জার্মানির বাডেন ভুর্টেমব্যার্গের স্কুলে রোরখা-নিকাব নিষিদ্ধ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২০, ১২:০৮ PM , আপডেট: ২২ জুলাই ২০২০, ১২:০৮ PM
শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত সিদ্ধান্তটি নিয়েই ফেলল জার্মানির বাডেন ভুর্টেমব্যার্গ রাজ্য। প্রশাসন জানিয়ে দিল, এখন থেকে স্কুলে বোরখা বা নিকাব পরে যাওয়া যাবে না। এমন কিছু পরা যাবে না, যা মুখ ঢেকে রাখে। আগেই শিক্ষিকাদের জন্য এই নিয়ম জারি করেছিল রাজ্যটি।
জার্মানির পশ্চিম প্রান্তের এই অঞ্চলটির শাসন ক্ষমতায় রয়েছে গ্রিন পার্টি। গত কয়েক মাস ধরেই ছাত্রীরা মুখ ঢেকে স্কুলে যেতে পারবে কি না, তা নিয়ে বিতর্ক চলছিল সেখানে। ঘটনার সূত্রপাত এক স্কুল ছাত্রীর একটি মামলাকে ঘিরে। হামবুর্গ আদালতে বোরখা বা নিকাব পরার পক্ষে মামলা করেছিল সে।
দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের পর আদালত জানায়, রাজ্যের স্কুল আইন অনুযায়ী মুখ ঢেকে স্কুলে যেতেই পারে ছাত্রীরা। কিন্তু রাজ্য যদি স্কুল আইন বদলে ফেলে, সে ক্ষেত্রে নিয়মের পরিবর্তন হতে পারে। আদালতের এই রায়ের পরেই প্রশাসন স্কুল আইন বদলের তোড়জোড় শুরু করে।
আইন বদল হলেও বিষয়টি নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে বাডেনে। গ্রিন পার্টির একাংশের বক্তব্য, বোরখা বা নিকাব ব্যক্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী। কোনও গণতান্ত্রিক দেশে নারীদের মুখ ঢাকতে বাধ্য করা যায় না। অধিকারের কথা ভেবেই এই ধরনের পোশাক নিষিদ্ধ করা উচিত।
কোনও কোনও রাজনীতিবিদ জানিয়েছেন, শুধু বাডেন ভুর্টেমব্যার্গেই নয়, গোটা জার্মানিতেই বোরখা এবং নিকাব বাতিল করা উচিত। আবার অন্যপক্ষের বক্তব্য, সকলেরই পোশাক নির্বাচনের অধিকার আছে। গণতান্ত্রিক দেশে সকলের ধর্মচর্চারও সমান অধিকার আছে। বোরখা বা নিকাব যেহেতু ধর্মীয় পোশাক, ফলে তা পরারও অধিকার সকলের রয়েছে।
এ বিতর্ক নতুন নয়। অতীতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এ বিষয়ে বিতর্ক হয়েছে। নেদারল্যান্ড, ডেনমার্ক, ফ্রান্স এবং অস্ট্রিয়ায় মুখ ঢেকে স্কুলে যাওয়া আগেই নিষিদ্ধ হয়েছে। জার্মানিতেও সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৫৪ শতাংশ নাগরিক বোরখা এবং নিকাব ব্যবহারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। যদিও উদ্বাস্তুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা কোনও কোনও সংস্থার বক্তব্য, নতুন এই আইন দেশে সংখ্যালঘু এবং উদ্বাস্তুদের আরও কোণঠাসা করবে।
বাডেন ভুর্টেমব্যার্গ প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, এমনিতেই স্কুলে খুব বেশি ছাত্রী মুখ ঢেকে আসত না। ফলে বিষয়টি নিয়ে এত শোরগোল হওয়ার কারণ নেই। দ্বিতীয়ত, কলেজ স্তরে এখনও এ বিষয়ে কোনও আইন করা হয়নি। সাধারণত কলেজেই প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ে যান। তাঁদের মুখ ঢাকার বিষয়টি আরও বেশি সংবেদনশীল। সে কারণেই আপাতত কলেজ স্তরের মেয়েদের বিষয়টি থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। খবর: ডয়েচে ভেলে।