জবি ছাত্রদলের দুগ্রুপের সংঘর্ষ
শিক্ষক হেনস্তার ঘটনায় বিবৃতি দিয়ে পরিবর্তন ছাত্রদলের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৬ PM , আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:২৩ PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাম্পাসে শাখা ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে এই সংঘর্ষে ছাত্রদল জড়িত নয় বলে দাবি করে নিন্দা ও প্রতিবাদলিপি দিয়েছে সংগঠনটি। এ ছাড়াও বিবৃতি প্রকাশের ঘণ্টা খানিকের মধ্যে শিক্ষক হেনস্তার বিষয়টি বাদ দিয়ে নতুন বিবৃতি দিয়েছে শাখা ছাত্রদল।
আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) এ ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১ ঘন্টা পর পূর্বের দেয়া পরিবর্তন করে নতুন করে বিবৃতি প্রকাশ করেছে সংগঠনটি। এদিন সন্ধ্যা ৭ টার দিকে সর্বশেষ বিবৃতিটি দেয় সংগঠনটি।
সর্বশেষ দেয়া বিবৃতিতে ছাত্রদল জানায়, আজকের ঘটনায় জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত শিক্ষককে নিশ্চিত করেন এখানে রাজনৈতিক কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গোষ্ঠী ছাত্রদলের সম্পৃক্ততা ও গুজব ছড়াচ্ছে। এই অপ্রত্যাশিত বিষয়টির সঙ্গে শাখা ছাত্রদলের কোনো প্রকার সম্পৃক্ততা নেই।
ছাত্রদলের দেয়া বিবৃতি দুটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রথম বিবৃতির ভাষা ছিল অভিযোগ নির্ভর। প্রশাসন ও শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলা হয়। শিক্ষক হেনস্তার ঘটনায় নিন্দা জানানো হয়। দ্বিতীয় বিবৃতিতে ঘটনা তদন্তের দাবি জানানো হলেও শিক্ষক হেনস্তার কথা বাদ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : ছাত্রদলের দু’গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত ৮, বিএনপিপন্থী শিক্ষকের কক্ষ ভাঙচুর
জানা যায়, ছাত্রদলের দেয়া প্রথম বিবৃতিতে উল্লেখ ছিল, ‘জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রইস উদ্দিন স্যারের কক্ষকে লক্ষ্য করে একদল শিক্ষার্থী অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় সহকারী প্রক্টর নইম আক্তার সিদ্দিকীসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক লাঞ্ছিত ও কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এতে ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রইস উদ্দিন স্যারের কক্ষও ভাঙচুরের শিকার হয়।’ অন্যদিকে ছাত্রদলের দেয়া ২য় বিবৃতিতে এই শিক্ষক লাঞ্ছিতের ঘটনাটি বাদ দেওয়া হয়।
এদিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার এক ঘন্টা পর মুছে ফেলে, নতুন বিবৃতির ব্যাপারে শাখা ছাত্র দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক (দপ্তর সম্পাদক) মো. মোজাম্মেল মামুন ডেনি বলেন, আমাদের দাপ্তরিকভাবে চূড়ান্ত হওয়ার আগে প্রথম বিবৃতিটা প্রকাশিত হয়। সেটা চাপ লেগে চলে (ফেসবুকে আপলোড) গেছে। আগেরটা আমাদের অফিসিয়াল পেজ ছিল না। প্রথমটা আমি চূড়ান্ত করি, তাই মিসটেকে চলে গেছে। পরবর্তীতে যেটা দেওয়া হয়েছে সেটা সংগঠনের অফিসিয়াল বক্তব্য।
এর আগে দুপুরে জবি ছাত্রদলের দুই গ্রুপ—কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত গ্রুপ ও সুমন সরদার গ্রুপের মধ্যে তিন দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শিক্ষকসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হন।
জানা যায়, সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় সোমবার (১০ নভেম্বর) আস-সুন্নাহ পরিবহনের বাসে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদীর মধ্যে কথা কাটাকাটি থেকে। মঙ্গলবার দুপুরে দ্বিতীয় গেটের সামনে এ ঘটনার জেরে সাদী ও তার অনুসারীরা সাজিদের ওপর হামলা চালায়। এরপর শান্ত চত্বরে ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষে সমঝোতা বৈঠকের সময় আরও দুই দফা সংঘর্ষ হয়।
ঘটনায় সহকারী প্রক্টর ড. মো. নঈম আক্তার সিদ্দিকী, ফেরদৌস হোসেন ও মাহাদী হাসান জুয়েলসহ কয়েকজন শিক্ষকও আহত হন। এ ছাড়া আহতদের মধ্যে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী রয়েছেন। তারা হলেন, মার্কেটিং বিভাগের সামিউদ্দিন সাজিদ, আল-আমিন, আশরাফুল, প্রত্যয়, ইব্রাহিম, জনি ও জাহিদ; রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাদী এবং বাংলা বিভাগের ছাব্বীর।
জানা গেছে, আহত সামিউদ্দিন সাজিদ ও ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য জাহিদ হাসান জনি কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহসভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত এবং জাফর আহমেদ গ্রুপের অনুসারী। অপরদিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদী, ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য মাশফিক রাইন, আতাউল্লাহ আহাদ ও বাংলা বিভাগের আশরাফুল ইসলাম সুমন সরদার গ্রুপের অনুসারী।