ভুয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বিড়ম্বনায় বিএনপি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২৪ PM
প্রায় প্রতিদিনই ‘ভুয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’ নিয়ে ভোগান্তিতে ভূগছে বিএনপি। এই ভোগান্তির শুরু হয়েছিল বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের শাসনামলে। গেল বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতন ঘটলেও এখনও ভোগান্তিতে থেকে বের হতে পারছে না দলটি। আগে বিএনপি নেতারা এ বিষয়ে আওয়ামী সরকার দলীয় লোকজন ও সরকারের আজ্ঞাবহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা বিএনপিকে বিভ্রান্ত ও ক্ষতিগ্রস্থ করতে এসব ভুয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করতেন। কিন্তু বিগত সরকারের পতনের পরও বিএনপির ভাষায় ‘ভুয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’ থেকে বের হতে পারছে না।
এ সব ‘ভুয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি’র বিষয়ে বিএনপির দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, কোনো স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল আমার স্বাক্ষর জাল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করে। ফেসবুকে পোস্টকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তিগুলো সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আরও পড়ুন: জং ধরা লোহার টুকরো পড়ে ঢাবি শিক্ষার্থী আহত
এদিকে প্রায় প্রতিদিনই বিএনপির দলীয় প্যাডে দলের দফতরের দায়িত্বে নিয়োজিত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের স্বাক্ষরযুক্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় গণমাধ্যমগুলোতে। সংবাদ কর্মী/সংবাদ মাধ্যমগুলো এসব সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সংবাদ প্রকাশ বা পরিবেশন করে থাকে। এর বাইরে দলের অভ্যন্তরিন বিভিন্ন নির্দেশনা সারাদেশের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন মহানগর, জেলা/উপজেলা, পৌরসহ বিভিন্ন ইউনিট শাখাগুলোতে পাঠানো হয়। দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত নেতাদের বহিস্কার, আবার পূর্বে বহিস্কৃতদের পূনর্বহালের সংবাদ বিজ্ঞিপ্তিও নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু ইদানিং এসব সংবাদ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেখে গণমাধ্যমকর্মীরা সংবাদ প্রকাশ করার কিছুক্ষণ পরই আগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি ভুয়া বলে দাবি করা হয়।
ধারাবাহিকভাবে বিগত কয়েকদিন ধরেই এসব ভুয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি গণমাধ্যমেও পাঠানো হয়। গতকাল মঙ্গলবার (০৪ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে প্রচারিত একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তির বিষয়ে বিবৃতি দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী। এছাড়া দলের অফিশিয়াল প্যাডে দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিবৃতি দেওয়ার বিষয়টি বিএনপির ভেরিফায়েড পেজে পোস্ট করা হয়।
এদিকে, বুধবারও (০৫ নভেম্বর) কমপক্ষে ৪টি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে ভুয়া বলে দাবি করা হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে। পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিকে ভুয়া বা ফেইক দাবি করে পূণরায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয় বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে।
এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-১. ২৭৩ সংসদীয় আসনে ময়মনসিংহ-১১ (ভালুকা) বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী ফখর উদ্দিন আহমেদ বাচ্চুর মনোনয়ন স্থগিতের ভুয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
২. ২৩৭ সংসদীয় আসনে চাঁদপুর-৪ (ফরিদগঞ্জ) বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী হারুনুর রশিদের মনোনয়ন স্থগিতের ভুয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
৩. চট্টগাম-৬ সংসদীয় আসনে গোলাম আকবর খন্দকারকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে ভুয়া ঘোষণা ও তার পক্ষে কাজ করতে কেন্দ্রীয় ‘অসত্য’ নির্দেশনা।
৪. বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে স্থায়ী বহিস্কারের ভুয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।
প্রতিটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী এই মর্মে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যে, কোনো স্বার্থান্বেষী কুচক্রী মহল আমার স্বাক্ষর জাল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করে। ফেসবুকে পোস্টকৃত প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, বানোয়াট ও অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
উল্লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তি আমার স্বাক্ষরে বিএনপির দফতর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়নি। এটি সম্পূর্ণরূপে বানোয়াট ও ভুয়া। আজ ফেসবুকে আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রচারিত ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির বিষয়ে দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো। ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি নিম্নে উল্লেখ করা হলো।