চমেকে ছাত্রলীগের ২ গ্রুপের সংঘর্ষ

সেই আকিবের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থার নেওয়ার সুপারিশ

গুরুতর আহত মাহাদি আকিব
গুরুতর আহত মাহাদি আকিব   © টিডিসি ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বিভিন্ন মেয়াদে ৩০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে কতৃপক্ষ। শিক্ষার্থীদের অপরাধ প্রমানিত হওয়া বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে তাদের। এর পাশাপাশি আরও চারজনের বিরুদ্ধে সংঘর্ষে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে, যাদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল।

ওই চার শিক্ষার্থীর মধ্যে মাথায় গুরুতর আঘাত পাওয়া মাহাদি জে আকিবও আছেন। তবে তার বিরুদ্ধে এখনই কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) চমেক একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এই সব সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার।

সোমবার (২১ নভেম্বর) সংঘর্ষের ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিটি। তদন্ত কমিটির প্রধান চমেকের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান খান চমেকের অধ্যক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। এ সময় তদন্ত দলের পাঁচ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

গত ২৯ অক্টোবর রাতে ও ৩০ অক্টোবর সকালে মেডিকেল ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের বিবদমান দুটি পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়। এরপর কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

এসকল শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ জনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার হয়েছে। তারা হলেন- এইচ এম আসহাব উদ্দিন, অভিজিৎ দাশ, সাদ মোহাম্মদ গালিব, সাজেদুল ইসলাম হৃদয়, সৌরভ ব্যাপারী, জাহেদুল ইসলাম জিসান, ইমতিয়াজ আলম ও মো. সাইফ উল্লাহ।

চট্টগ্রাম মেডিকেল ছাত্রলীগের বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে একটি পক্ষ সাবেক মেয়র নগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। এ পক্ষটিই দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে আধিপত্য বজায় রেখেছে।

শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড এবং ছাত্র সংসদের কক্ষ ভাংচুরের অভিযোগে দুজনকে দেড় বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তারা হলেন- রিয়াজুল ইসলাম ও অভিজিৎ দাস।

সংঘর্ষ এবং কলেজের শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকায় ২০ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এরা হলেন- সাজু দাশ, রকিব উদ্দিন আহমেদ সিয়াম, জাকির হোসেন সায়েল, জুলকাফল মোহাম্মদ সোয়েব, মো. ইব্রাহিম খলিল, চমন দাশ অয়ন, ফারহান রহমান ফাহিম, মাহিন আহমেদ, শেখ ইমাম হাসান, সৌরভ দেবনাথ, মো. মইনুল হোসেন, আরাফাত ইসলাম, হাবিবুল্লাহ হাবিব, মো. আনিস, এহসানুল কবির রুমন, মাহতাব উদ্দিন রাফি, মো. শামীম, মো. সাব্বির, মইন ভুইয়া ও তৌফিকুর রহমান ইয়ন।

এছাড়া আল আমিন ইসলাম নামের একজনের সংঘাতে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে তিনি শিক্ষানবিশ চিকিৎসক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে জানানো হয়েছে।

চমেকের অধ্যক্ষের স্বাক্ষরিত অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও সঙ্গত কারণে মো. মাহাদি আকিব, উৎস দে রক্তিম ও এনামুল হাসান সীমান্তের বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তাদের মধ্যে গুরুতর আহত মাহাদি আকিব কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বাড়িতে আছেন। আর অন্য দুজন সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে। ৩০ অক্টোবর সংঘর্ষের সময় প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত হন দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আকিব। কলেজ ক্যাম্পাসের অদূরে পপুলার ডায়গনস্টিক সেন্টারের সামনে হামলার শিকার হয়েছিলেন তিনি।

তার ওপরে ধারালো অস্ত্র, রড, ছুরি ও কাঁচের বোতল নিয়ে হামলা চালানো হয়। মাথায় অস্ত্রোপচারের পর ১৯দিন তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দিতে হয়।

আকিবের পক্ষের নেতাদের দাবি, হাসপাতালকেন্দ্রিক চাঁদাবাজি, দালালি, স্লিপ বাণিজ্য, অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটসহ নানা অবৈধ কারবারের ‘প্রতিবাদ করায়’ প্রতিপক্ষ আকিবের ওপর হামলা করে।

এ ব্যাপারে চমেকের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার জানান, তদন্ত কমিটি আহত শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের সাথে কথা বলেছে। ভিডিও দেখেছে। পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ এবং এসব ঘটনায় হওয়া মামলা বিবেচনায় নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সব বিবেচনায় ঘটনায় ৫০ জনের নাম এসেছে। তাদের কমিটি চিঠি দিয়ে জবাব দিতে বলেছে। এর মধ্যে কেউ কেউ নিরাপত্তার কথা বলে জবাব দেয়নি। তবে আমাদের কলেজ খোলার বাধ্যবাধকতা ছিল, তাই তদন্ত কমিটির সময় আর বাড়ানো সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence