শিক্ষার্থীদের বুকে যেন আর একটি গুলি না লাগে: সোহেল তাজ

সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন সোহেল তাজ
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন সোহেল তাজ  © টিডিসি ফটো

সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ বলেছেন, সাধারণ নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের সকল মানুষের মতোই আমি উদ্বিগ্ন। সোনার বাংলাদেশে মেধা দিয়ে যোগ্যতা, চিন্তার স্বাধীনতা থাকবে। যা ক্ষুন্ন হচ্ছে। কোটা আন্দোলন নিয়ে অশান্তি পরিস্থিতি বিরাজ করছে। শত শত প্রাণহানিতে ক্ষত তৈরি করেছে। বিবেককে নাড়া দিয়েছে। যে কারণে আমি ডিবিতে এসেছি। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আশা না ছাড়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তোমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। দেশটা তোমাদের। তোমাদেরই এই দেশ গড়তে হবে।

সোমবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়কের সঙ্গে দেখা করতে যান সোহেল তাজ। এসময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। শিক্ষার্থীদের বুকে যেন আর একটি গুলিও না লাগে সেই আহবান জানিয়েছেন সোহেল তাজ। 

সোহেল তাজ বলেন, আমি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলাম যে ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ককে ডিবিতে রাখা হয়েছে গ্রেপ্তার হিসেবে নাকি সেফ কাস্টডি। সেফ কাস্টডি হলে দেখা করতে চাই। আর যদি গ্রেপ্তার হয় তাহলে আমার কোনও প্রশ্ন নেই। 

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রীয় শোক প্রত্যাখান, কোটা আন্দোলনকারীদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

জবাবে হারুন অর রশীদ বলেছেন, ৬ সমন্বয়কারী নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলো তাই হেফাজতে আনা হয়েছে। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দেখা করতে দেওয়া যাবে না। আমি তখন তাকে বলেছিলাম—৬ সমন্বয়কারী কি আপনার কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিল—জবাবে তিনি বলেন, আমরা তাদের মনিটরিংয়ের মাধ্যমে বুঝতে পেরেছিলাম, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ৬ সমন্বয়কারীকে কখন সেফ কাস্টডি থেকে মুক্তি দেওয়া হবে—প্রশ্নের জবাবে হারুন সাহেব বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যখন নির্দেশ দিবে তখনই।

সোহেল তাজ বলেন, কোটা আন্দোলনে যেসব ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা কিছুই না। কারণ সম্পদ ধ্বংস হয়েছে সেগুলো গড়ে নেওয়া যাবে। কিন্তু একটি প্রাণ কী ফেরত পাবো? প্রাণের মূল্য কোটি কোটি টাকার বেশি। এসময় তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষার্থীদের বুকে আর একটি গুলিও যেন না লাগে। তিনি বলেন, প্রতিটি হত্যাকাণ্ড নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনভাবেই বিচারবহির্ভূত হত্যা করা যাবে না। নির্বিচারে গ্রেপ্তার করা থেকে বিরত থাকার আহ্বানও জানান সাবেক এই স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশে এখন পর্যন্ত ২১০ জনেরও বেশি আন্দোলনকারী এবং শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের দাবি—এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনকারী ও সাধারণ মানুষ আহত হয়েছে। পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্য ও সরকার সমর্থক ছাত্রলীগ এবং তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের হামলায় এসব আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলেও দাবি তাদের।

আরও পড়ুন: কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত বেড়ে ২১০

এর আগে সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথার বাতিল চেয়ে আন্দোলনে নামে দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এরপর আন্দোলন তীব্র হতে থাকলে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকার সমর্থকরা। এতে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটে। 

পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে মামলা হয়। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটেছে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence