বঙ্গবন্ধুর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিলেন মতিয়া চৌধুরী?
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৫০ PM , আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০৪ PM
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবদ্দশায় তার শরীরের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজানোর কথা বলেছিলেন মতিয়া চৌধুরী, এমন কথা প্রচলিত আছে। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেকবারও এ কথা বলেছিলেন।
এ ছাড়া বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বেশির ভাগই বলেছেন ডাকসুর ভিপি থাকাকালে। আবার কেউ ন্যাপের নেত্রী থাকাকালে এমন বক্তব্য দিতেন। এ সংক্রান্ত কিছু লিংক দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
ইতিহাস কী বলে?
ছাত্রজীবনে মতিয়া চৌধুরী ছাত্র ইউনিয়ন করতেন ও ডাকসুর ভিপি ছিলেন ১৯৬৪ সালে। তিনি ছয় দফার পক্ষে ও আইয়ুববিরোধী আন্দোলন করে অগ্নিকন্যা খেতাব পেয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ন্যাপে যোগ দেন। চীনপন্থী ন্যাপের নেতৃত্বে ছিলেন ভাসানী; মস্কোপন্থী ন্যাপের নেতৃত্বে ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ, যিনি ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানে বিশেষ ভূমিকা রাখেন ও মুজিবনগর সরকারের উপদেষ্টা হন। মস্কোপন্থী ন্যাপ কখনোই বঙ্গবন্ধুবিরোধী ছিল না। তাহলে মতিয়া চৌধুরী বিরোধিতা করবেন কোন প্রেক্ষাপটে?
আরও পড়ুন: মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন
মতিয়া চৌধুরী কমিউনিস্ট পার্টিতে (সিপিবি) যোগ দেন ১৯৭৩ সালে। ছাত্র ইউনিয়ন ও কমিউনিস্ট পার্টির অঘোষিত নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। মতিয়া চৌধুরী যে সম্মেলনে সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য হন, সে সম্মেলনসহ ইউনিয়ন ও সিপিবির সব কাউন্সিলে প্রধান অতিথি রাখা হতো বঙ্গবন্ধুকে। সিপিবি বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবেও অংশীদার হয়েছিল এবং মতিয়া চৌধুরী বাকশালের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনি কবে, কোথায় এবং কেন বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করেছিলেন তার সদুত্তর কেউ দিতে পারবে না।
এ ছাড়া মতিয়া চৌধুরীর স্বামী বজলুর রহমান ছিলেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে অনেকে দলত্যাগ করেছিল। কিন্তু মতিয়া চৌধুরীরা দুঃসময়ে দলে যোগ দিয়েছিলেন।
১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন মতিয়া চৌধুরী। দলটির কৃষি সম্পাদকসহ বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন। সর্বশেষ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুর পর সংসদ উপনেতা নির্বাচিত হন মতিয়া চৌধুরী। দ্বাদশ জাতীয় সংসদেও একই দায়িত্ব পালন করেন।
বঙ্গবন্ধুর শরীরের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজানোর কথা বলা মতিয়া চৌধুরীও আওয়ামী লীগের নেতা বলে একাধিকবার মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। সর্বশেষ গত বছর একটি অনুষ্ঠানেও তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন সময় মতিয়া চৌধুরীর তখনকার একটি ছবি শেয়ার করে বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি করা হয়। তবে কোথায় এবং কেন বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করেছিলেন তার কোনো দলিল বা প্রমাণ দিতে পারেননি।