এক গানেই রাজনীতির মাঠ কাঁপালেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য

অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য
অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য  © সংগৃহীত

ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে টালিউডে কোণঠাসা অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য। অভিনয় ও পরিচালনার ক্ষেত্রে তাই খানিকটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে তার। এরই মাঝে গানের দল ‘হুলিগানইজম' খুলে মাতিয়ে দিয়েছেন তিনি। কয়েক মাস আগে এ ব্যান্ডের ‘মেলার গান’ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এবার কনসার্ট থেকে ভাইরাল অনির্বাণের আরেকটি গান।

‘তুমি মস্তি করবে জানি' শিরোনামের এ গানে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির তিন ঘোষকে নিয়ে স্যাটায়ার করেছেন তিনি। এই তিন ঘোষ হলেন- তৃণমূল, সিপিএম এবং বিজেপির তিন নেতা যথাক্রমে কুণাল ঘোষ, শতরূপ ঘোষ ও দিলীপ ঘোষ ।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, অনির্বাণ গাইছেন, ‘এসব গানবাজনা ছাড়, চল প্রমোটারি করি, বড় গাড়ি চড়ি ইলেকশানের মেজাজ বুঝে দলটা বদল করি/ এই আমাদের দোষ/ গানবাজনা করতে এসে এসব কথা বললে/ রেগে যাবে কুণাল ঘোষ।’ এরপর নাম না করে হুলিগানইজমের কটাক্ষ ছিল দিলীপ ঘোষের দিকে। গানের কথা এমন, ‘আরেক ঘোষও আছে/ দাদা খুবই রোমান্টিক/ ঘোষ দিয়ে যায় চেনা/ গয়না দোকান সব তুলে দাও/ গরুর দুধে সোনা।'

এ গানের শেষে আসে সিপিএম নেতা শতরূপ ঘোষের নাম। অনির্বাণ গেয়ে ওঠেন, ‘আরেক ঘোষও আছে, ওই বিপ্লবীদের পার্টি/ টিভি চ্যানেল পার্টি অফিস বড্ড হাঁটাহাঁটি/ তাই কিনেছে গাড়ি/ দামটা বেশি খুব/ ফেসবুকেতেই রাজা মোদের দাদা শতরূপ।' গানটি নিয়ে শুধু শ্রোতাদের মধ্যে নয়, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির অঙ্গনেও ব্যাপক হইচই চলছে।

গত ৩১ আগস্ট কলকাতার বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয় ব্যান্ড স্টর্ম কনসার্ট। এতে অনির্বাণের হুলিগানইজম ছাড়াও পারফর্ম করেন অঞ্জন দত্ত, ব্যান্ড ক্যাকটাস, পৃথিবী, ফকিরা ও ফসিলস। ঘণ্টাখানেক ধরে বেশ কিছু গান শোনায় হুলিগানইজম । তার মধ্যে তিন ঘোষকে নিয়ে গাওয়া গানটিই বেশি সাড়া ফেলেছে। রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে স্যাটায়ার করলেও বিষয়টি ভালোভাবেই নিয়েছেন কুণাল ও শতরূপ ঘোষ। ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে কুণাল ঘোষ বলেন, “আমার মনে হয়েছে অনির্বাণ বা তার সহশিল্পীরা অপমানের উদ্দেশ্যে গানটি করেনি । তাহলে বিষয়টিকে কেন খোলা মনে নেব না? পুরোনো ধাঁচের গানের সঙ্গে সমকালীনতাকে মিশিয়ে অনির্বাণ যে চেষ্টা করেছেন, তাতে আমার নামে টিপ্পনী থাকলেও, এই মজাটা নেওয়ার মানসিকতা কুণাল ঘোষের রয়েছে।'

আরও পড়ুন: বিশ্বে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোর উত্থান, গণতন্ত্রের জন্য বাড়ছে নতুন চ্যালেঞ্জ

অন্যদিকে শতরূপ ঘোষ বলেন, ‘আমরা সব সময় চাই শিল্পীরা পলিটিক্যাল স্ট্যান্ড নিক। তাদেরও রাজনৈতিক মতামত থাক। অনির্বাণ গানে আমার নাম নিয়েছে আমি কৃতজ্ঞ।... বাংলা গানে বেলা বোস, নীলাঞ্জনা, রঞ্জনা, এরা যেমন রয়েছে; তেমনি এবার আমিও একটা ক্যারেক্টার হয়ে গেলাম।' তবে প্রবীণ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।

পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির চতুর্থ ঘোষ মানে অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ রুদ্রনীল ঘোষ অবশ্য বেজায় খেপেছেন অনির্বাণের ওপর। সেদিন ব্যান্ড স্টর্ম কনসার্টে শুরুতেই অনির্বাণ বলেন, ‘সনাতন এসে গেছে? আর সনাতনী? সনাতন মানে আমি সনাতন ধর্মের কথা বলছি, আসেনি তো এখনো? সনাতন ভারতে পৌঁছাতে হলে আমাদের একটু পিছিয়ে যেতে হবে। সবাই এগিয়ে যায়। আর আমরা পিছিয়ে যাব। চলুন, সবাই মিলেই পিছিয়ে যাই।’

অনির্বাণের এ মন্তব্য ভালো লাগেনি বিজেপি নেতা রুদ্রনীলের। ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে অনির্বাণকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন তিনি ৷


সর্বশেষ সংবাদ