ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা

চান্স পেয়েও অধরাই রইলো যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন হাজারো শিক্ষার্থীর

 ডোনাল্ড  ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প  © সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েও হাজারো শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণ করতে পারছেন না। ১৯টি দেশের নাগরিকদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় ভর্তি ও ভিসা পাওয়া শিক্ষার্থীরা এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি। এবিসি নিউজ রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর মে থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১৯টি দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫ হাজার ৭০০ জনের বেশি এফ-১ ও জে-১ ভিসা পেয়েছিলেন। এর অর্ধেকের বেশি ভিসা গেছে ইরান ও মিয়ানমারের শিক্ষার্থীদের কাছে। তবে নতুন ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেকে ভর্তি হয়েও যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে পারছেন না।

আফগানিস্তানের বাহারা সাঘারি, ইরানের পুয়া কারামি এবং মিয়ানমারের গু গু-এর মতো শিক্ষার্থীরা এই নিষেধাজ্ঞায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তালেবানের কারণে নিজ দেশে পড়াশোনা করতে না পারা সাঘারি ইলিনয়েসের একটি কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞায় তার স্বপ্ন ভেস্তে গেছে।

আফগানিস্তানের ২১ বছর বয়সী শিক্ষার্থী বাহারা সাঘারি, তালেবানের নিষেধাজ্ঞার কারণে নিজ দেশে উচ্চশিক্ষা নিতে পারেননি। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে তার উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন নষ্ট হয়ে গেছে। হতাশ হয়ে সাঘারি বলেন, ‘যখন আপনি ভাবেন অবশেষে আপনার স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে, তখন কিছু একটা এসে যেন সবকিছু শেষ করে দেয়।‘

কারামি যুক্তরাষ্ট্রে পলিমার কেমিস্ট্রি পড়ার পরিকল্পনা করলেও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞায় তা স্থগিত করেছেন। অন্যদিকে, মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধের মাঝেও গু গু যুক্তরাষ্ট্রে নতুন জীবন শুরু করার আশা করেছিলেন, যা এখন অধরাই থেকে গেছে।

অনেক শিক্ষার্থী ভিসা প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতা ও অতিরিক্ত যাচাই-বাছাইয়ের কারণে সময়মতো ভর্তি হতে পারছেন না। আবার কেউ কেউ প্রশাসনের কঠোর অভিবাসন নীতি ও হঠাৎ করে শিক্ষার্থীদের বৈধ অবস্থান বাতিল হওয়ায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারছেন না।

ট্রাম্প প্রশাসন জানায়, উচ্চ ভিসা ওভারস্টে হার ও অস্থিতিশীল দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনা করেই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, যেসব দেশের ভিসা যাচাই প্রক্রিয়াকে ‘অপর্যাপ্ত’ মনে করা হয়েছে, সেসব দেশের ত্রুটি দূর না হওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে না পেরে অনেক শিক্ষার্থী বিকল্প হিসেবে ইউরোপ ও অন্যান্য দেশে আবেদন করছেন। তবে ভিসা শর্ত, ভাষা পরীক্ষা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সেখানেও অনেকে নতুন জটিলতায় পড়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ