সাপ্তাহিক ছুটি চান গৃহকর্মীরা
সাপ্তাহিক একদিন ছুটি ও মানবিক আচরণের দাবিতে জনসংলাপে অংশ নিয়েছেন রাজশাহীর গৃহকর্মীরা। বুধবার (২৮ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজশাহী নগরের একটি হোটেলের সম্মেলন কক্ষে এই জনসংলাপের আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। সংলাপটির শিরোনাম ছিল—‘রাজশাহী নগরীর গৃহকর্মীদের অবদান, সমস্যা ও সমাধানের উপায়’।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘রাজশাহী নগরীর গৃহকর্মীদের অবদান, সমস্যা ও সমাধানে নীতি গবেষণা’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, রাজশাহী নগরে বর্তমানে প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার গৃহকর্মী কাজ করছেন।
গৃহকর্মী শিলা বলেন, ‘কাজ দেয়ার সময় বলা হয় একটা কাজ। কিন্তু কাজে গেলে সাতটা কাজ দাঁড়িয়ে যায়। ভুল করলেও ক্ষমা নেই। অসুস্থ হয়ে একদিন না গেলে দারোয়ানকে বলে রাখা হয় যেন পরদিন ভেতরে ঢুকতে না দেয়। এটা খুব কষ্টের।’
নগর দরিদ্র অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি খোরশেদ আলম বলেন, ‘গৃহকর্মীরা বাড়িতে রান্না করেন, সেই খাবার দিনের পর দিন ফ্রিজে থেকে নষ্ট হয়। অথচ তাদের ভালো খাবার দেয়া হয় না। অসুস্থ হলে বেতন কেটে নেয়া হয়। এ বিষয়ে গৃহকর্তাদের আরো উদার হওয়া দরকার। যদিও কিছু ব্যতিক্রম আছে, যারা গৃহকর্মীদের সম্মান করেন ও আপনজন মনে করেন।’
জনসংলাপে অংশ নেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের রাজশাহীর সহকারী পরিচালক নীলা ইয়াসমিন, শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল আমিন, কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলের হোস্টেল সুপার ফেরদৌস রাবিয়া এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আইনুল হক। সংলাপ পরিচালনা করেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী শহিদুল ইসলাম।
এর আগে বারসিকের পলিসি রিসার্স অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি অফিসার আমরীন বিনতে আজাদ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এ বছরের মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, রাজশাহীতে এখনও ১১ শতাংশ গৃহকর্মীর বয়স ১৫ বছরের নিচে। ৪০ শতাংশ গৃহকর্মী নিরক্ষর। মাসে ২ হাজার টাকার কম বেতন পান ২৫ শতাংশ। আর ৪ হাজার টাকার বেশি পান মাত্র ১০ শতাংশ।
গবেষণায় শিশুশ্রম বন্ধ, বেতন কেটে না নিয়ে সাপ্তাহিক ছুটি নিশ্চিত করা এবং গৃহকর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যসুবিধা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।