শিক্ষকের বেত্রাঘাতে চোখ হারালেন মাদ্রাসা ছাত্র ইমরান

ইমরান
ইমরান  © টিডিসি ফটো

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ছোঁড়া বেতের আঘাতে এক শিক্ষর্থীর একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। অভিযুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষকের নাম হাফেজ মাহমুদ। গত ২৮ মে উপজেলার জাঙালিয়া ইউনিয়নের চরকাওনা হামিদ মেম্বারের বাড়ীর বেড়ীবাঁধ হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে ওই শিক্ষক ও মাদ্রাসার পরিচালক মো. মোনায়েমের বিরুদ্ধে সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই শিক্ষর্থীর বাবা মো.ইদ্রিছ আলী।

ভোক্তভোগী ছাত্র ইমরানের বাবার নাম ইদ্রিছ আলী। ইমরান কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চরকাওনা নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে উপজেলার চরকাওনা নয়াপাড়া গ্রামের ইদ্রিছ আলী তার ছেলে ইমরানকে ওই মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। ইমরান নিয়মিত পড়াশোনা করে আসছিল। গত ২৮মে দুপুরে মাদ্রাসায় শিক্ষক মাহমুদের পাঠদানকালে ইমরান কিছুটা অন্য মনস্ক ছিল। এতে ওই শিক্ষক রাগান্বিত হয়ে ইমরানকে লক্ষ্য করে তার হাতে থাকা বেত ছুঁড়ে মারেন। ছোঁড়া বেতটি ইমরানের ডান চোখে গিয়ে আঘাত করে।

ঘটনাটি কাউকে না বলতে ইমরানকে ভয় দেখায় শিক্ষক। ওই দিন বিকেলে ইমরানের দাদা আবদুল মালেক মাদ্রাসার সামনের রাস্তা দিয়ে পার্শববর্তী নয়াবাজারে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে তাকে ওই শিক্ষক জানান, আপনার নাতির চোখে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তাকে বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসা করান। আবদুল মালেক বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখেন ইমরান বাড়িতে চলে গেছে। বাড়িতে গিয়ে আবদুল মালেক দেখতে পান ইমরানের চোখ ফুলে গেছে।

পরে ঢাকা জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে নিয়ে ইমরানকে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ১৪দিন চিকিৎসার পর চিকিৎসক ইমরানের ডান চোখটি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান।

এ ব্যাপারে ইমরানের চাচা মো. জালাল উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি যাতে বাড়িতে কাউকে না বলে সেজন্য ইমরানকে ভয় দেখিয়েছে শিক্ষক মাহমুদ। প্রথমে ইমরান আমাদের কিছু বলেনি। ঘটনার তিনদিন পর তার সহপাঠীদের মাধ্যমে জানতে পারি শিক্ষক মাহমুদের ছোঁড়া বেতের আঘাতে তার চোখ নষ্ট হয়েছে। পরে ইমরানকে অনেক জিজ্ঞাসাবাদের পর বিষয়টি খুলে বলে। এ বিষয়ে আমি শিক্ষককে জানালে শিক্ষক মাহমুদ পরদিন পালিয়ে যায়।

শিক্ষক হাফেজ মাহমুদের ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ওপর আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি তাকে আঘাত করিনি। তার চোখে এমনিতেই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। আমি তার দাদাকে বলেছি বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসা করানোর জন্য। আমি ২৭ রমজান ওই মাদ্রাসা থেকে চলে এসেছি। চলে আসার পর আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

মাদ্রাসার পরিচালক মো. মোনায়েম বলেন, বিষয়টি আমি ঘটনার তিনদিন পর শুনেছি। শুনে ওই ছাত্রের খোঁজখবর নিয়েছি। শিক্ষক হাফেজ মাহমুদকে শুধু রমজান মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে আনা হয়েছিল। ছাত্রের পরিবারের সাথে বসে একটা মীমাংসা করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence