি চাই। আমরা শান্তি চাই। আমরা শান্তি চাই। বাংলাদেশকে আমরা কখনও কারও অধিনস্ত হতে দেব না। আমরা গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করব, ইনশাল্লাহ। সেজন্য আমার আপনাদের সকলের, দেশবাসীর সহায়তা চাই। পাশে চাই। তবেই আমরা সফল হতে পারব।

সন্তান হিসেবে আমার মন আমার মায়ের বিছানার পাশে পরে আছে। যে মা সম্পর্কে আপনারা ভালো করে জানেন। যিনি তার সারাটা জীবন এদেশ, এদেশের জনগণ ও এদেশের গণতন্ত্রের জন্য উৎসর্গ করেছেন। তার সারাটা জীবন কতটা কষ্ট  ও নির্যাতন সহ্য করেছেন। কিন্তু তিনি কখনও এতটুকু আপোষ করেন নাই। আজ জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণেও তিনি জনগণের কল্যাণের কথা ভেবে চলেছেন। সন্তান হিসেবে আমার প্রথমেই সেখানে যাওয়ার কথা। কিন্তু আমি আপনাদের ভালোবাসা ছেড়ে, কৃতজ্ঞতা না জানিয়ে প্রথমেই মায়ের কাছে যেতে পারি না। তাই আমি প্রথমে আপনাদের কাছে ছুটে এসেছি, আপনাদের ভালোবাসার কৃতজ্ঞতা জানাতে। আমি আপনাদের কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি আপনাদের কাছে আমার মায়ের জন্য দোয়া চাই।

আরও পড়ুন : গাবতলী বিএনপির সদস্য থেকে শীর্ষ নেতৃত্বে তারেক রহমান

তিনি বলেন, আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি ১৯৭১ সালে অনেক রক্তের বিনিময়ে অনেক জীবনের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল। ঠিক একই ভাবে ১৯৭৫ সালে আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এদেশের মানুষ রুখে দাড়িয়েছিল। ৯০-এ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছিল। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা বসে নাই। তারা কখনও বসে থাকে না। দেশকে তারা ফ্যাসিবাদী শাসনের অধিনে নিয়ে গিয়েছিল। মাত্র কিছুদিন আগে চব্বিশের জুলাই এদেশের তরুণ, যুবক, ছাত্র-জনতা বুকের রক্ত দিয়ে আবার সেই ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছে। সেই ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ছিল এদেশের দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণী পেশার মানুষ। সব বয়সের মানুষ। নারী-পুরুষ,আবাল-বৃদ্ধ বনিতা সকলে। এই বিজয়ে দাবিদার ও কৃতিত্ব সকলের। কোনো একক ব্যক্তি বা কোনো একক দলের নয়। ৭১ এ যারা শহীদ হয়েছে, ২৪ এ যারা শহীদ হয়েছে তাদের রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে প্রত্যাশিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

তারেক বলেন, তরুণ প্রজন্মই আগামীতে দেশ গড়ে তুলবে। গণতান্ত্রিক, শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দেশকে গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেশের শান্তি চাই, আমরা দেশের শান্তি চাই, আমরা দেশের শান্তি চাই। মার্টিন লুথারের আই হ্যাভ অ্যা ড্রিমের উক্তি উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান। 

দেশকে গড়ে তুলতে পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তারেক বলেন, প্রত্যেক মানুষের সহযোগিতা আমার প্রয়োজন। তাহলে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। বক্তব্যের শেষে সকলের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করে তারেক রহমান ‘সবাই মিলে করব কাজ, গড়বো মোদের বাংলাদেশ’ শ্লোগান দিয়ে বক্তব্য শেষে করেন।


সর্বশেষ সংবাদ

X
APPLY
NOW!