‘৫ মিনিট দেরি হলে বেঁচে থাকতাম না’
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৯ মার্চ ২০২২, ০১:১০ PM , আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২২, ০১:৪৪ PM
ইউক্রেনে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন বাংলাদেশি ছাত্র রোহান চৌধুরী। বর্তমানে তিনি বুদাপেস্ট আছেন। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি ইউক্রেনের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। রোহান ইউক্রেনের কারকিভ শহরে থাকতেন। কারকিভ ইনস্টিটিউট অব মেডিসিন এন্ড বায়োমেডিকেল সায়েন্সে ডাক্তারি পড়ছেন। সেখানে তিনি পঞ্চম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ছাত্র তিনি।
সম্প্রতি তার বোনের বিয়ে ঠিক হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরার কথা ছিলো। পরে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে কারকিভ থেকে বের হন নি। চট্টগ্রামের বাসিন্দা রোহান বাবা-মায়ের হাত ধরে তিন বছর বয়সেই পাড়ি জমান ওমানে। ২০১৮ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য ইউক্রেন যান তিনি।
সাক্ষাতকারে রোহান বলেন, মনে করেছিলাম কারকিভে থেকে যাবো। কিন্তু এতো বেশি বোমা পড়া শুরু হলো আর সাহস হলো না। আমার আশেপাশেও দুই থেকে তিনবার বোমা হামলা হয়েছে। আমি আসলে খুবই ভাগ্যবান। আর যদি পাঁচ মিনিট দেরি হতো তাহলে আজকে আমি বেঁচে থাকতাম না।
আরও পড়ুন- ইউক্রেন যুদ্ধ— হাঙ্গেরির মেডিকেলে পড়ার সুযোগ ১৪ বাংলাদেশির
রোহান জানান, ভারতীয় দূতাবাসের পরামর্শ শুনেই তিনি কারকিভ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতীয় দূতাবাস প্রায়ই একই ধরনের তথ্য সরবরাহ করে। ভারতীয় দূতাবাস তাদের নাগরিকদের ২ মার্চ রাত আটটার মধ্যে কারকিভ ছাড়ার জন্য বলে। সবার হাতে খুবই অল্প সময় ছিলো। কারকিভ থেকে বের হওয়ার জন্য আমরা বাসা থেকে বের হয়ে ট্রেন স্টেশন যাই। সেখানে তীব্র ঠাণ্ডার মধ্যে প্রায় আঠারো ঘণ্টা অপেক্ষা করি। যেই ট্রেনটি আমরা পাই সেটি সীমান্তে যাচ্ছিলো না। ট্রেনটি শুধু কারকিভ থেকে বাইরে যাচ্ছে। আমাদের সারা শরীর ব্যথা হয়ে গেছে, তবু আমাদের সহ্য করতে হয়েছে। কারণ বাড়ি যেতে হবে।
আরও পড়ুন- যেভাবে শেষ হতে পারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ
রোহান বলেন, যখন আমরা লাভিভে পৌঁছাই, সেখানেও পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। কারণ লাভিভ থেকে সীমান্তে যাওয়ার কোনো বাস নেই। পরে ভারতীয় দূতাবাস কতগুলো বাসের ব্যবস্থা করেছিল। আমরা কিছু টাকা দিয়ে লাভিভ থেকে সীমান্তে আসি। লাভিভ থেকে সীমান্তে আসতে পাঁচ ঘণ্টা লেগেছিল, ওই সীমান্তের নাম ছিল চপ। সীমান্তে আসার পর ইউক্রেনের রেডক্রসের একটি দল আমাদের খুব যত্ন করে। পরে জাগোনি সীমান্ত দিয়ে হাঙ্গেরিতে প্রবেশ করি। সেখান থেকে বুদাপেস্ট যাই। বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে জানিয়ে রোহান বলেন, এখানে একজন স্বেচ্ছাসেবকের বাসায় আছি। দেশে ফেরার টিকিটের ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকবো।