মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নের ধরনে পরিবর্তন আসছে, যাচাই হবে বুদ্ধিমত্তা-বিশ্লেষণী ক্ষমতাও
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:১২ PM , আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:১৭ PM
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রচলিত প্রশ্ন পদ্ধতিতে প্রাধান্য পেয়ে আসছে স্মরণশক্তি ও মুখস্তবিদ্যা। তবে এর সঙ্গে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীর বুদ্ধিমত্তা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও মানবিকতাও যাচাই করার কথা ভাবছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর। ইতোমধ্যে এ সংক্রান্ত খসড়া সুপারিশমালা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) পাঠানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠাতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এমন আলোচনা এগিয়েছে। এই পরীক্ষা থেকেই প্রশ্নের ধরনে পরিবর্তন আনার চিন্তা করছে অধিদপ্তর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদ্যমান প্রশ্নের ধরনে স্মরণশক্তিসম্পন্ন ও মুখস্তবিদ্যায় পারদর্শী শিক্ষাথীরা সুবিধা পেয়ে আসছেন। কিন্তু স্মরণশক্তি কিংবা মুখস্তবিদ্যা পরীক্ষা করা মেধা যাচাইয়ের সর্বোত্তম মান হিসেবে বিবেচিত হয় না। এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে, বিশেষ করে বাস্তবজ্ঞান, সমাধানমূলক চিন্তা বা বিশ্লেষণী ক্ষমতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে। এ জন্য মুখস্তবিদ্যার পাশাপাশি পরীক্ষার্থীর বুদ্ধিমত্তা ও বিশ্লেষণী ক্ষমতা যাচাই করা যায়, এমনভাবে প্রশ্ন প্রণয়ন করার কথা চলছে। একই সঙ্গে যাচাই করা হতে পারে চিকিৎসক হতে চাওয়া শিক্ষার্থীর মানবিক বোধের বিষয়টিও। বিদ্যমান এমসিকিউ পদ্ধতিতেই প্রশ্নের ধরন বদলে যাচাই হবে এসব বিষয়।
তবে এতে বেশ কিছু জটিলতার কথাও বলছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বর্তমানে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় লিখিত (এমসিকিউ) ১০০ নম্বরের পাশাপাশি এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে ১০০ নম্বরের যোগফল বিবেচনায় নেওয়া হয়। ১ ঘণ্টা সময়ের মধ্যেই ১০০ নম্বরের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এক্ষেত্রে সময়, প্রশ্নের মান ও পদ্ধতি এক রেখে বিশ্লেষণ ও বুদ্ধিমত্তা পরীক্ষা করা হলে শিক্ষার্থীর উপর বাড়তি চাপ তৈরি হতে পারে। বিভিন্ন ধরনের প্রশ্নে সময় সীমাবদ্ধ হতে পারে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল হোসেন দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এতদিন শুধুমাত্র প্রার্থীর মেধা যাচাইয়ের মধ্যে স্মরণশক্তি এবং মুখস্তবিদ্যা প্রাধান্য পেত। আমরা চিন্তা করছি ধীরে ধীরে আরেকটু বৈচিত্র্য নিয়ে আসার। বিশেষ করে একজন প্রার্থীর বিশ্লেষণী ক্ষমতা, বুদ্ধিমত্তা এবং তার মানবিকতা যাচাই করতে চাই। আমরা চাই একজন চিকিৎসক মানবিক হোক। এসব বিষয় যাচাই করার জন্য অল্প কিছু প্রশ্নের ধরন আমরা বদলাব। তবে প্যাটার্ন একই থাকবে, এমসিকিউ পদ্ধতিতেই পরীক্ষা হবে। কিন্তু বিষয়ের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হবে।
তিনি বলেন, এ জন্য আমরা শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েছি। আর এ বছরেই বড় ধরনের পরিবর্তন হবে না। ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করব। ক্রমান্বয়ে দুই-তিন বছরে যেন বুদ্ধিমত্তা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা ও মানবিকতার বিষয়গুলো প্রশ্নপত্রের বড় অংশ হয়। এক্ষেত্রে এক ঘণ্টা সময়ের মধ্যে উত্তর দেওয়ার মতো প্রশ্ন প্রণয়নের ব্যাপার আছে। এটা কিভাবে সন্নিবিষ্ট করা যায়, তা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বসছি। অক্টোবরের প্রথমার্ধে মন্ত্রণালয়ের সভায় এটি চূড়ান্ত হতে পারে।