ভাড়া বাসায় ২৩ সরকারি দপ্তর, মাসে ব্যয় কোটি টাকা
- মহসিন হোসাইন, চাঁদপুর প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০৭:৪৭ AM , আপডেট: ২৬ আগস্ট ২০২৫, ১২:২৭ PM
চাঁদপুরে দীর্ঘদিন ধরে ২৩টি সরকারি দপ্তরের কার্যক্রম ভাড়া বাসায় চলছে। শুধু তাই নয়, এসব ভাড়া দপ্তরের বিপরীতে সরকারকে প্রতি মাসে গুনতে হচ্ছে প্রায় কোটি টাকা। এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, জায়গার অভাব ও উদ্যোগের ঘাটতির কারণেই সরকারি ভবন নির্মাণে এতদিন অগ্রগতি আসেনি। তবে গণপূর্ত বিভাগ জানিয়েছে, এক ছাতার নিচে সব অফিস আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং খুব দ্রুত সমাধান আসবে।
চাঁদপুর গণপূর্ত বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে জেলায় মোট ২৩টি সরকারি দপ্তর ভাড়া বাসায় পরিচালিত হচ্ছে। এর বাইরেও ৪-৫টি দপ্তর রয়েছে। ২০১৮ সালের হিসাবে এসব অফিসের ভাড়ার জন্য মাসে প্রায় ৬০ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে এই খরচ কোটির ঘরে পৌঁছেছে বলেই মনে করছে গণপূর্ত বিভাগ।
ভাড়া বাসায় পরিচালিত সরকারি দপ্তরগুলোর মধ্যে রয়েছে, চাঁদপুর মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, সমন্বিত শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র বালক/বালিকা, প্রতিবন্ধী সেবা সাহায্য কেন্দ্র, মেডিকেল কলেজছাত্র/ছাত্রী হোস্টেল, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জেলা কমিউনিটি ও জনশক্তি অফিস, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা তথ্য অফিস, জেলা ট্যুরিজম কার্যালয়, জেলা শিল্প কারখানা, কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাট, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন), ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, ট্র্যাফিক অফিস, প্রেষণ অফিস, জেলা সমবায় অফিসার কার্যালয় ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোর একটি হলো জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিস। তারা প্রতি মাসে ভাড়া দিচ্ছে ৪৪ হাজার টাকা। এ দপ্তরের কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, কার গাফিলতি সেটা জানিনা। তবে জেলা প্রশাসন চাইলে এটি খুব দ্রুত সমাধান সম্ভব। সরকারি ভবনে এক ছাতার নিচে সবাই কাজ করলে আমাদেরও সুবিধা হবে। আমরা চাই দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হোক।
জেলা তথ্য কর্মকর্তা তপন বেপারী জানান, আমরা আগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ছিলাম। সেখানে স্পেস না থাকায় আমাদের বাইরে ভাড়া অফিস দেয়া হয়েছে। এক বছর হলো ভাড়া বাসায় আছি। এখনো কোনো চিঠি বা আবেদন করা হয়নি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি নতুন এসেছি। কোনো চিঠি বা আবেদন করা হয়েছে কিনা, তা আমার জানা নেই।
চাঁদপুর গণপূর্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ তানজিল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, ২০১৮ সালের হিসাবে ২৩টি অফিসের ভাড়ার খরচ ছিল প্রায় ৬০ লাখ টাকা। এখন এটি সর্বনিম্ন কোটির ঘরে পৌঁছেছে। সরকার ইতিমধ্যে সব অফিসকে এক ভবনের আওতায় আনতে উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা আশা করছি দ্রুত সমাধান হবে। তবে এ পর্যন্ত কোনো দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিক চিঠি বা আবেদন পাইনি।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, সব সরকারি দপ্তরকে এক জায়গায় নিয়ে আসা হলে সরকারের আর্থিক সাশ্রয় হবে এবং সাধারণ মানুষও একই ভবনে সরকারি সেবা পেতে সুবিধা পাবে। দপ্তর প্রধানগণও একই ছাতার নিচে আসার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। এতোদিন কার্যকর কোনো উদ্যোগ না থাকলেও এখন চাঁদপুর জেলা গণপূর্ত বিভাগ দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে।