‘মব সহিংসতা গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলছে’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:১৩ PM
দেশের বিভিন্ন স্থানে উচ্ছৃঙ্খল জনতা মব তৈরি করে হামলা চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ করছে—এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে গণতন্ত্রবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ সোমবার (২২ ডিসেম্বর) জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা উপলক্ষ্যে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, বিভিন্ন ইস্যুকে সামনে রেখে সারাদেশে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশে গণতন্ত্র কখনোই শক্তিশালী হবে না।
তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। জনগণ এখন ভোট দেওয়ার জন্য মুখিয়ে আছে। কিন্তু সেই সম্ভাবনাকে নষ্ট করার জন্য একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে। এ ধরনের অপচেষ্টাকে কোনোভাবেই সুযোগ না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন : এবার নিজ দল বিলুপ্ত করে ধানের শীষের প্রার্থী হলেন জাতীয়দলের হুদা
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন বিদেশের সঙ্গে অসম চুক্তিতে চড়া মূল্যে বিদ্যুৎ কিনে জনগণের অর্থের অপচয় করেছে। জনগণের কষ্টার্জিত টাকাকে নিজের মনে করে লুটপাটের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বের প্রশংসা করে রিজভী বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে ইশরাক এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই প্রজন্মের নেতাকর্মীরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এ সময় ঢাকা-৬ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, বিগত ৫৪ বছরেও আমরা এমনটি দেখি নাই—যেভাবে আজ প্রকাশ্যে মুক্তিযুদ্ধকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। শুধু ১৯৭১ সালে একটি দলের ভূমিকা আড়াল করার জন্য এ ধরনের অপপ্রচার অত্যন্ত নিন্দনীয়।
ইশরাক হোসেন বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর এক থাকার কথা ছিল। কিন্তু আমরা আজ সত্যিই এক থাকতে পারছি কিনা, সেটা আমাদের ভাবতে হবে। এর ফলেই হাদির মতো দেশপ্রেমিকদের ওপর নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে এবং অপরাধীরা পালিয়ে যেতে পারছে।
আরও পড়ুন : অসহায় শিক্ষার্থী বাইজিদ হোসেনের পাশে তারেক রহমান
তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি একদিকে গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা, আবার অন্যদিকে প্রশ্নবিদ্ধভাবে তাদের ‘সফলতা’ হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
ইশরাক হোসেন অভিযোগ করেন, আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, হাসিনার দোসরদের নিয়ে বর্তমান সরকার চলছে। প্রশাসনিক সংস্কার ও একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে সংস্কার দরকার ছিল, তা তারা করেনি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না বরং দেশের জন্য কাজ করাই তাদের মূল লক্ষ্য। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় প্রধান অতিথি রুহুল কবির রিজভী তার জীবন্ত উদাহরণ।
ইশরাক হোসেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সবার কাছে দোয়া চান। পাশাপাশি তিনি জানান, আগামী ২৫ তারিখ তাদের নেতা আসবেন, যেখানে সারা বাংলাদেশ থেকে নেতাকর্মীরা কোনও বাধা ছাড়াই অংশ নিতে পারবেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কে এম কামরুজ্জামান নান্নু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ড. কে এম আই মন্টি, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সোহেল রানা, মো. জাকির হোসেন, এ বি এম হেলাল উদ্দিনসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতারা।