জবি ছাত্রদল নেতাকে হত্যার ঘটনায় ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৪৮ PM
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জুবায়েদ হোসাইনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল ও কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ছাত্রদল।
রবিবার (১৯ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেইন গেটে এসে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
এ সময় শাখা ছাত্রদলের আহবায়ক সাহেদ আহম্মেদের নেতৃত্বে উপস্থিত সদস্যসচিব মাসুদ রুমি মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার পারভেজ, যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান হাবীব, আবু দাউদ, আনারুল ইসলাম, সদস্য সাব্বির হোসেন, রাফিজ আহমেদ, নুর উদ্দিনসহ শতাধিক নেতাকর্মী।
মিছিলে ‘নেতাকর্মীরা জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই করো’; ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’; ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘ছাত্রদলের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’; ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, ঘরে থাকার সময় নাই’; ‘আমার ভাই মরলো কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’; ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, খুনিদের ফাঁসি চাই, ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, ইন্টেরিম কী করে’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মাসুদ রুমি মিথুন বলেন, ‘আজকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য জুবায়েদকে কে বা কারা হত্যা করেছে। এই খুনি কারা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তা জানতে চায়। যারা এই হত্যাকাণ্ডের জড়িত তাদের শিগগিরই গ্রেপ্তার করতে হবে। এ ছাড়া আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু এখনো তার খুনিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা এ সরকারকে আর সময় দেব না। আমরা বলতে চাই অতি দ্রুত এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত সব হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে।’
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের পরে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হোক, সাধারণ জনগণ হোক, কারো লাশ আমরা দেখতে চাইনি। জুলাইয়ের পরে আমরা একটি পরিবর্তিত অবস্থা চেয়েছিলাম, কিন্তু একেরপর এক ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী সাম্য কে হত্যা করা হয়েছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজিদ আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছে, আজকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জুবায়েদকে হত্যা করা হয়েছে। অবিলম্বে ইন্টেরিমকে জুবায়েদের খুনিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যর্থ প্রশাসন, কুষ্টিয়ার প্রশাসন সাজিদের খুনিদের গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে। খুনিদের গ্রেপ্তার করা না পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। দ্রুত ইন্টেরিম যেন জুবায়েদ হত্যার খুনিদের এবং সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার খুনিদের গ্রেপ্তার করে। নইলে আমরা শাটডাউনের মতো কর্মসূচিতে যেতে পারি। মাননীয় ভিসি, প্রোভিসি, ট্রেজারার স্যারদের অফিসের সময় ফুরিয়ে আসছে। এরপরে আপনাদের অফিস করতে হবে আমবাগানে নইলে মেইন গেটের বাইরে। কোন জুজুর ভয়ে আপনারা সাজিদের খুনিদের গ্রেপ্তার করছেন না, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে তার জবাব দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের যার যেখানে মনে চায় সেখানেই চলাফেরা করবে। আমাদের আমার ভয় হয়, কখন কোন হল থেকে আমরা লাশের গন্ধ পাই, কখন কাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে।’
উল্লেখ্য, আজ সন্ধ্যার দিকে পুরান ঢাকার আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির একটি বাসার সিঁড়ি থেকে জবি ছাত্রদল নেতার রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত জুবায়েদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়।