ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে নিহত বেড়ে ২৫০

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © সংগৃহীত

ইরানের নতুন হামলায় ইসরায়েলের হাইফা শহরে নিখোঁজ থাকা তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আটজনে। এর আগে মধ্য ইসরায়েলে আরও পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছিল। এ নিয়ে ইসরায়েলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪, আর আহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ। খবর ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুসালেম পোস্টের।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, আজ সোমবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। আইডিএফ দাবি করেছে, তারা ৮০-৯০ শতাংশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম হয়েছে। মাত্র ১০-২০ শতাংশ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। এ পর্যন্ত ২৪ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছে।

অন্যদিকে, ইসরাইলের হামলায় ইরানে কমপক্ষে ২২৪ জন নিহত এবং ১ হাজার ২৭৭ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক বলে ইরানি কর্তৃপক্ষ এবং রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

১৩ জুন, শুক্রবার রাত থেকে ইসরায়েল ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান আক্রমণ শুরু করে। আজ সোমবার ভোর ৪টায় প্রায় ৪০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি ঝাঁক ইসরায়েলে আঘাত হানে। এ নিয়ে ইসরায়েলের দিকে ছোড়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের মোট সংখ্যা প্রায় ৩৫০-এ দাঁড়িয়েছে। এসব হামলায় তেল আবিব, পেটাচ টিকভা এবং বেনি ব্রাকে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

অন্যদিকে, ইসরায়েল শুরু থেকেই ইরানের সামরিক, পারমাণবিক এবং জ্বালানি অবকাঠামোগুলোকে কেন্দ্র করে হামলা চালায়। এতে বহু বেসামরিক মানুষ নিহত হয়। 

এখন পর্যন্ত ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাগুলো গুশ ডান, তেল আবিব, মধ্য ইসরায়েল, হাইফা এবং বির শেবা এলাকায় কেন্দ্রীভূত ছিল। আইডিএফ জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমানবাহিনী ইরানের কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণকারী এবং অনেক ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সফল হয়েছে, যার ফলে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের গতি কমে এসেছে। আগে যেখানে একবারে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হতো, এখন সেখানে একবারে ডজন খানেক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছে।

আরও পড়ুন: জরুরি বৈঠকে বসছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা

আইডিএফ জানায়, তারা প্রতিনিয়ত তাদের কৌশল সমন্বয় করছে এবং ইরান কীভাবে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করছে। একই সঙ্গে, ইরানও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে পরাস্ত করার চেষ্টা করে তাদের কৌশলে পরিবর্তন আনছে।

ইরান এবং ইসরায়েল উভয়ই তাদের নিজস্ব সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনার কাছাকাছি এলাকা থেকে অন্য দেশের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য সতর্ক করেছে। গতকাল রবিবার তেহরানের গ্যাস স্টেশনগুলোর বাইরে গাড়ির দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। ইসরায়েলি হামলার পর আতঙ্কিত বাসিন্দারা ইরানের রাজধানী শহর ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানা গেছে।

এদিকে সংঘাতের কারণে তেলের দাম আবারও বেড়েছে। রবিবারও তেলের দাম বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল, যা গত সপ্তাহের ৭ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে যোগ হয়েছে। কারণ এই সংঘাত বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহকে হুমকির মুখে ফেলেছে।


সর্বশেষ সংবাদ