সিসিটিভিতে ধরা দুই খুনি, রহস্যে ঘেরা জবি শিক্ষার্থী জুবায়েদের মৃত্যু

জবি ছাত্র জুবায়েদ হোসেন ও সিসিটিভি ফুটেজ
জবি ছাত্র জুবায়েদ হোসেন ও সিসিটিভি ফুটেজ  © টিডিসি

পুরান ঢাকার একটি বাসার সিঁড়ি থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদল নেতার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রবিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে স্থানীয়রা লাশটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। নিহত শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

জানা গেছে, ঘটনাস্থল ভবনে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তবে পাশের ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, পেছন দিক থেকে দুজন যুবক দ্রুত দৌড়ে আসছে। একজনের গায়ে কালো টি-শার্ট, আরেকজনের গায়ে গোলাপী রঙের টি-শার্ট ছিল। তবে ফুটেজটি অস্পষ্ট হওয়ায় তাদের মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যায়নি। সিসিটিভি ফুটেজের পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গেও কথা বলছে পুলিশ। তাদের ভাষ্য, যেহেতু সিসিটিভি ফুটেজটি এখনও অস্পষ্ট, তাই আশেপাশের ফুটেজগুলোও চেকিং চলছে। সর্বশেষ তথ্যমতে, লালবাগ থানার ডিসি, এসি ও সংশ্লিষ্ট থানার ওসির জেরার মুখোমুখি হয়েছে পরিবেশ। প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে চলছে ওই জেরা।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, খুনের ঘটনায় আপাতত কাউকেই সন্দেহের বাইরে রাখছেন না তারা। এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি টিউশনি করানো ওই ছাত্রীও সন্দেহের এই তালিকায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রটি আরও বলেন, পুরো ঘটনায় ছাত্রীর সঙ্গে তৃতীয় এক যুবককেও সন্দেহে রেখেছেন তারা। টিউশনি করানো ওই ছাত্রী উচ্চমাধ্যমিকের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ুয়া ছাত্রী বলে জানা গেছে। 

ঘটনার পর আরমানিটোলার নূর বক্স লেনের ওই ভবনটি ঘিরে ফেলেন জবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, জুবায়েদ হোসেন ওই বাসার ৫ম তলায় একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতেন। পড়াতে যাওয়ার সময় তিনি ফোনে ওই ছাত্রীকে জানান যে, তিনি ইতিমধ্যে নূর বক্স লেনে প্রবেশ করেছেন। কিছুক্ষণ পরই বাসার সিঁড়ি থেকে তার রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিচতলা থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল, যা দেখে ধারণা করা হচ্ছে— প্রাণ বাঁচাতে তিনি নিচতলা থেকে ৩য় তলা পর্যন্ত ছুটে গিয়েছিলেন।

এক জবি শিক্ষার্থী জানান, এমন ভয়াবহ ঘটনা ঘটলেও ভবনের কেউ কিছু বুঝতে পারেনি বলে দাবি করছে। তিনতলায় থাকা এক বাসিন্দা জানান, ‘হঠাৎ কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনে আমরা উপরে ফোন করি। পরে এসে দেখি, লাশটি তিন তলায় পড়ে আছে।’ অন্য একজন জানান, ওই ছাত্রের গায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগোসংবলিত জার্সি ছিল। সেখানে তাঁর নামও লেখা ছিল। এটি দেখে লোকজন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফোন দেন।

এদিকে ঘটনায় দোষীদের গ্রেপ্তারে গ্রেপ্তারে ৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শাখা ছাত্রদল। আজ রাত সাড়ে ৮টার দিকে এই আল্টিমেটাম দেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল। তিনি বলেন, আমরা আমাদের ভাই জুবায়েদের হত্যার বিচার চাই। কোনো প্রকার তালবাহান মানব না। আগামী ৪ ঘন্টার মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ছুরিকাঘাতে জবি শিক্ষার্থী মারা গেছেন। এটি তার টিউশনির বাসা ছিল। ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। হত্যার কারণ এখনও পরিষ্কার নয়, তবে আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছি।’

স্থানীয়রা বলছেন, এটি কোনো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দ্রুত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence