ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন না কমলার ইতিহাস?
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ AM , আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫০ AM
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আজ। আগামী চার বছর যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিসহ বিশ্ব রাজনীতির মেরুকরণে কে প্রভাব বিস্তার করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প না কমালা হ্যারিস, সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্ব। আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের আগে শেষ মুহূর্তে 'সুইং স্টেট' বা দোদুল্যমান রাজ্যগুলো চষে বেড়াচ্ছেন দুই প্রার্থীই।
মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে এক সমাবেশে দেওয়া বক্তৃতায় কমালা হ্যারিস বলেছেন, গাজা যুদ্ধ অবসানে তিনি তার ক্ষমতা অনুযায়ী সবকিছুই করবেন। আর মিশিগানেই রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় আরব আমেরিকান জনগোষ্ঠীর বাস।
অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ সময়ে আরব-সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর ডিয়ারবর্ন-এ সমাবেশ করেছেন। ডেমোক্র্যাটদের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও ইসরায়েলকে আর্থিক সুবিধা দেয়া নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে থাকা ক্ষোভকে পুঁজি করে বক্তব্য দিয়েছেন তিনি।
গতকাল সোমবার প্রকাশিত টিআইপিপি জরিপ অনুযায়ী দুজনের ভোট ৪৮ শতাংশ। শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত ১ হাজার ৪১১ জন নিবন্ধিত ভোটারের ওপর এই জরিপ পরিচালনা করা হয়েছে। এই ভোটারদের ৬ শতাংশ টিআইপিপিকে বলেছে, তারা তাদের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন। এই জরিপে মার্জিন অব এরর দেখানো হয়েছে ২.৭ শতাংশ।
এবিসি নিউজের জরিপে কমলা (৪৯ শতাংশ) ট্রাম্পের (৪৬ শতাংশ) চেয়ে ৩ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন। গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত পরিচালিত এই জরিপে অংশ নিয়েছেন ২ হাজার ২৬৭ জন নিবন্ধিত ভোটার। এখানে মার্জিন অব এরর দেখানো হয়েছে ২ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এ নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থীই যে জয়ী হবেন, এমন নিশ্চয়তা নেই। একজন প্রার্থী তুলনামূলক কম ভোট পেয়েও প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। এর মূলে আছে দেশটির নির্বাচন ব্যবস্থায় ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ নামের ২০০ বছর পুরোনো একটি বিশেষ পদ্ধতি। এই ইলেকটোরাল কলেজে যিনি ভালো ফল করেন তার হাতেই যায় হোয়াইট হাউসের চাবি। এ নির্বাচন ব্যবস্থায় ভোটারদের সরাসরি ভোটে না বরং প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন পরোক্ষ ভোটে।
দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হতে প্রার্থীকে সাধারণত দুই ধরনের ভোটে জিততে হয়। এর একটি নাগরিকদের সরাসরি ভোট, যা ‘পপুলার ভোট’ হিসেবে পরিচিত; আরেকটি হচ্ছে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। এই দুটির মধ্যে ইলেকটোরাল কলেজের ভোটেই প্রার্থীর চূড়ান্ত জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়।
এ ব্যবস্থায় প্রার্থীদের জয়-পরাজয় জাতীয়ভাবে না হয়ে নির্ধারিত হয় একেকটি অঙ্গরাজ্যের নির্বাচনী লড়াইয়ের মাধ্যমে। দুটি ব্যতিক্রম ছাড়া কোনো অঙ্গরাজ্যে পপুলার ভোটে জয়ী হওয়ার অর্থ একজন প্রার্থী সেই অঙ্গরাজ্যের সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পাবেন।
দেশটির নির্বাচনে প্রতিটি ভোট গণনা করতে কয়েক দিনও লেগে যেতে পারে। তবে সাধারণত যেদিন ভোট হয়, তার পরের দিন সকালেই জয়ী কে তা স্পষ্ট হয়ে যায়।
এর আগে, চার বছর আগে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হেরেছিলেন। ওই নির্বাচনে বাইডেন ৩০৬টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হন। হেরে যাওয়া ট্রাম্প পেয়েছিলেন ২৩২টি ইলেকটোরাল ভোট।
বাইডেন আট কোটি ১২ লাখের বেশি পপুলার ভোট পেয়েছিলেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনো প্রার্থীর পাওয়া সর্বোচ্চ ভোট। এর বিপরীতে ট্রাম্প পেয়েছিলেন সাত কোটি ৪২ লাখের বেশি ভোট। কিন্তু এর আগেরবার ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের চেয়ে ৩০ লাখের বেশি পপুলার ভোট পেলেও ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে হেরে পরাজিত হয়েছিলেন।