‘পানির দামে ফ্ল্যাট আওয়ামী আমলা-বিচারকদের’, খালেদা জিয়ার চিকিৎসাসহ পত্রিকায় গুরুত্ব পেয়েছে যেসব খবর

আওয়ামী আমলা-বিচারকরা
আওয়ামী আমলা-বিচারকরা  © টিডিসি সম্পাদিত

দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই নতুন নতুন ঘটনা ঘটছে। আজকের আলোচনায় থাকা এমন কিছু ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ এখানে একসঙ্গে উপস্থাপন করা হলো।

দেশের দৈনিক পত্রিকা— প্রথম আলো, সমকাল, যুগান্তর, আজকের পত্রিকা, আমার দেশ, ইত্তেফাকসহ কয়েকটি পত্রিকার আলোচিত শিরোনাম ছিল, ‘বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার খবর’

প্রথম আলোর আজকের প্রধান শিরোনাম—‘নির্বাচনকেন্দ্রিক কাজে ফিরতে চায় বিএনপি’

বিএনপি প্রথম দফায় ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণার পর খালেদা জিয়ার গুরুতর অসুস্থতার মধ্যেও দ্বিতীয় দফায় আরও ৩৬টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। খালেদা জিয়া ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ১৩ দিন ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকায় দলের নেতাকর্মীরা মানসিক চাপে পড়েন এবং মাঠপর্যায়ের নির্বাচনী প্রচার কিছুটা থেমে যায়। তবুও বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানাচ্ছেন নির্বাচনী কার্যক্রম চালু রাখতে হবে, নির্বাচনেও অংশ নেবে দল।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় সীমিত পরিসরে জনসংযোগ করছেন এবং খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চেয়ে ভোট চাইছেন। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমকে শ্লথ করলেও বিএনপি জানাচ্ছে—এই সংকটেও নির্বাচনের প্রস্তুতি থামেনি। দুই ধাপে দলটি এখন পর্যন্ত ২৭২টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে, বাকি ২৮টি আসনে শিগগির প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।

অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্বে আট দল সারা দেশে বিভাগীয় সমাবেশ জোরদার করেছে। বিএনপির ভেতরে কিছু আসন নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলেও দলটি মনে করছে প্রার্থী ঘোষণাই মাঠে ফেরার বার্তা।

বিএনপি নেতাদের বক্তব্য অনুযায়ী, তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সরে যেতে চান না; নির্বাচন দ্রুত ঘোষণা হোক এটাই প্রত্যাশা। খালেদা জিয়ার অসুস্থতা জনমানসে যে আবেগ তৈরি করেছে, সেটিকে সংগঠিত শক্তিতে রূপ দিতেই দল আবার প্রচারণায় ফিরতে চায়।

আমার দেশের আজকের প্রধান শিরোনাম—‘পানির দামে ফ্ল্যাট আওয়ামী আমলা-বিচারকদের’

জুলাই বিপ্লবে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিচারপতি, আমলা ও রাজনৈতিক মহলের গুরুত্বপূর্ণ ৪৮ ভিআইপিকে বাগে আনতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে গুলশানের রূপসা প্রকল্পে অত্যন্ত কম দামে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট দেন। 

প্রায় ৩১০০ বর্গফুটের এই ফ্ল্যাটগুলো পানির দামে বরাদ্দ দেওয়া হয় তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীন, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্টের বিচারপতি, সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আমিনুল ইসলাম খান, রাজউক চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান মিঞা এবং সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদসহ ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের।

দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের সাম্প্রতিক অভিযানে এসব বরাদ্দে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে। দুদক কর্মকর্তাদের মতে, শেখ হাসিনার অবৈধ কর্মকাণ্ডে যারা সহায়তা করেছিলেন এবং নির্বাচনকে টার্গেট করে যাদের অনুগত করা প্রয়োজন ছিল—তাদেরকেই বেছে নিয়ে এসব ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: যশোর বোর্ডে শতভাগ ফেল ২০ কলেজকে শোকজ, বাতিল হতে পারে স্বীকৃতি

দৈনিক ইত্তেফাক আজকের প্রধান শিরোনাম— ‘৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণের পর খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেওয়ার সিদ্ধান্ত’

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া টানা ৯ দিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে জীবনঝুঁকিতে চিকিৎসাধীন। তাকে লন্ডন ব্রিজ হাসপাতালে স্থানান্তরের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে শুক্রবার মেডিক্যাল বোর্ড এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তোলার অনুমতি দেয়নি। ওইদিন জরুরি এন্ডোস্কোপি ও একটি মাইনর অপারেশন করা হয় এবং পাকস্থলির রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়। মেডিক্যাল বোর্ড তাকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এরপর লন্ডনে নেওয়া সম্ভব হবে কি না তা নির্ধারণ করা হবে।

খালেদা জিয়াকে দেখতে শুক্রবার সকালে লন্ডন থেকে ঢাকায় আসেন তার পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা রহমান। তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছে শাশুড়িকে দেখে মেডিক্যাল বোর্ডের সঙ্গে দীর্ঘ সময় বৈঠক করেন এবং সারাদিন হাসপাতালেই অবস্থান করেন। লন্ডনে থাকা তারেক রহমান মায়ের চিকিৎসার বিষয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন।

এদিকে সারা দেশের মসজিদে জুমার নামাজ শেষে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্য দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। ডা. জুবাইদাকে বিমানবন্দরে বিএনপি নেতারা অভ্যর্থনা জানান এবং তার আগমনে এভারকেয়ার হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

নিউ এজ পত্রিকার আজকের প্রধান শিরোনাম— ‘Gas mining by local cos falls quickly’

গত পাঁচ বছরে পেট্রোবাংলার অধীন দেশীয় গ্যাস উৎপাদন প্রায় ১৫ শতাংশ কমেছে, যার মধ্যে শেষ ১৬ মাসেই কমেছে ৮ শতাংশের বেশি। সময়মতো বিনিয়োগ না হওয়া, নতুন কূপ খননে গতি কম থাকা এবং সমুদ্র এলাকায় বিদেশি কোম্পানিকে আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হওয়াকে এ পতনের কারণ হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। 

বর্তমানে স্থানীয় কোম্পানিগুলো প্রতিদিন ৭০৮ এমএমসিএফডি গ্যাস উৎপাদন করছে, যা ২০২০ সালের আগস্টে ছিল ৮৩৩.৪ এমএমসিএফডি। দেশীয় উৎপাদনের ঘাটতি পূরণে এলএনজি আমদানি দ্রুত বেড়েছে, যা এখন দ্বিতীয় বৃহত্তম গ্যাস উৎস। চাহিদা ৪,০০০ এমএমসিএফডি হলেও সরবরাহ আছে ২,৬৪৪.৭ এমএমসিএফডি। কয়েকটি নতুন কূপ খনন ও রিগ ক্রয়ের প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে বর্তমান সরকার, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে স্থানীয় উৎপাদন বাড়াতে আরও বিনিয়োগ ও নীতিগত গুরুত্ব প্রয়োজন।


সর্বশেষ সংবাদ