বন্ধ থাকা রেডিওথেরাপি সেবা ফের চালু করল বিএমইউ

 অনকোলজি বিভাগের উদ্যোগে রেডিওথেরাপি সেবা ফের চালু করল বিএমইউ
অনকোলজি বিভাগের উদ্যোগে রেডিওথেরাপি সেবা ফের চালু করল বিএমইউ  © সংগৃহীত

জনস্বার্থে চিকিৎসা শিক্ষা, সেবা ও গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত উন্নত প্রযুক্তির লিনাক (লিনিয়ার এক্সিলারেটর) মেশিন দিয়ে রেডিওথেরাপি সেবা পুনরায় চালু হয়েছে।

রবিবার, ১৮ মে বিএমইউ-এর এফ ব্লকে অনকোলজি বিভাগের উদ্যোগে লিনিয়ার এক্সিলারেটর (লিনাক) মেশিন পুনরায় চালু উপলক্ষে একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম, ক্যান্সার বিভাগ থেকে গবেষণা কার্যক্রমে অধিকতর মনোযোগ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, চিকিৎসক ও রেসিডেন্টদের নির্দেশ দেন। ভাইস-চ্যান্সেলর তার বক্তব্যে বিদ্যমান গাইডলাইন অনুসরণ করে ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার পাশাপাশি দেশের মানুষের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট ও বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত এমন নিজস্ব গাইডলাইন, প্রোটকল তৈরির পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি জনস্বার্থে চিকিৎসা শিক্ষা, সেবা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করার তাগিদ দেন। তিনি তার বক্তব্যে রোগীদের প্রতি বৈষম্যপূর্ণ আচরণ বন্ধ ও উচ্চবিত্তের মানসিকতা ত্যাগ করার জন্য সেবাদানকারী সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় ব্যয়ের বিষয়ে রোগীকে অবহিতকরণ, রোগীর মতামত প্রদান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ, চিকিৎসার সম্ভাব্য অগ্রগতির বিষয়ে রোগী বা তার স্বজনকে অবহিতকরণ ইত্যাদি বিষয়ে খেয়াল রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

আরও পড়ুন: ঢামেকে যন্ত্রপাতি আংশিক অচল, জনবল সংকট তীব্র—সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা

এসময় অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ক্যান্সারের চিকিৎসায় অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। রোগীরা অনেক আশা নিয়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। চিকিৎসার জন্য বিদ্যমান সুযোগ সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে রোগীদের আশা পূরণে সচেষ্ট হতে হবে। রোগীদের সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করাই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।

অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার বলেন, ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় রেডিওথেরাপি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই রোগীদের স্বার্থে পুনরায় লিনিয়ার এক্সিলারেটর (লিনাক) মেশিন চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিএমইউর লক্ষ্য আয় করা নয়; বরং গবেষণা কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করা এবং চিকিৎসা সেবাকে আরও জনবান্ধব করে তোলা।

অধ্যাপক ডা. মো. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ তার বক্তব্যে বিএমইউর অনকোলজি বিভাগে আরো একটি  লিনিয়ার এক্সিলেটর মেশিন চালু, ব্র্যাকিথেরাপি মেশিন চালু, দুই শিফটে রেডিওথেরাপি কার্যক্রম চালু, অনকোলজি বিভাগে কর্মরত সংশ্লিষ্টদের জন্য ঝুঁকিভাতা চালুর ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা কামনা করেন।

আরও পড়ুন: ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের টয়লেটে টেকা দায়

অধ্যাপক ডা. মো. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ তার বক্তব্যে বিএমইউ-এর অনকোলজি বিভাগে আরও একটি লিনিয়ার এক্সিলারেটর (লিনাক) মেশিন স্থাপন, ব্র্যাকিথেরাপি মেশিন চালু এবং রেডিওথেরাপি কার্যক্রম দুই শিফটে চালুর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন। 

সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনকোলজি বিভাগে ৮ হাজারেরও বেশি রোগীকে কেমোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হয়েছে। একই সময়ে প্রায় ২ হাজার রোগী রেডিওথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এছাড়া ২০২৩ সালে ব্র্যাকিথেরাপির মাধ্যমে ৭০ জন রোগীকে সেবা প্রদান করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম এবং অনকোলজি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আকরাম হোসেন। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. নাজির উদ্দিন মোল্লাহ। সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন অনকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন।


সর্বশেষ সংবাদ