দ্য কনভারসেশনের প্রতিবেদন
বন্দি বিনিময় চুক্তি বা কূটনীতি যে পথে হাসিনার প্রত্যর্পণ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭ PM , আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৯ PM
বৈষম্যরোধী ছাত্র আন্দোলনের তীব্র বিক্ষোভের জেরে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতেই রয়েছেন। তবে ভারতে শেখ হাসিনার অবস্থান বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলই মেনে নিতে পারছে না। শুধু তাই নয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতারাও শেখ হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর কথা বলছেন বিভিন্ন সভা-সেমিনারে।
এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলাও দায়ের হয়েছে। দেশে-বিদেশেই প্রতিনিয়তই মামলা দায়ের হচ্ছে তার বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে গণহত্যার অভিযোগেও তদন্ত চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে (আইসিজে)।
এ পরিস্থিতিতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের ওপর চাপ বাড়ছে হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরানো নিয়ে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রেস ব্রিফিংয়ে বারংবার প্রশ্ন উঠছে হাসিনার ভারতে অবস্থানকে কেন্দ্র করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআইয়ের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে (৫ সেপ্টেম্বর) শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার কথা বলেছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শেখ হাসিনা দিল্লির সেফ হাউজে বসে যেসব নির্দেশনা পাঠাচ্ছেন তা নিয়েও বিরক্তি প্রকাশ করেন উপদেষ্টা।
জনমনে একটাই প্রশ্ন, অন্তবর্তীকালীন সরকার চাইলেই কি ভারত হাসিনাকে ফেরত পাঠাবে? এ নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে। অনেকে মনে করছেন বাংলাদেশ-ভারত বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
আবার ‘দ্য কনভারসেশন’ বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) তাদের এক প্রতিবেদনে বলছে, বন্দি বিনিময় চুক্তিতে একটি বিষয় উল্লেখ আছে। সেটি হলো রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো মামলা হলে কোনো ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণ করা যাবে না। আর এ বিষয়টি কাজে লাগিয়েই ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতিও জানাতে পারে।
রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো মামলা হলে কোনো ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণ করা যাবে না থাকার সঙ্গে আবার এই চুক্তিতে এটাও উল্লেখ আছে—হত্যাচেষ্টা, হত্যা, অপহরণ ও হত্যায় উস্কানি দেওয়া অপরাধ রাজনৈতিক মামলা হিসেবে বিবেচিত হবে না। হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব মামলা করা হয়েছে তার প্রায় সবগুলোই এই ধারায় পড়েছে।
হাসিনাকে ভারত যদি রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীর মর্যাদা প্রদান করে, সেক্ষেত্রে হাসিনাকে ফেরানো কঠিন হবে। কেননা কোনো রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীকে ফিরিয়ে দিতে ভারতের বাধ্যবাধকতা থাকবে না। কিন্তু ঢাকা ও দিল্লির মধ্যকার নতুন সম্পর্ক জোরদারে হাসিনা ইস্যু ভারতের জন্য
বড় অস্বস্তির বিষয়ে পরিণত হয়েছে।